বার্তা সংস্থা ইকনা: এ ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ও অন্যায়' বলে অভিহিত করে সোমবার কাশ্মীর উপত্যকায় সর্বাত্মক বনধ পালন করছে যৌথ প্রতিরোধ নেতৃত্ব।
কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনী 'নির্বিচারে গুলি চালাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে' বলে মন্তব্য করেছেন হুররিয়াত কনফারেন্সের একাংশের প্রধান মীরওয়াইজ ওমর ফারুক।
পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ থানা এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রবিবার দিবাগত রাত ৮টা নাগাদ সোপিয়ান জেলার পোহানে ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্টে স্বাধীনতাকামীরা গুলিবর্ষণ করলে সেনাবাহিনীর পাল্টা গুলিবর্ষণে ওই নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, গুলিতে সোপিয়ানের বাসিন্দা শাহীদ আহমেদ দার নামে একজন বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। তার কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া, গাড়িতে থাকা তার তিন সহযোগীও নিহত হয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সোপিয়ান জেলার পোহানে ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্টে একটি গাড়িকে থামার জন্য বলা হলেও তা থামেনি। এসময় নিরাপত্তাবাহিনীর উপরে গুলিবর্ষণ করা হয় এবং পাল্টা গুলিতে একজন নিহত হয়।
শ্রীনগরে প্রতিরক্ষা মুখপাত্র কর্নেল রাজেশ কালিয়ার দাবি করেন, নিহত তিন যুবক ‘সন্ত্রাসীদের’ সহযোগী ছিল। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সংঘর্ষের পরে সেনারা গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে তিনজন নিহত হয়।
এছাড়া সোমবার উদ্ধার হয়েছে দুটি মৃতদেহ। আশিক হুসাইন ভাট নামে তাদের একজনের নাম লস্কর-ই তাইয়্যেবার সদস্য। ২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। নিহত অন্যজনের নাম গওহর আহমদ লোন (২৪)।
এই ঘটনার পরই সোপিয়ানে বড় ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে একে 'ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা' বলে দাবি করা হয়েছে। পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রায়নাওয়াড়ি, খানইয়ার, নৌহাট্টা, এম আর গঞ্জ, সাফা কদল, ক্রালখুদ ও মৈসুমা থানা এলাকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কাশ্মীরে আজ ট্রেন চলাচলও স্থগিত করাসহ কাশ্মীর পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে জানুয়ারি মাসে একটি বিক্ষোভ মিছিলে সেনা সদস্যদের চালানো গুলিতে তিন বেসামরিক লোক নিহত হয়। ওই ঘটনায় কাশ্মীরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ এ পর্যন্ত রবিবারের ঘটনায় কোনো এফআইআর করেনি। নিহতদের পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আরটিএনএন