কোরআনে বর্ণিত নবী-রাসুলদের মধ্যে নুহ (আ.) বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। তিনি সুদীর্ঘ আল্লাহর দ্বিন প্রচার করেন এবং স্বজাতির অন্যায় আচরণ সহ্য করেন। এ ছাড়া আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিশেষ চারটি মর্যাদা দান করেছেন। নিম্নে তার বর্ণনা তুলে ধরা হলো :
১. প্রথম রাসুল : আল্লাহ প্রথম মানব আদম (আ.)-কে নবী হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন।
কিন্তু মানবজাতির ইতিহাসে প্রথম রাসুল (দ্বিন বা শরিয়ত দেওয়া হয়েছিল) ছিলেন নুহ (আ.)। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত দীর্ঘ হাদিসে এসেছে, কিয়ামতের দিন মানুষরা আদম (আ.)-এর কাছে সমবেত হয়ে অনুরোধ করবে যেন তিনি বিচারকাজ শুরু করার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করেন। কিন্তু উত্তরে তিনি বলবেন, তোমরা নুহের কাছে যাও। সে মানবজাতির প্রতি প্রেরিত প্রথম রাসুল।
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৪৭৬)
২. দীর্ঘ সময় দ্বিনের দাওয়াত : নুহ (আ.) দীর্ঘতম সময় আল্লাহর দ্বিনের দাওয়াত দেন। অন্য কোনো নবীর ব্যাপারে এত দীর্ঘ সময় দাওয়াত দেওয়ার বর্ণনা পাওয়া যায় না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি নুহকে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। সে তাদের মধ্যে অবস্থান করেছিল ৫০ বছর কম এক হাজার বছর।
’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ১৪)
৩. মানবসভ্যতার নতুন স্থপতি : আল্লাহ নুহ (আ.)-এর মাধ্যমে মানবসভ্যতার নব সূচনা করেছিলেন। এ জন্য তাঁকে ‘দ্বিতীয় আদম’ বলা হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর প্লাবন তাদেরকে গ্রাস করে, কেননা তারা ছিল সীমা লঙ্ঘনকারী। এরপর আমি তাঁকে এবং যারা নৌকায় আরোহণ করেছিল তাদেরকে রক্ষা করেছিলাম এবং বিশ্বজগতের জন্য তাকে করলাম নিদর্শন।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ১৪-১৫)
৪. আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ :
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নুহ (আ.)-কে নিজের কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘হে তাদের বংশধর! যাদেরকে আমি নুহের সঙ্গে আরোহণ করিয়েছিলাম। সে তো ছিল পরম কৃতজ্ঞ বান্দা।’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ৩)