
রায়ে বলা হয়, “ইসলামের সমালোচনা—even যদি তা অবমাননাকর ভাষায় হয়—তবুও তা আইনত সুরক্ষিত ‘দার্শনিক বিশ্বাস’-এর অন্তর্ভুক্ত।”
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এটি ভবিষ্যতে “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা”-এর অজুহাতে ধর্ম অবমাননাকে বৈধতা দেওয়ার পথ খুলে দিতে পারে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন যুক্তরাজ্যে ইসলামবিদ্বেষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই মামলা শুরু হয় প্যাট্রিক লি নামে এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে, যিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্টে নবী করিম (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। চার বছর ধরে চলা মামলার পর আদালত রায় দেয় যে, তিনি ইসলাম নিয়ে সমালোচনা করার অধিকার রাখেন, কারণ তা “ধর্ম নয়, বরং ধর্মীয় শিক্ষা ও অনুশীলনের সমালোচনা।”
প্যাট্রিক লি, যিনি নিজেকে নাস্তিক বলে পরিচয় দেন, আগে Institute and Faculty of Actuaries (IFoA)-এর সদস্য ছিলেন। গত বছর তাকে ৩৪ বছরের সদস্যপদ শেষে বহিষ্কার করা হয় এবং ৪২টি ‘আপত্তিকর বা উসকানিমূলক’ পোস্টের তদন্তের পর প্রায় ২৩ হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হয়।
তবে আদালতের বিচারক ডেভিড খান রায়ে উল্লেখ করেন যে, “লি ইসলামের নির্দিষ্ট শিক্ষা ও প্রথা নিয়ে সমালোচনা করেছেন, মুসলমানদের ব্যক্তি বা সামষ্টিকভাবে অপমান করেননি।” বিচারক আরও বলেন, “যতক্ষণ না তার বক্তব্য ঘৃণা বা সহিংসতা উসকে দেয়, ততক্ষণ তা ‘দার্শনিক বিশ্বাস’ হিসেবে আইনগত সুরক্ষা পেতে পারে।”
লি নিজের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, তিনি অতীতে মুসলিম সম্প্রদায়কে সহায়তাকারী দাতব্য সংস্থাগুলোতে অনুদান দিয়েছেন, যা তার উদ্দেশ্য ইসলামবিদ্বেষ নয়, তা প্রমাণ করে।
আদালত আগামী ফেব্রুয়ারিতে নতুন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে, যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে — তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টগুলো ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’-এর আওতায় পড়বে কিনা, নাকি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
লি’র আইনজীবী জন হলব্রুক বলেন, “আমার মক্কেল এমন মতামত পোষণ করেন যা কিছু মানুষের কাছে আপত্তিকর মনে হতে পারে, কিন্তু তার উদ্দেশ্য মুসলমানদের অধিকার লঙ্ঘন নয়।”
এটি যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে প্রথম রায়, যেখানে আদালত স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছে যে, “ইসলামবিরোধী মতামত” আইনত ‘সমালোচনামূলক দার্শনিক বিশ্বাস’-এর অন্তর্ভুক্ত।
এই রায় এমন সময় এসেছে, যখন যুক্তরাজ্য সরকার ‘ইসলামোফোবিয়া’ পরিভাষার পরিবর্তে ‘মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা’-এর নতুন সংজ্ঞা প্রণয়নের প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে। 4316004#