IQNA

‘আফগানিস্তানে আইএসকে অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র’

17:40 - October 09, 2017
সংবাদ: 2604025
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সাহায্য দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই।

বার্তা সংস্থা ইকনা: লন্ডনে ‘রাশিয়া টুডে’ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কারজাই অভিযোগ করেন, হেলিকপ্টারে করে আফগানিস্তানের আইএস ঘাঁটিতে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছে দিচ্ছে মার্কিন সেনারা।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারির মধ্যেই গত তিন-চার বছরে আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) উত্থান হয়েছে।
আফগানিস্তানে আইসিস-কে মার্কিনীরা ব্যবহার করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমারও তাই সন্দেহ। আফগান লোকেরা আমাকে বলেছে, জঙ্গিদের হেলিকপ্টার দেয়া হয়েছে। তারা আমাকে বলেছে যে অচিহ্নিত, অসামরিক রঙের হেলিকাপ্টারগুলো শুধু এক এলাকায় নয়, দেশের বিভিন্ন অংশে সরবরাহ করা হয়েছে।’
কারজাই দাবি করেন, মার্কিন সেনা ও সিআইএ-র ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীরা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ সন্ত্রাস রুখতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তা সত্ত্বেও আফগান জঙ্গিরা ৯/১১-র পর থেকে আরো শক্তিশালী হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই বোমা হামলা, হত্যাকাণ্ড, কারাগার ও আফগান জনগণকে হয়রানিতে কোনো কাজ হয়নি। বোমার আঘাতে আমার দেশ ধ্বংস হয়ে যাক, সেটা আমি চাই না। আমরা শান্তি চাই।’
কারজাই আরো দাবি করেন, আফগানিস্তান থেকে জঙ্গি নির্মূল করতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অ-পারমানবিক বোমা (মোয়াব) ফেলা হয়নি। বরং এর পিছনে অন্য কারণ ছিল। উত্তর কোরিয়াকে ভয় দেখাতে তারা এটা আফগানিস্তানে ব্যবহার করেছিল। গুটিকতক লোক মারার জন্য কেউ এত বড় বোমা ফেলে না।
কেন গত কয়েক বছরে আফগানিস্তানে আইএসের উত্থান হয়েছে তা জানতে চেয়ে কারজাই পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আফগানিস্তানে যখন আইএস আসে তখন মার্কিন গোয়েন্দা ও সেনাবাহিনী কী করেছে?’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এসেছিল আফগানিস্তান থেকে চরমপন্থা বিতাড়িত করে শান্তি ও স্থিতিশিলতা ফেরাতে। কিন্তু এটা এখন আরো বেড়েছে। কেন? আমাদের এই প্রশ্ন করার অধিকার আছে এবং অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রকে এর জবাব দিতে হবে।’
কারজাই বলেন, ‘সামরিক অভিযান, বিশেষ করে বিদেশি সেনাদের অভিযান শান্তি আনতে পারবে না। আফগান সংকটের সমাধানে এখন সকলের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম এমন একটি ঐক্যমতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা প্রয়োজন। এমনকি ‘দেশের সন্তান’ তালেবানের কাছেও।’
আফগানিস্তানে শান্তি আনতে চীন, রাশিয়া, পাকিস্তান ও ভারতের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই অঞ্চলে সহযোগিতামূলক আচরণ করতে হবে বলেও পরামর্শ দেন কারজাই।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে পাকিস্তানের সঙ্গে মিলেই বাঁচতে হবে। যদিও তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বৈপরীত্যের শক্ত দুইটি কারণ আছে।’
আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যখন আমরা শরণার্থী হয়েছিলাম তখন পাকিস্তানের জনগণ আমাদের স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু তারা একই সঙ্গে (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে) মুজাহিদদের ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ডের সমর্থন দিয়ে আমাদের সমাজের ভিত দুর্বল করে দিয়েছে।’ আরটিএনএন
captcha