
বার্তা সংস্থা ইকনা: আঞ্চলিক প্রশাসক ও মানবাধিকার কর্মীরা জানান, বৌদ্ধ বিক্ষোভকারীরা দাতব্য সংস্থা ‘রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের’ (আরআই) একটি দলকে বাস্তুচ্যুত মুসলিমদের শিবিরে যেতে দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন প্রবাসী রাখাইনদের অন্তত ১০ জন ওই দলটিতে ছিল।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাখাইন রাজ্যে গত ২৪ আগস্ট রাতে কয়েকটি সেনা-পুলিশ চৌকিতে হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে নতুন করে দমন অভিযানে নামে। এরপর গত দুই মাসে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
রয়টার্স এক খবরে বলা হয়, বিভিন্ন শহরে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ এক্টিভিস্টরা বৌদ্ধ ও মুসলমানদেরকে আলাদা করার চেষ্টা করছে। হামলার ভয় দেখিয়ে বৌদ্ধদেরকে মুসলমানদের সাথে ব্যবসা না করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। তারা মাইবুনে মুসলিমদের মধ্যে খাদ্য সহায়তা বিতরণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে দেরী করাচ্ছে এবং শুধুমাত্র তাদের প্রতিনিধির অনুমতি সাপেক্ষে খাদ্য বিতরণের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
শহরের প্রশাসক টিন শই বলেন, ‘আরআই গ্রুপের প্রতিনিধিরা ক্যাম্পে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাদের পথ অবরোধ করে। বুধবার এই ঘটনার পর ত্রাণ কর্মীরা তাদের অফিসে ফিরে যায়।’
মিয়ানমারে ‘রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের’ পরিচালক সামির মালহা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রাখাইনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা দীর্ঘদিন ধরে ত্রাণবিতরণে রোহিঙ্গাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিওকে অভিযুক্ত করে আসছে।
জাতিসংঘের কর্মীরা রয়টার্সকে বলেন, এভাবে জোরপূর্বক বিভেদ তৈরির ফলে রাখাইনে আরো বাস্তুচ্যুতি হতে পারে। নতুন করে সহিংসতা তৈরি হলে মুসলমানরা নৌকায় করে মালয়েশিয়ায় এবং থাইল্যান্ডে পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয় সংস্থা অফিসের (ওকেএইচএ) মুখপাত্র পিয়ের পেরোন বলেন, বুধবারের ঘটনাটি রাখাইন রাজ্যে মানবিক সংগঠনগুলোর মুখোমুখি হওয়া অসংখ্য বাধার সর্বশেষ উদাহরণ।
বৌদ্ধদের প্রতিবাদ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যে কোনো গোষ্ঠীর বাক স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার সম্মান করি। কিন্তু এখানে আসল সত্য হল জীবন রক্ষাকারী সহায়তা শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল মানুষের কাছে পৌঁছনোতে বাঁধা দেয়া হচ্ছে।’ আরটিএনএন