বার্তা সংস্থা ইকনা: আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, শনিবার কঠোর নিরাপত্তা মধ্যে কোলনে শহরে নবনির্মিত মসজিদটি উদ্বোধন করেন তুর্কী প্রেসিডেন্ট। এর মধ্য দিয়ে তিনি ৩ দিনব্যাপী জার্মানী সফরের ইতি টানেন।
তবে কোলনে শহরে এরদোগানের আগমণ উপলক্ষ্যে বিক্ষোভ দেখিয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ। তারা তুরস্কের মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘু কুর্দীদের প্রতি সরকারের আচরণের প্রতিবাদ জানান।
একই সময় তুর্কী প্রেসিডেন্টের সমর্থনেও হাজার হাজার তুর্কী অভিবাসী রাজপথে অবস্থান নেন। তারা এরদোগানের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এরদোগান জার্মানিতে তিন দিন অবস্থান করেন।
এ সময়ে তিনি দুই দফা চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বিপাক্ষিক এ বৈঠকে উভয় দেশের সরকার প্রধান পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারে ঐক্যমত প্রকাশ করেন। তবে তুরস্কের নাগরিক অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে জার্মানির উদ্বেগের কথা জানান মার্কেল। বিপরীতে জার্মানির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগ এনেছেন এরদোগান।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান তার তিন দিনের জার্মানি সফর শেষ করেন তুর্কি অধ্যুষিত কোলনে শহর ভ্রমণের মাধ্যমে। এরদোগানের কোলনে শহরের সফরের খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরটির কুর্দি লোকজন সহ শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন।
এরদোগান শনিবার জার্মানিতে তার সফর শেষে একে ‘সফল’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন- ‘জর্মানির কর্মকর্তাদের সাথে আমাদের দুইদিনের বৈঠকের পর তুর্কি এবং জার্মানির মধ্যকার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়েছে।’
তিনি তার এই সফরকে দেশ দুটোর মধ্যকার দুই বছর ধরে চলমান উত্তেজনার উপশমকারী হিসেবে বর্ণনা দেন। তার এই সফর বার্লিনের সাথে আঙ্কারার কূটনৈতিক অচলাবস্থা গলাতে সহায়তা করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো যুক্ত করে বলেন- ‘তুরস্ক এবং জার্মানির মধ্যকার মতপার্থক্যকে ভুলে যৌথ স্বার্থে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’
শনিবার এরদোগান জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের শহর কোলনে সফর করেন এবং সেখানে তিনি ইউরোপের সর্ব বৃহত্তম মসজিদের উদ্বোধন করেন। এই মসজিদটি নির্মাণ করেছে তুর্কি-জার্মান ইসলামিক সংগঠন বা DITIB যা তুর্কি অর্থায়নে পরিচালিত।
মসজিদটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এরদোগান আগত অতিথিদের উদ্দেশ্যে করে বলেন- ‘একটি খারাপ পরিস্থিতিতে জার্মানিতে আমাদের সফর খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে।’, ‘আমি জোর দিয়ে বলছি যে, আমাদের মধ্যকার বিভেদ ভুলে এখন দরকার যৌথ উদ্যোগে সামনে এগিয়ে চলা।’
এরদোগান কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপর আরো কঠোর হওয়ার জন্য জার্মানির প্রতি আহ্বান জানান। জার্মানির সরকার কর্তৃক আয়োজিত শুক্রবার রাষ্ট্রীয় এক মধ্যাহ্নভোজে এরদোগান জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টারকে বলেন- ‘জার্মানিতে এখনো হাজার হাজার কুর্দি সন্ত্রাসী বসবাস করছে।’
প্রসঙ্গত, কুর্দিস্তান ওয়ার্কস পার্টি(PKK) নামক সংগঠনটিকে তুরস্কের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্ত্রাসী হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছে।
এরদোগান আরো বলেন, ‘ফুটবল খেলোয়াড় মেসুত ওজিলকে জার্মানির ফুটবল ফেডারেশন জোরপূর্বক অবসরে যেতে বাধ্য করেছে কারণ তিনি একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়।’
এরদোগান জার্মানির প্রতি দ্বৈত নাগরিকত্বকে সম্মান জানাতে আহ্বান জানিয়ে বলেন- ‘এ সকল বর্ণবাদের অবশ্যই অবসান ঘটানো দরকার।’
iqna