IQNA

ফিলিস্তিনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা

সিরিয়ার আকাশে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে ইরানি হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির স্বীকারোক্তি পর্যন্ত

8:23 - July 21, 2025
সংবাদ: 3477739
ইকনা- সিরিয়ার সূত্র জানিয়েছে যে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলি দক্ষিণ সিরিয়ার উপর দিয়ে উড়ছে এবং সুইদায় আবারও লড়াই শুরু হয়েছে।

 সিরিয়ার সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইহুদিবাদী ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো সুয়েইদা প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের আরিকা গ্রাম, দারা প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নাউয়া শহর এবং কুনেইত্রা প্রদেশের খান আরনাবা শহরের আকাশে উড়ে বেড়িয়েছে।

তারা জানায়, এসব এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী তাপ বেলুন নিক্ষেপ করেছে, যার ফলে দক্ষিণ সিরিয়ার জনগণের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে, সুয়েইদা প্রদেশের আরিকা, রাইমা হাজেম ও শাহবা শহরগুলোতে সংঘর্ষ পুনরায় শুরু হয়েছে। সংঘর্ষে মাঝারি অস্ত্র ও মর্টার ব্যবহার হয়েছে এবং আরিকা শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি অনেক বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে।

এই সংঘর্ষ এমন সময়ে শুরু হলো, যখন এর আগে সুয়েইদায় যুদ্ধবিরতির খবর দেওয়া হয়েছিল।

از پرواز جنگنده‌های اسرائیلی برفراز سوریه تا اعتراف به خسارات گسترده حملات ایران

ইরানি হামলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির স্বীকারোক্তি

ইসরায়েলের সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী আভিগদর লিবারম্যান ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতার প্রসঙ্গে তেল আবিবের ওপর ইরানের সম্ভাব্য আগাম হামলার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি স্বীকার করেন, মাত্র ২৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ডেকে এনেছিল।

তিনি বলেন, “১২ দিনের যুদ্ধের পর এখন তেহরানের মধ্যে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবল ইচ্ছা কাজ করছে।” লিবারম্যান আরও দাবি করেন, ইসরায়েল একপর্যায়ে আবারও ইরানে হামলা চালাতে বাধ্য হবে।

তিনি আমেরিকা ও ইসরায়েলের ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় আগ্রাসনের প্রসঙ্গে বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্টগুলো জানাচ্ছে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে পুনর্গঠন করতে সক্ষম।

লিবারম্যান যোগ করেন, “যা আমাকে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন করে, তা হলো ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। মাত্র ২৬টি ক্ষেপণাস্ত্রই যখন এত ক্ষয়ক্ষতি করেছে, তাহলে ২৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র হলে ইসরায়েলের কী অবস্থা হতো তা ভাবলেই শিউরে উঠতে হয়!”

از پرواز جنگنده‌های اسرائیلی برفراز سوریه تا اعتراف به خسارات گسترده حملات ایران

উত্তর গাজার ভয়াবহ গণহত্যার প্রতিবাদে হামাসের প্রতিক্রিয়া

হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, “উত্তর গাজার জিকিম এলাকার একটি সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রে ক্ষুধার্ত সাধারণ মানুষকে হত্যা করা — যাতে ৬০ জনেরও বেশি শহীদ ও আহত হয়েছেন — তা গণহত্যামূলক যুদ্ধেরই ধারাবাহিকতা। মানবিক সহায়তা ও ক্ষুধাকে হাতিয়ার বানিয়ে এভাবে মানুষকে কেন্দ্রে টেনে নিয়ে হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে।”

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গাজায় যা ঘটছে তা একটি বড় ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ। এখানে হত্যা, অনাহার ও তৃষ্ণাকে জাতিগত নিধন ও গণহত্যার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করে।”

হামাস প্রশ্ন তোলে, “যখন ৭০ জনের বেশি শিশু অপুষ্টিতে মারা যায়, তখন কীভাবে বিশ্ব নীরব থাকতে পারে? যখন গাজার অধিকাংশ মানুষ গণহারে মৃত্যুর সম্মুখীন, তখন কীভাবে সহানুভূতিশীল মানবতা এই অবস্থা মেনে নিতে পারে?”

তারা আরও জানায়, “হাজার হাজার টন মানবিক সহায়তা যখন রাফা সীমান্তে আটকে পড়ে আছে, আর গাজার মানুষ অনাহারে মরছে, তখন আমেরিকা ও ইসরায়েলকে এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ দায় নিতে হবে। আমরা অবিলম্বে এই সহায়তা বিতরণ ব্যবস্থার তদন্ত দাবি করি।”

হামাস জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়ার এবং ফিলিস্তিনি জনগণের সহায়তায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।

از پرواز جنگنده‌های اسرائیلی برفراز سوریه تا اعتراف به خسارات گسترده حملات ایران

আরেক ইসরায়েলি সেনার মৃত্যু

ইসরায়েলি মিডিয়া জানিয়েছে, প্যারাট্রুপার ইউনিটের সদস্য ‘দান ফিলিপসন’ আত্মহত্যার ফলে নিহত হয়েছেন। তিনি গত সপ্তাহে দক্ষিণ ইসরায়েলের এক সেনাঘাঁটিতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

শুক্রবার আরেকটি ঘটনার বরাতে জানানো হয়, এক ৩০ বছর বয়সী সেনার মৃতদেহ কফার তাবুহ এলাকার পশ্চিম তীরে পাওয়া গেছে, যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন এবং ধারণা করা হচ্ছে, তিনিও আত্মহত্যা করেছেন।

ইসরায়েলি সূত্রগুলো জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর (১৫ مهر ۱۴۰۲) গাজার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মানসিক অসুস্থতার কারণে ৪৪ জনের বেশি ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছে।

‘হা’আরেতজ’ পত্রিকা জানায়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখন এমন রিজার্ভ সেনাদেরও যুদ্ধক্ষেত্রে ফেরত পাঠাচ্ছে যারা মানসিক আঘাতজনিত সমস্যায় ভুগছেন, কারণ সেনাবাহিনীতে জনবলের ঘাটতি চলছে।

চ্যানেল ১২ জানায়, সেনারা ১২ ঘণ্টারও বেশি সময়ব্যাপী চলা সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়া নিয়ে হতাশা ও ক্লান্তির কথা বলছেন।

از پرواز جنگنده‌های اسرائیلی برفراز سوریه تا اعتراف به خسارات گسترده حملات ایران

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের পর ইসরায়েলের সামরিক বাজেটের বৃদ্ধি

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, ইরান ও গাজা পরিস্থিতির জেরে সামরিক চ্যালেঞ্জ বেড়ে যাওয়ায় ২০২৫ এবং ২০২৬ সালের জন্য ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাজেট ৪২ বিলিয়ন শেকেল (প্রায় ১২.৫ বিলিয়ন ডলার) বাড়ানো হয়েছে।

এই অর্থ দিয়ে জরুরি অস্ত্র ক্রয়সহ সামরিক খাতে প্রয়োজনীয় খরচ বহন করা হবে।

ব্লুমবার্গ জানায়, যুদ্ধের ফলে ইসরায়েলের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়েছে এবং তেল পরিশোধনাগারসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

তারা জানায়, ইসরায়েল সিরিয়া, লেবানন এবং ইয়েমেনেও সামরিক অভিযান চালাচ্ছে, যার মধ্যে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইরানি হামলা ঠেকাতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে প্রতিটি ২–৩ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ‘অ্যারো’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাপক হারে কিনছে। 4295398#

captcha