IQNA

মিঠাপুকুর বড় মসজিদ

বাঙালি ও পারস্য স্থাপত্যরীতির অপূর্ব সম্মিলন

0:02 - February 09, 2022
সংবাদ: 3471404
তেহরান (ইকনা): মিঠাপুকুর বড় মসজিদ। রংপুর অঞ্চলের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি। উপজেলা সদর থেকে আধা মাইল উত্তর-পশ্চিমে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের পাশে অবস্থিত মসজিদটি। মসজিদের দেয়ালে স্থাপিত শিলালিপির বর্ণনা অনুসারে ১২২৬ হিজরি মোতাবেক ১২১৭ বঙ্গাব্দে (আনুমানিক ১৮১০ খ্রিস্টাব্দ) মসজিদটি নির্মিত হয়।
জনৈক শেষ মুহাম্মদ সাবেরের ছেলে শেখ মুহাম্মদ আসেম মসজিদটি নির্মাণ করেন। নান্দনিক কারুকাজমণ্ডিত মসজিদের আছে খোলা চত্বর ও দৃষ্টিনন্দন প্রবেশদ্বার। বাঙালি কুঁড়েঘরের আদলে দোচালা ছাদে আচ্ছাদিত প্রবেশ পথটি। মসজিদের চার কোণে চারটি পিলারের ওপর আছে চারটি মিনার। মসজিদের সম্মুখভাগের তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ পাশে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশ পথ আছে। সামনের অংশে পোড়া মাটির কারুকাজ মসজিদটিকে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে দরজা বরাবর তিনটি মেহরাব আছে। আয়তকার এই মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ১০.৬৬ মিটার এবং প্রস্থে ৪.১১ মিটার।
 
আয়তকার মসজিদটি দুটি ল্যাটারাল খিলানের সাহায্যে তিন ভাগে ভাগ করে ওপরে নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি গোলাকার গম্বুজ। মসজিদের প্রধান তিনটি গম্বুজের কারণে অনেকে মসজিদটি তিন গম্বুজ মসজিদও বলে থাকেন। আবার কেউ কেউ এটাকে তিন কাতার মসজিদ হিসেবেও চেনে। গম্বুজগুলো সুন্দর প্যানেল, লতাপাতা, ফুল, জ্যামিতিক নকশায় সুশোভিত। প্রত্নতাত্ত্বিকদের ভাষ্য মতে মিঠাপুকুর বড় মসজিদে বাঙালি ও পারস্য স্থাপত্যরীতির অপূর্ব সম্মিলন ঘটেছে।
 
মসজিদের তিন মিহরাব, সামনের দেয়াল, প্যারাপেট দেয়াল ও গম্বুজের গোলাকার অংশে দৃষ্টিনন্দন নকশা দিয়ে আবৃত করা হয়েছে। কিছু প্যানেল করা আছে। নকশায় লতাপাতা, ফুল ও জ্যামিতিক আবহ ফুটে উঠেছে। মিঠাপুকুর নামে খ্যাত প্রায় ২৫ একর আয়তনের বিশাল জলাশয়ের কাছেই মসজিদটি অবস্থিত। এলাকাবাসীর দাবি, সরকারের মনোযোগ ও অর্থায়ন বৃদ্ধি পেলে মসজিদের স্থায়িত্ব এবং দর্শকপ্রিয়তা দুটিই বৃদ্ধি পাবে।
captcha