IQNA

ইত্তেফাক ১৫-১-২০২৪ -এ প্রকাশিত সংবাদ :

"দ্বিগুণ হয়েছে ৫ শীর্ষ ধনীর সম্পদ গরিব হয়েছেন ৫০০ কোটি মানুষ"

22:03 - January 30, 2024
সংবাদ: 3475031
ইকনা: অক্সফামের এক প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানা গেছে। ধনীদের সম্পদের পাহাড় আরও বাড়লেও একই সময় মূল্যস্ফীতি , যুদ্ধ ও জলবায়ু সংকটের সাথে লড়াই করে বিশ্বের প্রায় ৫ বিলিয়ন অর্থাৎ ৫০০ কোটি মানুষ আরও দরিদ্র হয়েছে। 

 অক্সফামের এক প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানা গেছে। ধনীদের সম্পদের পাহাড় আরও বাড়লেও একই সময় মূল্যস্ফীতি , যুদ্ধ ও জলবায়ু সংকটের সাথে লড়াই করে বিশ্বের প্রায় ৫ বিলিয়ন অর্থাৎ ৫০০ কোটি মানুষ আরও দরিদ্র হয়েছে। 
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বে দারিদ্র দূর করতে ২৩০ বছরের মতো সময় লাগবে । ( ইত্তেফাক)
*••••••••
ইত্তেফাকের এ প্রতিবেদন সংক্রান্ত মন্তব্য :
  বর্তমানে বিশ্বের লোকসংখ্যা ৮ বিলিয়ন বা ৮০০ কোটি যাদের মধ্যে ৫০০ কোটি অর্থাৎ ৬২•৫  % মূল্যস্ফীতি , যুদ্ধ ও জলবায়ু সংকটের সাথে সংগ্রাম করে আরো দরিদ্র হয়েছে। ( বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত ! )
আর উক্ত তিন কারণের জন্য প্রধানত : ও মূলতঃ দায়ী পশ্চিমা দেশগুলো এবং তাদের বস্তুবাদী অমানবিক মানবতাবিরোধী পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতি। কারণ বিশ্বের ওপর পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের অবৈধ কর্তৃত্ব যার শীর্ষে রয়েছে মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ও যুরা (যুক্তরাজ্য) , পশ্চিমাদের প্রবর্তিত নিও লিবারেল ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির কারণ এমনকি অর্থনৈতিক মন্দার জন্য দায়ী । কারণ এতে করে ধনী ও সম্পদশালীরা ( যারা অতি মুষ্টিমেয় ও চরম সংখ্যালঘু )  আরো ধনী এবং গরীবরা আরো গরীব হচ্ছে । অথচ পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে: 
کَيْ لَا یَکُوْنَ دُوْلَةً بَیْنَ الْأَغْنِیَاءِ مِنْکُمْ 
যাতে তোমাদের মধ্য থেকে ধনী দের মাঝেই কেবল ধনসম্পদ আবর্তিত ও পূঞ্জীভূত হতে না থাকে । [সূরা - ই আল - হাশর ( ৫৯ ) : ৭ ]
অর্থাৎ ধনসম্পদ ধনীদের কুক্ষিগত এবং তাদের মাঝেই কেবল সীমাবদ্ধ না থাকে । আর এতে করে ধনী অধিকতর ধনী এবং দরিদ্র আরো দরিদ্র হতে থাকে । 
তাহলে পশ্চিমাদের প্রবর্তিত অর্থনীতি আসলে লুটপাটের অর্থনীতি । এ অর্থনীতি হচ্ছে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি ও মন্দা তৈরির অর্থনীতি । পাশ্চাত্যে কোনো কিছুই ঠিক নেই। গোটা বিশ্বকে শোষণ করার অর্থনীতি হচ্ছে পশ্চিমা অর্থনীতি।  মুল্যস্ফীতির কারণে সমাজের সব স্তর বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ  দরিদ্রদের থেকে সংখ্যালঘু ধনী বিত্তশালী পুঁজিপতি শ্রেণীর দিকে অর্থ - সম্পদের প্রবাহ তৈরি হয় । উচ্চ মূল্যস্ফীতি এই সংখ্যালঘু ধনী - পূঁজিপতি শ্রেণীর কারসাজিতেই হয়ে থাকে । তাই দেখা যাচ্ছে যে বিশ্বের সকল দেশ হতে অর্থ , পূঁজি ও সম্পদ পশ্চিমা দেশগুলোয় পাচার হয়ে যাচ্ছে এবং সেখানকার অর্থনীতিতে বিনিয়োগ হচ্ছে এর ফলে ঐ সকল ( পশ্চিমা ) দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও শ্রীবৃদ্ধি ঘটছে । আর এ সব লাভ , অর্থ ও সম্পদ পশ্চিমা পুঁজিপতি ও  পকেটে যাচ্ছে । উল্লেখ্য যে যে ৫ জন পুঁজিপতির ধন - সম্পদ দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে তারা সবাই পশ্চিমা । তাই পাশ্চাত্য অর্থনীতি আসলে বিশ্ব ব্যাপী অর্থনৈতিক সমস্যা ও দারিদ্র্যের কারণ। তাই এ অর্থনীতি আসলে প্রকৃত ও যথার্থ জ্ঞান ও নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয় । সুতরাং এ অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা ( অর্থনীতিবিদ)বিশ্বের অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহের সঠিক সমাধান পেশ করতে অক্ষম । কারণ এ অর্থনীতির ভিত  আসলে এক তরফা ফায়দা হাসিলের ওপর প্রতিষ্ঠিত।

বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের দারিদ্র্য আসলে বিশ্ব অর্থনীতি ও সম্পদ বন্টনে ন্যায় নীতি ও ন্যায়পরায়ণতা ( আদল )  বিদ্যমান নেই বলেই। ন্যায্য সম্পদ বন্টন নীতি না থাকায় এবং বিশ্ব অর্থনীতি ন্যায় নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এতসব বিপত্তি , সমস্যা ও দারিদ্র । আর এ সব কিছুর মূলে রয়েছে পাশ্চাত্যের প্রতিষ্ঠিত অন্যায্য ও অন্যায় মূলক জালেম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা পূঁজিবাদের মধ্য দিয়ে  বিকশিত ও প্রকাশিত হয়েছে এবং বিশ্বের সব কিছুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে যারফলে বিশ্ব ব্যাপী দারিদ্র্য বহাল রেখেছে এবং বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ দারিদ্র কবলিত হয়ে গেছে । এ সব মুষ্টিমেয় পশ্চিমা পুঁজিপতি ও কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব নিজেদের সম্পদ ও ঐশ্বর্যের পাহাড় গড়ে তুলতেই বিশ্ব ব্যাপী যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয় । কারণ এর ফলে প্রথমে অস্ত্র বাণিজ্য রমরমা হয় এবং যুদ্ধের পর ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশ ও রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের পর্যায় এলে তখনো পশ্চিমা পুঁজিপতি ও শিল্পপতিরাই সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় নির্মাণ সামগ্রী ও শিল্প পণ্য  বিক্রি করে। আর তাছাড়া যুদ্ধ বাঁধিয়ে বিভিন্ন দুর্বল দেশের সম্পদও লুট করে নিয়ে যায় অনায়াসে এ সব পশ্চিমা পুঁজিপতি ও কর্পোরেট । এজন্য যুদ্ধ বাঁধানো হচ্ছে তাদের পেশা ও নেশা । রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বিগ্রহ আসলে পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আয়ের উৎস। আর এই সব যুদ্ধ বিগ্রহ বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে । কারণ যুদ্ধ বিগ্রহে সাধারণ মানুষ সহায় সম্বল ও সম্পদ হারায় ও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।  অক্সফামের প্রতিবেদনেও যুদ্ধকে বিশ্ববাসীর দারিদ্রের এক অন্যতম কারণ বলা হয়েছে যার মূলেও রয়েছে পাশ্চাত্য । চলমান ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ এবং গাযায় ইসরাইলের আগ্রাসন ও যুদ্ধ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ) , যুরা (যুক্তরাজ্য) , ফ্রান্স ইত্যাদি বিশাল সামরিক শক্তির অধিকারী এবং এদের সামরিক ও নৌ ঘাঁটি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ স্থান , দেশ , অঞ্চল ও কৌশলগত পয়েন্ট সমূহে বিদ্যমান । এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজেদের সামরিক শক্তির উপস্থিতির মাধ্যমে এ সব পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশ বিশ্বের সকল বাণিজ্যিক সামুদ্রিক পথ ও রুটের নিয়ন্ত্রণ করছে এবং তারফলে বিশ্ব বাণিজ্য নিজেদের করায়ত্তে রাখছে ও সেটার ওপর নজরদারি করছে । ইচ্ছা মত যাকে ইচ্ছা তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অবরোধ আরোপ করছে। আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বাণিজ্যের নেটওয়ার্ক, ব্যাংকিং , অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ( আইএমএফ ইত্যাদি ) সব কিছুর ওপর পাশ্চাত্য অর্থাৎ মাযুরা , যুরা ইত্যাদির আধিপত্য সব সময়  বাকি অন্যান্য অপশ্চিমা দেশের বরাবরে পশ্চিমাদের বৈধাবৈধ নানাবিধ স্বার্থ সংরক্ষণ করার জামানত স্বরূপ । পাশ্চাত্যের এই সামরিক আধিপত্য তার অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক আধিপত্যের রক্ষক । আর এই আধিপত্য ( যা মাযুরা নিজের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার সংরক্ষণ কারী বলে  অভিহিত করে তা ) বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়ানক বক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয় । আর এর ফলে যুদ্ধের বিভীষিকা ও তাণ্ডবলীলায় বিশ্ববাসী ক্ষতির শিকার হচ্ছে এবং দারিদ্রের মধ্যে আপতিত হচ্ছে। অতএব যুদ্ধও হচ্ছে পশ্চিমাদের দান এবং দ যুদ্ধ থেকে অর্থনৈতিক ফায়দা ওঠায় পাশ্চাত্য বিশেষ করে মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) যুরা ( যুক্তরাজ্য ) ও ফ্রান্স ইত্যাদি।  প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র আনয়নকারী 
যুদ্ধের উদগাতাও হচ্ছে মাযুরা ও যুরার নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য।

