
মূল পরিকল্পনার সারাংশ: বাব আল-সিলসিলা, যা আল-আকসা মসজিদের প্রবেশদ্বারগুলোর অন্যতম, সেটিকে একটি “ইহুদি বসতি করিডোর” হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের উপস্থিতি হ্রাস এবং ইহুদি ধর্মীয়-জাতীয় আধিপত্য জোরদার করা হচ্ছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, এই অঞ্চলের ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের উদ্দেশ্যে "সরকারি মালিকানায়" স্থানান্তর করা হয়েছে।
সিদ্ধান্তের পেছনের রাজনৈতিক পটভূমি: এই পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছিলেন মেইর পরুশ, ইসরায়েলের প্রাক্তন মন্ত্রী (জেরুজালেম ও ঐতিহ্যবিষয়ক), যিনি সিদ্ধান্তের কিছুক্ষণের মধ্যেই পদত্যাগ করেন। পরুশ পার্লামেন্টে জানান, ১৯৬৭ সালে জেরুজালেমে ইহুদি জনসংখ্যা ছিল ৭২%, যা বর্তমানে নেমে এসেছে ৫৭%-এ। তাই ইহুদি বসতি বিস্তারের মাধ্যমে demography পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে।
পুরনো নীতির নবায়ন: ১৯৬৮ সাল থেকেই ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ 'জব্দ' নীতির আওতায় ফিলিস্তিনি সম্পত্তি দখল করে আসছে। বাব আল-সিলসিলা এলাকা, যা একসময় মাত্র ৫ ডুনাম (৫০০০ মিটার²) ছিল, তা বর্তমানে বেড়ে ১৩০ ডুনাম হয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে দখলের গতি বেড়েছে, যাতে এই সম্পত্তিগুলোকে "সরকারি সম্পত্তি" ঘোষণার মাধ্যমে পরে ইহুদি বসতি স্থাপন সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া যায়।
আইনি ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া: মারুফ আল-রিফায়ি, জেরুজালেম প্রদেশের মিডিয়া উপদেষ্টা, এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের সরাসরি হুমকি বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এই সম্পত্তিগুলোর মধ্যে অনেকেই ইসলামী ওয়াক্ফ হিসেবে নিবন্ধিত, যা ফিলিস্তিনি মুসলিম পরিবারের মালিকানায় ছিল।রিফায়ি আন্তর্জাতিক আইনি ও কূটনৈতিক পথ অনুসরণ করার ওপর গুরুত্ব দেন, যদিও তা অত্যন্ত কঠিন ও জটিল।
এই সিদ্ধান্তকে, জেরুজালেম শহরের পুরাতন অংশে ইসরায়েলি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও ফিলিস্তিনি পরিচয় মুছে ফেলার বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এটি শুধু একটি এলাকার ভূমি দখল নয়, বরং ফিলিস্তিনিদের সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক উপস্থিতি মুছে ফেলার একটি সুপরিকল্পিত ইসরায়েলি প্রকল্প। আন্তর্জাতিক মহলের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই আগ্রাসন ঠেকানো। 4295510#