IQNA

ট্রাম্প ক্ষমতা দেখাতে চাইলেও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তা মাটি করে দিয়েছেন

4:18 - June 07, 2018
সংবাদ: 2605928
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর নির্দেশে দেশটি ফের ব্যাপকভাবে পরমাণু তৎপরতা শুরু করতে যাচ্ছে। এ থেকে বোঝা যায়, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানও নিষ্ক্রিয় বসে থাকবে না এবং নিজের পথ চলা অব্যাহত রাখবে।

বার্তা সংস্থা ইকনা: ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান আলী আকবর সালেহি ফের পরমাণু কর্মসূচি পুরোদমে শুরু করতে তেহরানের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বলেছেন, "নাতাঞ্জ পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতা কয়েক লাখ এসডাব্লিউইউতে উন্নীত করার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এসডাব্লিউইউ হচ্ছে ইউরেনিয়াম ২৩৮ থেকে ইউরেনিয়াম ২৩৫ -কে আলাদা করার শক্তি ও গতির একক। এদিকে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএও এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি বিস্তারের পদক্ষেপ পরমাণু সমঝোতার লঙ্ঘন নয়।"

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে ইউরোপের দ্বিমুখী নীতির নানা দিক তুলে ধরে পরমাণু সমঝোতার কাঠামোয় থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতা এক লাখ ৯০ হাজার এসডাব্লিউইউতে উন্নীত করার প্রস্তুতি নিতে জাতীয় আণবিক শক্তি সংস্থার প্রতি নির্দেশ দেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এ নির্দেশে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও বিষয়টি ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পরমাণু তৎপরতা শুরুর জন্য তেহরানের উদ্যোগ থেকে বোঝা যায়, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানও চুপচাপ বসে নেই এবং পাশ্চাত্যের অব্যাহত চাপ ও নিষেধাজ্ঞার কাছে ইরান মাথা নত করবে না। এর আগেও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখার জন্য ইউরোপকে কিছু শর্তের কথা জানিয়েছিলেন। একইসঙ্গে তিনি পরমাণু তৎপরতা শুরুর ঘোষণা দেয়ায় এ ব্যাপারে ইরানকে নিষ্ক্রিয় ও দুর্বল করার মার্কিন চক্রান্ত কার্যত ভেস্তে গেছে।

ইরান এখনো পরমাণু সমঝোতায় অটল থাকায় দেশটি তার সৎ মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে। তবে এর অর্থ এ নয় যে, একতরফা ও ত্রুটিযুক্ত পরমাণু সমঝোতা ইরান মেনে নেবে। এ ছাড়া, পরমাণু সমঝোতা ও নিষেধাজ্ঞা একসঙ্গে চলতে পারে না বলে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন। ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাহদি ফাজায়েলি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসলে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে তিনি নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন ও কৃতিত্ব নিতে চেয়েছিলেন। অর্থাৎ ট্রাম্প প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন তিনি যা কিছু বলবেন তাই হবে। কিন্তু ইরানের সর্বোচ্চ নেতা পরমাণু সমঝোতার আওতায় থেকে পরমাণু কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেয়া থেকে বোঝা যায় ইরানও কোনো অংশে কম যায় না।

বাস্তবতা হচ্ছে, আমেরিকাকে ছাড়া পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখতে হলে ইউরোপকে অবশ্যই আমেরিকা ও ইসরাইলের চাপ উপেক্ষা করে স্বাধীন নীতি গ্রহণ করতে হবে। পরমাণু সমঝোতার প্রতি ইউরোপের কেবল লোক দেখানো সমর্থন দিলেই চলবে না এবং এটা ইরানের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে না। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইউরোপের কয়েকজন নেতার অসৎ মনোভাবের বিষয়টি ভালোভাবে অবহিত হওয়ার কারণে পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখতে বেশ কিছু শর্তের কথা জানিয়েছেন।

তিনি ইউরোপকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার পাশাপাশি দেশটির পরমাণু কর্মসূচির ওপর সীমাবদ্ধতা বজায় রাখার ইউরোপের স্বপ্ন কোনোদিনই বাস্তবায়িত হবে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ইরান পরমাণু সমঝোতা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবে বলে তিনি ইউরোপকে সতর্ক করে দেন। পার্সটুডে

captcha