(আল্লামা কিছুক্ষণ চিন্তা করলেন এবং তারপর উত্তর দিলেন):
"এই পবিত্র মাস অসংখ্য ইবাদতে পূর্ণ, আর এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে এই মাসে এক বিশেষ অনুগ্রহ। আত্মিক পথের একজন পথিকের জন্য আবশ্যক যে, তিনি মুরাকাবার (ধ্যান, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতা) অবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে অবলম্বন করবেন—যে কোনো আমল করার সময়, তা হোক ইবাদত কিংবা পার্থিব কাজ।
রোজা রাখার সময়, তাকে কিয়ামতের দিনের ক্ষুধা ও তৃষ্ণার কথা স্মরণ করতে হবে। তাকে এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে যে, তার সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও ইন্দ্রিয় যেন রোজা পালন করে। বিভিন্ন হাদিসে (যেমন, আল-কাফি, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৮৭; মান লা ইয়াহদারুহল-ফকিহ, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১০৮, ১০৯) এই বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।
কুরআনের আয়াতের অর্থ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা প্রয়োজন। যখন কেউ আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করবে, তখন তার মনে করা উচিত যে, আল্লাহ তার সঙ্গে কথা বলছেন—যেন সে প্রত্যাদেশের উৎস থেকে তা শুনছে।
তাওহিদের বার্তা সম্বলিত দোয়া পড়া উচিত, যেমন দুয়া সাহার/ সেহরীর দুআ, যা এইভাবে শুরু হয়:
"হে আমার আল্লাহ! আমি তোমার সর্বশ্রেষ্ঠ মহিমার ওসিলায় তোমার কাছে প্রার্থনা করছি।" এই বিষয়টি অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
নিজের আত্মিক অবস্থার প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন, কারণ চিন্তা ও ধ্যানই হল আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ার দরজার চাবিকাঠি। মুরাকাবাহ (আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ধ্যান) ছাড়া কোনো ইবাদতই ফলপ্রসূ হবে না।
এটি সেই আয়াত অনুযায়ী:
"হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং প্রত্যেক ব্যক্তিকে চিন্তা করতে দাও যে, সে আগামী দিনের জন্য কী প্রস্তুত করে রেখেছে। আর আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে সম্যক অবগত।" (সূরা হাশর, ৫৯:১৮)
[আল্লামার সান্নিধ্যে, পৃষ্ঠা ১৩১–১৩২]