জলবায়ু সংকট ও সমস্যা আসলেই খুব মারাত্মক সংকট ও সমস্যা তা সমগ্র বিশ্বকে তীব্র কষ্ট , অসস্তি, অশান্তি ও উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। জমিন গরম হয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু সংকট আসলে পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করার প্রত্যক্ষ ফল স্বরূপ । আর দুনিয়ার প্রাকৃতিক পরিবেশের ধ্বংস সাধন শুরু হয়েছে তুমুল জোর গতিতে পাশ্চাত্যে বিশেষ করে অষ্টাদশ শতকে ব্রিটেনের শিল্প বিপ্লবের সূচনা লগ্ন থেকে । পশ্চিমাদের লাগামহীন শিল্প সামগ্রী ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন এবং পাশ্চাত্যের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রাচ্যেরও ওই ধরনের বল্গাহীন লাগামহীন শিল্প সামগ্রী ও কৃষিপণ্য উৎপাদন বিশ্বের প্রকৃতি ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি ও ধ্বংস সাধন করছে । এই তিনশো বছরের শিল্পায়ন পৃথিবীর পরিবেশকে এতটা ধ্বংস সাধন করেছে যে তা অন্ততঃ বিগত ৫০০০০ বছরের মধ্যে অভূতপূর্ব। আর এভাবে মাত্রাতিরিক্ত লাগামহীন শিল্পায়ন ও প্রযুক্তির যথেচ্ছা ব্যবহার যা আসলে পাশ্চাত্যের চরম বস্তুবাদী ও ভোগবাদী মনোবৃত্তি হতেই উৎসারিত তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে প্রয়াত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংসের মতে আগামী এক হাজার বছরের মধ্যে মানবজাতি এ ধরিত্রীর বুক থেকে চিরবিদায় নেবে অর্থাৎ বিলুপ্ত হয়ে যাবে !!!! ব্যস তাহলে জলবায়ু সংকট আসলে শিল্পোন্নত পাশ্চাত্যের সৃষ্ট এবং প্রাচ্যও যেহেতু পাশ্চাত্যের লাগামহীন উন্নয়ন পরিকল্পনা ও শিল্পায়ন এবং সভ্যতা ও সংস্কৃতি গ্রহণ করেছে সেহেতু প্রকৃতি ও পরিবেশের ধ্বংস সাধনে পাশ্চাত্যের শরীক ও অংশীদার। আর জলবায়ু সংকট শিল্প ও রাসায়নিক সামগ্রী ও জ্বালানির লাগামহীন ব্যবহারে প্রকৃতি ও পরিবেশের মারাত্মক দূষণ ( যা এক মিলিয়ন বছরে অভূতপূর্ব) অতিবৃষ্টি , অনাবৃষ্টি, খরা, বন্যা , উষ্ণতার চরম বৃদ্ধির এক অন্যতম ফল স্বরূপ যার ফলে বিশ্ববাসী প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমূহে শস্য ও সম্পদ হানি এবং সহায় সম্পত্তি হারিয়ে দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে । তাই এই জলবায়ু সংকটে বিশ্ববাসীর দারিদ্রের পেছনেও পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ও দায়ী । পাশ্চাত্য এ সমস্যা সমাধানে তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ নেয় নি এবং নিচ্ছেও না গুটিকতক অকিঞ্চিৎকর লোকদেখানো উদ্যোগ ব্যতীত যেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বিশ্ববাসীর ।
অতএব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে ৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার ৫ বিলিয়নের ( ৬২•৫ % ) দারিদ্র্যের প্রধান তিন কারণের স্রষ্টা স্বয়ং পাশ্চাত্য যার নেতৃত্বে রয়েছে মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ও যুরা (যুক্তরাজ্য) । আসলে বিশ্ববাসীর দারিদ্র বিমোচনে না আছে পশ্চিমাদের সদিচ্ছা আর না আছে তাদের সামর্থ্য । সম্ভবত এ কারণেই হয়তো অক্সফাম ঐ প্রতিবেদনে বলেছে: " বর্তমান পরিস্থিতিতে ৫০০ কোটি মানুষের দারিদ্র দূর করতে ২৩০ বছর লাগবে অর্থাৎ সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে ৫০০ কোটি মানুষের দারিদ্র ২২৫৪ সালে দূরীভূত হবে যা আসলেই হবার নয় !!! কারণ ২৩০ বছর একটা দীর্ঘ মেয়াদ ও সময়কাল । সে সময় পৃথিবীর বর্তমান জনগণের কেউ জীবিত থাকবে না । শুধু তাই নয় কয়েক প্রজন্ম অতিবাহিত হয়ে যাবে । আসলে ৫০০ কোটি জনতার দারিদ্র্য বিমোচন কেউ প্রত্যক্ষ করতে পারবে না । অতএব এ দারিদ্র আসলে স্থায়ী এবং তা সমাধান ও দূর করার সামর্থ্য আধুনিক পশ্চিমা জ্ঞান - বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও অর্থনীতির পক্ষে আর সম্ভব নয় । তাই পশ্চিমারা বলছে এই দারিদ্র ঘুচাতে এমন এক দীর্ঘ সময়কালের প্রয়োজন অর্থাৎ ২৩০ বছর । তারা ( পশ্চিমারা ) নিজেদের অপারগতার কথা সরাসরি না বলে এভাবে বলেছে যে ৫০০ কোটি মানুষের দারিদ্র বিমোচন করতে ২৩০ বছর লেগে যাবে !!! আসলে ৫০০ কোটি মানুষের দারিদ্র যে কোন কালেও ঘুচবে না সে কথাটা ধুর্ত্য পশ্চিমারা এভাবে বলছে যে ৫০০ কোটি মানুষ যে দরিদ্র হয়ে গেছে তাতে দু:খ ও চিন্তা করার কিছু নেই। আমরা আগামী ২৩০ বছরের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান করে ফেলব !!!

