IQNA

শায়েখ মাহমুদ আলী আল-বান্না’র মৃত্যুবার্ষিকীতে আল-আযহার ও মিশরের ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

7:38 - July 21, 2025
সংবাদ: 3477740
ইকনা- আল-আযহারের ইলেকট্রনিক ফতোয়া জালালত কেন্দ্রের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং মিশরের ওয়াকফ (ধর্ম) মন্ত্রণালয় পৃথক বিবৃতি ও বার্তায় মিশরের প্রখ্যাত ক্বারি শায়েখ মাহমুদ আলি আল-বান্না’র মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।

 

আল-আযহারের ইলেকট্রনিক ফতোয়া জালালত কেন্দ্রের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং মিশরের ওয়াকফ (ধর্ম) মন্ত্রণালয় পৃথক বিবৃতি ও বার্তায় মিশরের প্রখ্যাত ক্বারি শায়েখ মাহমুদ আলি আল-বান্না’র মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।

আল-আযহার ফতোয়া কেন্দ্রের বিবৃতি
সদী আল-বালাদ পত্রিকার বরাতে ইকনার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আল-আযহারের ইলেকট্রনিক ফতোয়া কেন্দ্র তার বিবৃতিতে জানায়: “১৯৮৫ সালের এই দিনে, কুরআন তেলাওয়াতের মহান শিল্পের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, মিশর এবং বিশ্বের অন্যতম প্রখ্যাত ও অনন্য ক্বারি, শায়েখ মাহমুদ আলি আল-বান্না আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নেন। তিনি হৃদয়গ্রাহী, বিনয়ী ও প্রভাবশালী কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াতের জন্য সুপরিচিত ছিলেন।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়: “শায়েখ আল-বান্না ছিলেন কুরআন তেলাওয়াতে এক স্বতন্ত্র ধারার প্রবর্তক। তার কণ্ঠে কুরআনের যেভাবে আবৃত্তি হতো, তা ছিল একান্তই অনন্য এবং আজও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বহু অডিও রেকর্ড তার ঐশ্বর্যমণ্ডিত কণ্ঠের সাক্ষ্য দেয়। তিনি মিশরের ‘ক্বারিগণ ইউনিয়ন’ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ১৯৮৪ সালে এর প্রতিষ্ঠাকালে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।”

বিবৃতির শেষে বলা হয়েছে: “আল্লাহ শায়েখ আল-বান্নাকে তাঁর রহমত দিয়ে ঢেকে দিন, তাঁকে এবং তাঁর শ্রোতা ও ভালোবাসার মানুষদেরকে সর্বত্র ক্ষমা করুন। আমিন।”

মিশরের ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি
মিশরের ওয়াকফ মন্ত্রণালয় তার অফিসিয়াল পেজে শায়েখ মাহমুদ আল-বান্নার মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে জানায়: “তিনি ১৯৮৫ সালের ২০ জুলাই, ৫৯ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। জীবনের পুরোটা সময় তিনি কুরআনের খেদমতে উৎসর্গ করেছিলেন। কুরআন তেলাওয়াতে তাঁর কণ্ঠ ছিল বিনয় ও আবেগপূর্ণ, এবং তিনি ছিলেন এক দক্ষ ও নিখুঁত তেলাওয়াতকারী। তাঁর সেবা দেশ-বিদেশে মিশরের গর্ব বলে বিবেচিত।”

মন্ত্রণালয় যোগ করে: “আমরা এই দিনটি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি এবং আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি, যেন তিনি এ মহৎ শায়েখকে অফুরন্ত রহমত দান করেন, কুরআনের খেদমতের বিনিময়ে উত্তম প্রতিদান দান করেন, তাঁর কণ্ঠে তেলাওয়াতকে তাঁর কবরের নূর বানিয়ে দিন এবং কিয়ামতের দিনে তা তাঁর নেক আমলের পাল্লায় স্থাপন করুন।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়: “শায়েখ মাহমুদ আল-বান্না ১৯৪৮ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে মিশরের জাতীয় বেতারে অন্তর্ভুক্ত হন এবং সে সময়ের অন্যতম কনিষ্ঠ ক্বারি হিসেবে রেডিওর অফিসিয়াল অনুমোদনপ্রাপ্ত হন। তাঁর কণ্ঠ কুরআনিক ‘মাকাম’-এর বৈচিত্র্য, গভীর আবেগ এবং শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার অসাধারণ ক্ষমতার কারণে স্বতন্ত্র হয়ে ওঠে।”

ওয়াকফ মন্ত্রণালয় জানায়, “তিনি মিশরের প্রধান প্রধান মসজিদ, যেমন টান্টার আহমাদি মসজিদ এবং কায়রোর ইমাম হুসাইন (আ.) মসজিদসহ রমজানের রাত জাগরণে অংশগ্রহণ করতেন। তিনি মিশরের প্রতিনিধিত্ব করে বহু আন্তর্জাতিক কুরআন সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন, এবং তাঁর কণ্ঠ মক্কা-মদিনা, মসজিদুল আকসা, দামেশ্কের উমাইয়া মসজিদ এবং ইউরোপ ও এশিয়ার বহু বিখ্যাত মসজিদে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।”

বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়েছে: “শায়েখ আল-বান্না মিশরের কুরআন তেলাওয়াতকারীদের সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং এর সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি শৃঙ্খলা, ব্যক্তিত্ব ও অকপটভাবে কুরআনের খেদমতের এক অনন্য দৃষ্টান্ত ছিলেন।”

captcha