IQNA

দুই নওমুসলিম নারীর প্রথম রোজার অভিজ্ঞতা

16:37 - May 09, 2021
সংবাদ: 2612754
তেহরান (ইকনা): মুসলিম পরিবারে জন্ম যাদের তাদের কাছে প্রথম রোজার অভিজ্ঞতা বললে শৈশবে রাখা রোজার স্মৃতি মনে পড়ে। কেননা পাঁচ-ছয় বছর থেকে অনেক পরিবারে শিশুদের রোজা রাখায় অভ্যস্ত করা হয়। অর্ধদিন, এক দিন বা দুই দিন করে শিশুরা রোজা রাখার চেষ্টা করে।

কিন্তু একজন নওমুসলিমের প্রথম রোজার অভিজ্ঞতা হয় ভিন্ন রকম, তাঁর প্রথম রোজার অনুভূতিও ব্যতিক্রম। তেমন দুই নওমুসলিম নারীর প্রথম রোজার অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হলো।

নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী বাসকালা ২০১৮ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন। একজন বিমানবালা হিসেবে তাঁর জন্য রোজা রাখা বেশ কঠিন ছিল। তদুপরি তিনি কয়েক দিন বাদে পুরো রমজান রোজা রেখেছেন। বাসকালা বলেন, ‘আমার রোজার প্রথম বছরটি খুবই কঠিন ছিল। তখন আমি নেদারল্যান্ডসে বসবাস করি। পেশায় একজন বিমানবালা হিসেবে কাজ করছিলাম। তাই বেশির ভাগ সময় দীর্ঘ বিমানযাত্রায় থাকতে হতো। অতঃপর কোনো বিমানবন্দরে বিমান অবতরণ হলেও ততক্ষণে হোটেলও বন্ধ হয়ে যেত। ফলে সাহরির সুযোগ হতো না। আলহামদুলিল্লাহ! এর পরও প্রায় পুরো মাস রোজা রেখেছিলাম।’

রোজার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাসকালা আরো বলেন, ‘আমি একটি ক্যাথলিক স্কুলে পড়তাম। সেখানকার মুসলিম সহপাঠীদের রমজান মাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে বহু কিছু জানতে পারি। প্রথম দিকে খাবার ও পানীয় সম্পূর্ণ পরিহার করে সারা মাসের দিনের বেলা কাটানো আমার কাছে খুবই কঠিন মনে হয়। কারণ তখনো ইসলাম সম্পর্কে আমার অন্তরে কোনো ধারণা ছিল না।’

নিজের জীবনের মোড় পরিবর্তনের ঘটনা সম্পর্কে বাসকালা বলেন, ‘বর্তমান স্বামীর সঙ্গে তখন আমার পরিচয় হয়। ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে তার সঙ্গে আমি আলাপ করি। এ সময় সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে বলল, তারা মুসলিম হিসেবে বড় হবে। তখন থেকে আমি ইসলাম বিষয়ে জানতে পড়াশোনা শুরু করি, কোরআন পাঠ করি। নিত্যনতুন বৈজ্ঞানিক বিষয়াবলি জানতে পেরে অভিভূত হই। কোরআনে বর্ণিত দুই সমুদ্রের মিলন ও উভয়ের মধ্যে অদৃশ্য বাঁধের কথাটি পড়ে খুবই অবাক হই। এর আগে কখনো তা নিয়ে এত গভীর চিন্তা করিনি। তা ছাড়া সুরা আল-হাদিদ আমার মধ্যে প্রবল প্রভাব বিস্তার করে।’

আমেরিকার মেক্সিকোর বাসিন্দা মারিয়া বলেন, ‘মুসলিম হওয়ার পর প্রথম বছর থেকেই আমি রোজা রাখছি। আমার জন্য রোজা রাখা খুবই সহজ ছিল। রোজার কল্যাণের বিষয়ে আমার দৃঢ়বিশ্বাস ছিল। তাই আমি সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম।’ নিজের ইসলাম গ্রহণের কথা উল্লেখ করে মারিয়া বলেন, ‘রোজা রাখা নিয়ে আমার কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না। কিন্তু পরিবার আমাকে একজন মুসলিম হিসেবে গ্রহণ করবে কি না, তা নিয়ে খুবই হতাশাগ্রস্ত ছিলাম।’

রোজা রাখা নিয়ে মারিয়া আরো বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে রোজা রাখা কঠিন নয়। তাই মুসলিম হওয়ার পর প্রথম দিন থেকেই রোজা রাখা শুরু করি। শুরুতে একজন মুসলিম নারী হিসেবে হিজাব পরায় আমি অভ্যস্ত ছিলাম না; কিন্তু ধীরে ধীরে তা শুরু করি। তবে প্রথম বছর থেকে রোজা রেখেছি। মুসলিম হওয়ার আট মাসের মধ্যে আমার মেয়েরাও ইসলাম গ্রহণ করে।’ আলজাজিরা

captcha