IQNA

কুরআন আমার আধ্যাত্মিক যাত্রার সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছে: নওমুসলিম লজায়েন

4:50 - May 02, 2018
সংবাদ: 2605662
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকায় টুইন টাওয়ারে হামলার সময়ে মেথিলড লজায়েন ওমানের রাজধানী মাস্কটের একটি হাই স্কুলে অধ্যয়নরত ছিলেন।


বার্তা সংস্থা ইকনা: ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটিকে ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন নেতিবাচক কথা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

মেথিলড টিভি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় যা দেখেছেন তার সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারছিলেন না। তিনি জানতেন ওমান সালতানাতের মুসলিমরা অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়। অতঃপর, ফরাসি এই নারী ধর্ম সম্পর্কে জানতে তার আধ্যাত্মিক যাত্রা শুরু করেন এবং অবশেষে ইসলাম গ্রহণ করেন, যেটিকে তিনি জীবনের একটি উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

মাথিলড ফ্রান্সের মার্সেই শহরে জন্ম গ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন ওমানের মাস্কটে। সেখানে তার বাবা-মায়ের চাকরির কারণে স্বাভাবিক তাকেও তাদের সঙ্গে থাকতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘১১ সেপ্টেম্বরের হামলার সময় আমি মাস্কটের একটি স্কুলে অধ্যয়নরত ছিলাম। প্রত্যেকেরই টারগেট ছিল মুসলিমরা এবং তারা মুসলিমদের সম্পর্কে একটি নেতিবাচক চিত্র প্রচার করছিল। ওমানের মুসলমানরা খুবই সদয় এবং আন্তরিক। একারণে আমি ইসলাম সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। আমি কোরআন পড়তে শুরু করি এবং এটি আমাকে আমার আধ্যাত্মিক যাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। এটি ছিল আমার জন্য একটি বিস্ময়কর প্রকাশ।’

দুবাই ভিত্তিক বাসিন্দা মেথিলড লজায়েন নিজের ইসলামি অভিজ্ঞতা নিয়ে সম্প্রতি একটি বই লিখেছেন। বই মেলায় ‘বিগ লিটল স্টেপস’ নামের বইটি প্রচারের জন্য মেথিলড বর্তমানে আবুধাবিকে অবস্থান করছেন। বইটিতে তার জীবনের অভিজ্ঞতা এবং ইসলামের সুষম জীবনধারা এবং একটি উজ্জ্বল হৃদয় খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে গাইড লাইন প্রদান করা হয়েছে।

মেথিলড বলেন, ‘বইটিতে আমার ১৮ বছর বয়সে আমার ইসলাম গ্রহণের অভিজ্ঞতা এবং ইসলামে পরবর্তী ১৬ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বইটি একজন নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে কিভাবে ইসলামি উপায়ে জীবনযাপন করা যায় তার সবকিছু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যখন একজন নারী ইসলামকে সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করে, তখন তার জীবনযাত্রার সমন্বয় ও পরিবর্তনের জন্য সময় লাগে। এই বইটি সেইসব নারীদের জন্যও বেশ সহায়ক হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি দেখেছি যে অনেক নারী ইসলাম গ্রহণের পর বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হন। এটি তাদের ইসলামের যাত্রায় প্রাথমিক পর্যায়ে নিরুৎসাহিত করতে পারে। ইসলামে যেসব বিষয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেসব বিষয় তুলে ধরা এই বইটির উদ্দেশ্য নয়, বরং ইসলাম কিভাবে একটি পরিপূর্ণ জীবন-ব্যবস্থা তার যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে।’

ধর্মান্তরিত এই নারী বলেন, ‘দৈনন্দিন জীবনে ইসলামকে কিভাবে প্রয়োগ করা যায় তা গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হয়েছে এই বইটতে। এতে সৌন্দর্য, বিনয়, ফ্যাশন, হালাল খাবার, রোজা রাখঅর সমস্ত স্বাস্থ্যগত ও আধ্যাত্মিক উপকারের কথা বলা হয়েছে। বইটিতে নারীর অধিকার সম্পর্কে তথ্যও রয়েছে। ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছে এমন অনেক নারীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। বইটিতে বিভিন্ন সংস্কৃতি, জাতীয়তা এবং নানা বয়সী নারীর একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।’ খালিজ টাইমস অবলম্বনে

captcha