অনেকেই আছেন যারা খাঁটি ও যত্নশীল বন্ধুদের সঙ্গ পেয়ে পরিপূর্ণতা ও সমৃদ্ধির শিখরে পৌঁছেছেন। অপরদিকে, এমন অনেক মানুষ আছেন যারা খারাপ বন্ধুর পাল্লায় পড়ে ব্যর্থতা এবং নিষ্ফলতার সম্মুখীন হয়েছেন।
‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’ প্রবাদটি সব দেশের মানুষের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। কিন্তু সৎ ও ধার্মিক বন্ধু পেতে আমরা কী করতে পারি? এ সম্পর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (স.) হাদিস রয়েছে। এছাড়া তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকেও এ সংক্রান্ত অনেক বর্ণনা এসেছে। আজকের এই নিবন্ধে এ সম্পর্কেই আলোচনা করব।
সৎ সঙ্গ
মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (স.) বলেছেন, নেককার মানুষদের সঙ্গে চলাফেরা করুন, কারণ যদি আপনি ভালো কাজ করুন, তাহলে সে আপনার প্রশংসা করবে, আর যদি আপনি ভুল করে বসেন তাহলে এ জন্য আপনাকে তিরস্কার করবে না। (তানবিয়াহ আল-খাওয়াতির: খণ্ড ২, পৃষ্টা ১২২)
ভালো বন্ধু
ইমাম হুসাইন (আ.) বলেছেন, তোমার প্রকৃত বন্ধু হলো সেই ব্যক্তি যে তোমাকে পাপ থেকে বিরত রাখে, আর তোমার শত্রু হলো সেই ব্যক্তি যে তোমাকে পাপ করতে উৎসাহিত করে। (কানজুল ফাওয়ায়িদ, পৃষ্ঠা ১২৮)
অনেক বন্ধু
ইমাম হাসান আসকারী (আ.) বলেছেন, যিনি সচ্চরিত্রবান, উদার স্বভাবের এবং সহনশীল, তার অনেক বন্ধু থাকবে। (বিহার আল-আনোয়ার, খণ্ড ৭৮, পৃষ্ঠা ৩৭৯)
সব মন্দের সম্মিলন
ইমাম আলী (আ.) বলেছেন, অসৎ সঙ্গীদের নিয়ে বৈঠক মানেই সব মন্দের সম্মিলন। (শারহ আল গুরার আল-হিকাম: খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩৬৯)
মৃত হৃদয়ের বন্ধু
মহানবী (স.) বলেছেন, মৃতদের সাথে চলাফেরা এড়িয়ে চলুন। প্রশ্ন করা হয়েছিল, হে আল্লাহর রাসূল। এই মৃতরা কারা? তিনি বললেন: প্রত্যেক সম্পদশালী ব্যক্তি যার সম্পদ তাকে বিদ্রোহী করে তোলে। (তানবিয়াহ আল-খাওয়াতির: পৃষ্ঠা ২৮৪)
বন্ধুত্বের কর্তব্য
ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার বন্ধুকে খারাপ কিছু করতে দেখে এবং সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তাকে তা করতে বাধা না দেয়, এর মানে হলো সে তার বন্ধুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং যে লোক অজ্ঞ ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব করা থেকে বিরত থাকে না, সেও তার মতো হয়ে যেতে পারে। (বিহার আল-আনওয়ার, খণ্ড ৭৫, পৃষ্ঠা ৬৫)
বন্ধুর সাথে আচরণ
ইমাম আলী (আ.) বলেছেন, তোমার বন্ধুর প্রতি সদয় হও, যদিও সে তোমার অবাধ্যও হয় এবং যদি সে তোমার ওপর জুলুমও করে, তবুও তার সাথে যোগাযোগ বজায় রাখো। (বিহার আল-আনওয়ার, খণ্ড ৭৪, পৃষ্ঠা ১৬৬)
তিনটি বৈশিষ্ট্য
ইমাম আলী (আ.) বলেছেন, তিনটি গুণ বন্ধুত্বের দিকে পরিচালিত করে। এগুলো হলো- ভালো আচরণ, দয়া এবং নম্রতা। (গুরার আল-হিকাম ওয়া দুরার আল-কালিম, হাদিস ৪৬৮৪)
পার্সটুডে