এখানে প্রশ্ন : বর্তমানে পৃথিবীর লোকসংখ্যা ৮ বিলিয়ন যাদের ৫ বিলিয়ন দরিদ্র হয়ে গেছে ; কিন্তু ২৩০ বছর পরে এই ৮ বিলিয়ন বেড়ে কত বিলিয়ন হবে ? গত ১০০ বছরে জনসংখ্যা ২•৫ বিলিয়ন থেকে ৮ বিলিয়ন হয় তাহলে ২৩০ বছর পরে অর্থাৎ ২২৫৪ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা
বেড়ে ২৫•৬ বিলিয়ন হবে । ৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার ৬২•৫ % অর্থাৎ ৫০০ বিলিয়ন দরিদ্র হলে ২৩০ বছর পর ( ২২৫৪ সালে ) ২৫•৬ বিলিয়নে শতকরা কত জন দরিদ্র হবে ? সেটা কি পশ্চিমারা হিসাব করে দেখেছে ?!!
যদি এই ২৩০ বছরে কোনো বড় ধরনের বালা মুসিবত ( প্রাকৃতিক বা মানব তৈরি বিশেষ করে পশ্চিমাদের তৈরি ) এসে পৃথিবীর লোকসংখ্যা ২ বিলিয়ন করে দিল তাহলে সেটা হবে ভিন্ন কথা । তখন তো আর কোন 
দারিদ্রই থাকবে না ; নাকি থাকবে ? !!!
আসলে পশ্চিমাদের অর্থনীতি বিদ্যা যে ফেল মেরেছে ও ব্যর্থ হয়েছে তা ৫০০ কোটি মানুষের দারিদ্র ঘুচাতে যে ২৩০ বছর লেগে যাবে তা থেকে বোধগম্য হয়ে যায় । তাই পশ্চিমারা এই অর্থনীতি ও অন্যান্য বিদ্যা দিয়ে দারিদ্র সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারবে না । অতএব পশ্চিমাদের দিকে পানির আশায় মেঘের দিকে চাতক পাখীর মতো তাকিয়ে থাকা নিষ্প্রয়োজন । আমাদের সমস্যার সমাধান আমাদের করতে হবে। বরং পশ্চিমাদের নিয়ে আনলে সমস্যার তো সমাধান হবে না এমনকি ২৩০ বছর কেন আগামী ৫০০ বছরেও হবে না। ১৭৫৭ সালে বাংলাদেশ পৃথিবীর  প্রথম ১০ টা সবচেয়ে ধনী দেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং ১৯০ বছর পর ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ( যুরা ) এ দেশ ত্যাগ করলে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্রতম ১০ দেশের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল!!! এই হল যুরা (যুক্তরাজ্য) , মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ও পশ্চিমা দেশগুলো । 
ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

captcha