IQNA

আরো নিষেধাজ্ঞা; 'ট্রাম্পও কবরে যাবেন তবে, মাথা উঁচু করে থাকবে ইরান'

18:30 - May 31, 2018
সংবাদ: 2605882
আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যদিও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নতুন কিছু নয় এবং ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরান নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করে আসছে।

 

বার্তা সংস্থা ইকনা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পরমাণু ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইরান বিরোধী সব নিষেধাজ্ঞা ফের বলবত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই অংশ হিসেবে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় গতকাল (বুধবার) ইরানের বেশ ক'জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী ও কয়েকটি কোম্পানির কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর আগে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর তারা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইরানের আরো পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে গত ৪০ বছর ধরে আমেরিকা এভাবে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এসেছে। এসব নিষেধাজ্ঞা ও চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে আমেরিকা ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা এবং দেশটিকে নতজানু করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে এতো ষড়যন্ত্র ও শত্রুতা করেও আমেরিকা আজ পর্যন্ত কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি।

আমেরিকায় যখন যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা সবাই নিষেধাজ্ঞাকে সবসময়ই ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। আজকে এটা সবাই দেখতে পাচ্ছে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী কেউই টিকে নেই কিন্তু ইসলামি ইরান আগের মতোই নিজ অবস্থানে অটল রয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সম্প্রতি শিক্ষক সপ্তাহ উপলক্ষে হাজার হাজার ছাত্র ও শিক্ষকের এক সমাবেশে ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর দশকের পর দশক ধরে মার্কিন কর্মকর্তাদের বিরামহীন শত্রুতা ও ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, যারাই ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করেছে তাদের অনেকের হাড়গোড় আজ কবরের মধ্যে কিন্তু ইসলামি ইরান ঠিকই টিকে আছে। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শরীরও একদিন মাটির নীচে চাপা পড়বে কিন্তু তখনও ইরান মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে।

ইরানের জনগণের প্রতি আমেরিকার ক্ষোভ ও বিদ্বেষের কারণ হচ্ছে গত ৪০ বছর ধরে এই জাতির প্রতিরোধ ও আত্ম সম্মানবোধ নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা। আমেরিকার শত নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বিজ্ঞান, সামরিক ও প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান অভাবনীয় উন্নতি সাধন করেছে। পরমাণু সমঝোতা থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেরিয়ে যাওয়া থেকে ইরানের অবিশ্বাস্য উন্নতি ও অগ্রগতিতে তার ক্ষোভের প্রমাণ পাওয়া যায়।

প্রকৃতপক্ষে, আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্ষমতা ও প্রভাবকে খর্ব করতে চায় এবং এ লক্ষ্যে তারা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। মোট কথা, আমেরিকা নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইরানকে এ অঞ্চলের রাজতন্ত্র শাসিত আরব দেশগুলোর মতো একটি অনুগত দেশে পরিণত করার পায়তারা করছে।

captcha