IQNA

দায়িত্ব পালনে জাতিসংঘ মহাসচিবের ব্যর্থতার খতিয়ান

22:56 - December 31, 2016
সংবাদ: 2602269
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের দ্বিতীয় দফায় পাঁচ বছর মেয়াদী দায়িত্ব পালনের শনিবার শেষ দিন। এরপর ৭১ বছর বয়সী অ্যান্থেনিউ গুস্তার নবম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করবেন।
দায়িত্ব পালনে জাতিসংঘ মহাসচিবের ব্যর্থতার খতিয়ান
বার্তা সংস্থা ইকনা: বান কি মুন গত দশ বছরে জাতিসংঘ মহাসচিবের দায়িত্ব পালনকালে নানা রকম চ্যালেঞ্জ ও সংকটের সম্মুখীন হয়েছেন। তবে বহু চ্যালেঞ্জ ও সংকট মোকাবেলায় তিনি কাক্সিক্ষত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বান কি মুনের কার্যক্রম মূল্যায়ন করতে হলে তার সামগ্রিক কর্মকা-কে দুইভাগে ভাগ করতে হবে।
প্রথমত, জাতিসংঘের অভ্যন্তরে বিরাজমান চ্যালেঞ্জ বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের গঠন কাঠামো এবং এ সংস্থার বাজেট নিয়ে নানান বিতর্কের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। জাতিসংঘের বাজেট সংকট নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কারণ আমেরিকাসহ কোনো কোনো বৃহৎ শক্তি একদিকে তাদের নির্ধারিত চাঁদা পরিশোধ না করায় কিংবা  সময়মত পরিশোধ না করায় জাতিসংঘের কার্যক্রম যেমন ব্যহত হচ্ছে অন্যদিকে আন্তর্জাতিক এই সংস্থায় তারা তাদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের অন্যায় দাবি আদায়ে এ সংস্থার কর্মকর্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

জাতিসংঘ বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের কাঠামো সংস্কার করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান বিশ্বে আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন এসেছে তার ফলে জাতিসংঘের সংস্কার জরুরি। আন্তর্জাতিক সমাজের দাবির প্রতি সাড়া দিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এ সংস্থার সংস্কার সাধনে ব্যর্থ হয়েছেন।

দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে বান কি মুনকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সংকট মোকাবেলা করতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইউক্রেন, সিরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও ইয়েমেন যুদ্ধে জাতিসংঘের ভূমিকার কথা উল্লেখ করা  যায়। এসব গুরুতর সংকটে জাতিসংঘ কেবল নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে এবং গঠনমূলক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। নতুন মহাসচিবের পরিচয় অনুষ্ঠানে বান কি মুন স্বীকার করেছেন, বহু সমস্যা সমাধানে এই সংস্থা তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে বিশেষ করে সিরিয়া সংকটে এই সংস্থা গঠনমূলক কোনো কাজই করতে পারেনি।
সিরিয়া সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করা থেকে প্রমাণিত হয়, জাতিসংঘের বর্তমান গঠন কাঠামো দিয়ে এই সংস্থার নীতিমালা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। জাতিসংঘ শুধু যে, ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে তাই একই সঙ্গে শিশু হত্যার তালিকা থেকে সৌদি আরবের নামও বাতিল করে দিয়েছে যা কিনা এই সংস্থার জন্য বিরাট কেলেঙ্কারি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সৌদি আরব জাতিসংঘকে অর্থ সহায়তা দেয়া বন্ধের হুমকি দেয়ার পরই শিশু হত্যাকারীর তালিকা থেকে দেশটির নাম বাদ দেয়া হয়। এ থেকে বোঝা যায়, জাতিসংঘ মাত্র কয়েকটি দেশের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংকট সমাধানে এই সংস্থার পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশা করা যায় না।   আমাদের সময়.কম
captcha