
এবার এমনি একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে এক লিবিয়ান হজযাত্রীর ক্ষেত্রে। একটি সমস্যার কারণে তিনি প্লেনে উঠতে পারেননি এবং তাঁকে না নিয়েই প্লেন চলে যায়।
কিন্তু দুইবার গিয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হয় এবং তাকে নিয়েই প্লেনটি উড়াল দেয়।
গত ২৫ মে আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ ঘটনা তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লিবিয়ার ওই তরুণের নাম আমের মাহদি আল-গাদ্দাফি। চলতি বছর তিনি হজ করতে সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।
দুই দিন আগে দুপুর ১২টায় তাঁর হজ ফ্লাইটের নির্ধারিত সময় ছিল। আমের ছিল তার কাফেলার শেষ হজযাত্রী। নির্ধারিত সময়ে মিসর হয়ে সৌদি আরব যেতে তিনি ত্রিপোলি বিমানবন্দরে পৌঁছেন।
কিন্তু বিমানবন্দরের এক নিরাপত্তাকর্মী তাকে জানান, তার পাসপোর্টে একটি নিরাপত্তা ইস্যু রয়েছে।
তা সমাধানে তাকে অপেক্ষা করতে হবে। এর আগে তাকে প্লেনে উঠতে দেওয়া হবে না। মূলত লিবিয়ার গৃহযুদ্ধের এক দশক পরও ‘গাদ্দাফি’ শব্দটি নিয়ে এখনো নিরাপত্তা ইস্যু রয়েছে। যা হজযাত্রী আমেরের ক্ষেত্রেও ঘটেছে।
অতঃপর আমেরের কাফেলার সবাই প্লেনে আরোহন করলেও তাঁকে উঠতে দেওয়া হয়নি।
তিনি অনেক আকুতি-মিনতি করলেও ফ্লাইট ক্যাপ্টেন সমস্যা সমাধানে অনিশ্চয়তা ও সময়স্বল্পতার কথা জানিয়ে তাকে ছাড়াই চলে যেতে যায়। কিন্তু এসব কথায় আমের হজ করা দৃঢ় মনোবলে বিন্দু পরিমাণও ছেদ পড়েনি। বরং তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘হজে না যাওয়া পর্যন্ত আমি এখান থেকে সরব না।’
কিছুক্ষণ পর চলে যাওয়া ফ্লাইটটিতে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয় এবং তা বিমানবন্দরে ফিরতে বাধ্য হয়। মেরামতের পর ফ্লাইটটি পুনরায় আকাশে উড়াল দেয়। কিন্তু দ্বিতীয় বারও সমস্যার মুখোমুখি হয় এবং বিমানবন্দরে ফিরতে বাধ্য হয়। যাত্রী ও ক্রুদের মতে, দ্বিতীয় বার জরুরি অবতরণের সময় প্লেনের ক্যাপ্টেন ঘোষণা দেন, ‘আমি শপথ করছি, এই প্লেনে আমেরকে না নিয়ে আমি আর উড়ব না।’ পরে কর্তৃপক্ষ দ্রুত আমেরকে ফ্লাইটে উঠার অনুমতি দেয়। এরপর ফ্লাইটটি তৃতীয় বারে আমেরকে নিয়ে নিরাপদে চলে যায়।
আমেরর এই হজযাত্রার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে বিষয়টিকে অলৌকিক ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। পরে আমের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি হজে যেতে চেয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, হজ আমার জন্য লেখা থাকলে কোনো শক্তি আমাকে আটকাতে পারবে না।’