IQNA

মহানবীর কার্টুনের প্রতিবাদে ফরাসি পণ্য বর্জন করছে পাকিস্তান

0:02 - November 18, 2020
সংবাদ: 2611828
তেহরান (ইকনা): পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে কয়েক হাজার মানুষ ফ্রান্সের ইসলামবিরোধী মনোভাবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন। এসময় তারা দেশটিতে ফ্রান্সের দূতাবাস বন্ধ, রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার এবং প্যারিসের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে। মঙ্গলাবার (১৭ নভেমম্বর) এ বিক্ষোভে ইসলামাবাদের প্রধান কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়।

দেশটির ইসলামিক রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) গতকাল সোমবার থেকে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট আকারে আন্দোলন শুরু করে এবং বিভিন্নভাবে আন্দোলনে যোগদানের জন্য সাধারণ মানুষকে একত্রিত করতে থাকে। তাদের প্রচারণার একদিন পর মঙ্গলবার হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।

এতে পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি টিয়ার গ্যাসসহ লাঠি চার্জ ও জল কামান ব্যবহার করলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আন্দোলনের ব্যপকতা রাওয়ালপিন্ডি থেকে ফাইজাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত হলে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বলে জানায় কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান সরকার কিছু সময়ের জন্য মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে দেশটির শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো আন্দোলনের খবর প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় আল-জাজিরা।

পাকিস্তানের কট্টর ইসলামিক রাজনৈতিক দল টিএলপি এর নেতা খাদিম হুসাইন রিজভি এ আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইম অব ইন্ডিয়া। এ আন্দোনলের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়্যাল ম্যাক্রোর ইসলাম বিদ্ধেষ, ফ্রান্সের একটি গণমাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সাঃ)কে অবমানণা করে কার্টুন প্রদর্শনি এবং পরবর্তিতে রাষ্ট্র ফ্রান্সের ইসলাম বিরোধী নানা কর্মকাণ্ড।

ফ্রান্সের এ মনোভাবের কারণে তুরস্ক, পাকিস্তানসহ আরব দেশগুলোতে ব্যপক বিক্ষোভ ও সমালোচনার মুখে পড়েন ম্যাক্রো। তবে ম্যাক্রোর ইসলাম বিরোধী এ মনোভাবের কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ইসলাম বিরোধী মনোভাব সম্পন্ন ফরাসিদের ভোট নিজের পক্ষে আনতেই ম্যাক্রো ধর্মের মতো স্পর্ষকাতর বিষয় সামনে নিয়ে এসেছেন।

এ বছরের অক্টোবরে ফ্রান্সের একজন শিক্ষক তার শিক্ষার্থীদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ)এর কার্টন প্রদর্শণ করেন শ্রেণি কক্ষে। এবং এটিকে সাধারণ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন। যার প্রতিবাদে তারই একজন ১৮ বছরের শিক্ষার্থী রাশিয়ান বংশদূত চেচনিয়ান জাতির অন্তরভূক্ত কিশোর তাকে গলা কেটে হত্যা করেন। এর পর গোটা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সে খবর। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি অবস্থানের। তবে ওই কিশোরের কর্মকাণ্ডকে ইসলামিক চিন্তাবিদরা সমর্থন না দিলেও ফ্রান্স সরকারের ইসলাম বিরোধী মনোভাব এবং তার চর্চার সমালোচনা করেছেন।

ম্যাক্রো এ ঘটনার পর ইসলাম বিরোধী আরো নানা মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে দেশটিতে বসবাসরত মুসলিম মনিউনিটি ও মসজিদে ব্যপক ধড়পাকড় শুরু করেন। বন্ধ করে দেয়া হয় উল্লেখ যোগ্য হারে মসজিদ। যার প্রেক্ষিতে কাতার, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানেও শুরু হয়েছে এ আন্দোলন।
সূত্র:somoynews

captcha