IQNA

রজব মাসের আমলসমূহ: যেন কিয়ামতের দিন “আইনার রজবিয়্যুন?”

6:03 - December 22, 2025
সংবাদ: 3478647
ইকনা - সোমবার থেকে পবিত্র রজব মাস শুরু হয়েছে। এই মাসে গোসল, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর জিয়ারত এবং রোজা রাখলে কিয়ামতের দিন যখন “আইনার রজবিয়্যুন?” (রজব মাসের আমলকারীরা কোথায়?) ডাক দেওয়া হবে, তখন আমরা আনন্দ ও গর্বের সাথে নিজেদেরকে সেই ডাকের সম্বোধিত মনে করতে পারব।

ইকনা জানায়, সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মহিমান্বিত রজব মাস। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই মাস সম্পর্কে বলেছেন: রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস এবং রমাদান আমার উম্মতের মাস।অন্য এক হাদিসে তিনি বলেন: রজব আল্লাহর মহান মাস; এই মাসে তিনি তাঁর বান্দাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন।” (উয়ূন আখবার আর-রিদা (.), খণ্ড , পৃ. ৭১)

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রজব মাস এলে রাসূলুল্লাহ (সা.) মুসলিমদের একত্র করে খুতবা দিতেন এবং বলতেন: হে মুসলিমগণ! তোমাদের ওপর একটি মহান বরকতময় মাসের ছায়া পড়েছে; এটি রহমত বর্ষণের মাস। আল্লাহ এই মাসে তাঁর বান্দাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেনতবে শিরককারী বা ইসলামে বিদআত সৃষ্টিকারী ছাড়া।

যারা রজব মাসের সম্মান রক্ষা করে এবং এর আমল করে তাদেরকে রজবিয়্যুনবলা হয়। কিয়ামতের দিন এক ফেরেশতা ডাক দেবেন: আইনার রজবিয়্যুন?”— অর্থাৎ যারা রজব মাসের সম্মান রক্ষা করেছে এবং এর আমল করেছে তারা কোথায়?

রজব মাসের প্রথম রাতের দোয়া চাঁদ দেখার সময় এই দোয়া পড়া মুস্তাহাব: আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবিন ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা শাহরা রমাদানা...” (ইকবালুল আমালিল হাসানাহ, খণ্ড , পৃ. ১৭৩) ইশার নামাজের পরও একটি বিশেষ দোয়া পড়া মুস্তাহাব। এছাড়া ইয়া মান আরজুহু লিকুল্লি খাইর...দোয়া এই মাসের দিন-রাতে পড়া উত্তম।

গোসল রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: যে ব্যক্তি রজব মাস পায় এবং এর শুরু, মধ্য শেষে গোসল করে, সে গুনাহ থেকে এমন পবিত্র হয়ে যায় যেন মায়ের পেট থেকে নতুন জন্ম নিয়েছে।

ইমাম হুসাইন (.)-এর জিয়ারত এবং প্রথম রাতের বিশেষ নামাজ (মাগরিবের পর ২০ রাকাত, ১০ সালামে) অন্যতম আমল। ইশার পর দুই রাকাত নামাজও মুস্তাহাব, যাতে নির্দিষ্ট সূরা পড়ে ৩০ বার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং ৩০ বার সালাওয়াত পাঠ করা হয়।

রাত জাগরণ রজবের প্রথম রাত চারটি রাতের একটি যাতে রাত জাগরণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

প্রথম দিনের আমল রোজা: বর্ণিত আছে হযরত নূহ (.) এই দিনে নৌকায় আরোহণ করেন এবং সঙ্গীদের রোজা রাখার নির্দেশ দেন। এই দিনের রোজা জাহান্নামের আগুনকে এক বছর দূরে রাখে। গোসল ইমাম হুসাইন (.)-এর জিয়ারতও মুস্তাহাব। ইমাম সাদিক (.) বলেন: যে ব্যক্তি রজবের প্রথম দিনে ইমাম হুসাইন (.)-এর জিয়ারত করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। (যারা কারবালায় যেতে পারেন না, তারা বুকে হাত রেখে সাল্লাল্লাহু আলাইকা ইয়া আবা আব্দিল্লাহতিনবার বলে জিয়ারতের সওয়াব লাভ করতে পারেন।)

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ইসতিগফার সালাওয়াত এই মাসের দিনগুলোতে বেশি পড়া উত্তম।

রজব মাসের সাধারণ আমল প্রতিদিন এই দোয়া পড়া: ইয়া মান ইয়ামলিকু হাওয়াইজাস সাইলীন... রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: যে ব্যক্তি রজবে ১০০ বার আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়া...বলে এবং শেষে সাদকা দেয়, আল্লাহ তাকে রহমত মাগফিরাত দান করেন। ৪০০ বার বললে শহিদের সওয়াব পায় এবং ১০০০ বার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললে অগণিত সওয়াব লেখা হয়।

সকালে ৭০ বার এবং রাতে ৭০ বার ইসতিগফার পড়ে হাত তুলে আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যাবললে রজবে মৃত্যু হলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হয়।

সূরা তাওহিদ বেশি পড়ার ফজিলতও অগণিত। একদিন রোজা চার রাকাত নামাজে নির্দিষ্ট সূরা পড়লে মৃত্যুর আগে জান্নাত দেখা যায়।

রজবের রোজার সওয়াব রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: একদিন রোজা আল্লাহর মহা সন্তুষ্টি লাভ করে এবং জাহান্নামের এক দরজা বন্ধ হয়। ইমাম কাজিম (.) বলেন: একদিন রোজা জাহান্নামকে এক বছর দূরে রাখে এবং তিনদিন রোজা জান্নাত ওয়াজিব করে। তিনদিন রোজায় ৯০০ বছরের ইবাদতের সওয়াব লেখা হয়। শেষ একদিন রোজা সিরাতে সহজ পারাপার করে এবং শেষ তিনদিন রোজা কিয়ামতের ভয় জাহান্নাম থেকে মুক্তির সনদ দেয়। 4324092#

 

captcha