IQNA

ইমাম মুহাম্মাদ বাকের (আ.); ইসলামের এক অতুলনীয় নক্ষত্র

23:37 - August 29, 2017
সংবাদ: 2603710
১১৪ হিজরি সনের ৭ জিলহজ্ব ইসলামের ইতিহাসে এক মহাশোকের দিন। কারণ, এই দিনে শাহাদাত বরণ করেছিলেন বিশ্বনবীর (সা.)’ পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য তথা তাঁর নাতির নাতি (প্র-প্রপৌত্র) হযরত ইমাম বাকির (আ.)। আজ ইরানসহ বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে এই গভীর শোক দিবস তথা ইমাম বাকির (আ)'র ১৩২৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী।

ইমাম মুহাম্মদ বাকির (আ.)'র জন্ম হয়েছিল পবিত্র মদিনায় ৫৭ হিজরির পয়লা রজব অথবা তেসরা সফর। তাঁর মা ছিলেন ইমাম হাসানের কন্যা ফাতিমা (সা.আ) কারবালার মহা-ট্র্যাজেডি ও মহা-বিপ্লবের সময় তিনি পিতা ইমাম সাজ্জাদ (আ.) ও দাদা ইমাম হুসাইন (আ.)'র সঙ্গে ছিলেন। এ সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র চার বছর। পিতা ইমাম সাজ্জাদ তথা ইমাম জাইনুল আবেদিন (আ.) হিজরি ৯৫ সালে শাহাদত বরণ করলে তিনি মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্ব তথা ইমামত লাভ করেন। আর সেই থেকে শাহাদত লাভের সময় পর্যন্ত তথা ১৯ বছর পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।

ইসলামের সত্যিকার শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ এ ধর্মের সার্বিক দিকগুলোর সংরক্ষণ, ক্রমবিকাশ এবং ক্রম-অগ্রগতি মহান ইমাম বাকির (আ.)’র কাছে চিরঋণী। তাঁর আগে মহানবীর (সা) বংশধারার নিষ্পাপ সদস্যরা সত্যকে তুলে ধরার সংগ্রামে ব্যস্ত থাকায় এবং সমর্থকদের নিরাপত্তা না থাকায় ইসলামী সাংস্কৃতিক ও জ্ঞান-বিস্তার আন্দোলনের কোনও প্রকাশ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে যেতে পারেননি। কিন্তু এক সময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল থাকায় এই কাজ প্রকাশ্যেই ও মোটামুটি বিনা বাধায় করার সুযোগ পেয়েছিলেন ইমাম বাকির (আ)। আর এ জনই তাঁকে বাকির আল উলুম বা জ্ঞান বিদীর্ণকারী বলা হয় যা তাঁর সবচেয়ে বড় উপাধি।

তিনি প্রকাশ্যেই ছাত্র ও সমর্থকদের সমাবেশে ইসলামী বিশ্বাস ও কুরআন-হাদিস সম্পর্কে বক্তব্য রেখে, জ্ঞানগত বহু বিতর্কে অংশ নিয়ে এবং তাঁর আলোচনাগুলোর সংকলন প্রকাশের অনুমতি দিয়ে ইসলামী জ্ঞান-আন্দোলনকে মোটামুটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পেরেছিলেন। 

তিনি ছিলেন একদিকে শ্রেষ্ঠ আবেদ ও পরহিজগার এবং অন্যদিকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও শ্রেষ্ঠ নেতা, আইনবিদ ও সংস্কারক। জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ছিল অন্যান্য ইমামদের মতই ইমাম বাকির (আ.)'র চরিত্রের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। ফলে উমাইয়া শাসক হিশামের নির্দেশে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে শহীদ করা হয় এই মহান ইমামকে। ১১৪ হিজরি সনের ৭ ই জিলহজ ৫৭ বছর বয়সে শাহাদাত বরণ করেন তিনি ।

captcha