সেব্রেনিৎসায় বর্বর সার্ব বাহিনী হাজার হাজার বসনিয়ান মুসলমানকে পাশবিক কায়দায় হত্যা করেছে। এই গণহত্যার ঘটনা বলকান অঞ্চলের জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঘৃণা ছড়িয়ে দেয়ার উৎস হিসেবে যেমন ব্যবহার করা উচিত নয় তেমনি ওই নৃশংস ঘটনা কখনো ভুলে যাওয়াও উচিত হবে না।
১৯৯৫ সালের ১১ জুলাই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের সামনে এই গণহত্যা চালানো হয়। এই পাশবিক হামলায় নারী, পুরুষ, শিশু এবং বৃদ্ধসহ ৮ হাজারেরও বেশি বসনিয় মুসলমানকে হত্যা করা হয়।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর এটি ছিল ইউরোপে সংঘটিত সবচেয়ে বড় গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান। ডাচ শান্তিরক্ষীদের নিষ্ক্রিয়তার মুখে ও গ্রীক সেচ্ছাসেবী বাহিনীর সহায়তায় সার্বরা এই গণহত্যা চালায়।
তারা ৩০ হাজার বসনীয় মুসলমানকে তাদের ঘরবাড়ি থেকেও বিতাড়িত করে। সার্বরা ১৯৯৫ সালের জুন মাসে জাতিসংঘের রক্ষীদের কোনো বাধা বা প্রতিক্রিয়া ছাড়াই সেব্রেনিৎসা ও জেপা শহর দখল করে নেয়।
জাতিসংঘের ৮১৯ নম্বর প্রস্তাবে অনুযায়ী সেব্রেনিৎসা শহরটি নিরাপদ অঞ্চল বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সার্বরা শহরটি দখল করে সেখানকার হাজার হাজার বেসামরিক মুসলমানকে হত্যা করে ও হাজার হাজার নারীকে ধর্ষণ করে। নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তাদের বেশিরভাগই ছিল বৃদ্ধ ও যুবক। রাতকো মিলাদিচের নেতৃত্বাধীন বর্বর সার্ব বাহিনী এই গণহত্যা চালায়।
গতকাল (রোববার) বসনিয়ার মুসলমানরা দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে দিবসটি পালন করেন। তারা নতুন করে খুঁজে পাওয়া সেব্রেনিৎসা গণহত্যার শিকার ১৯ জনের দেহাবশেষ পুনরায় দাফন করেন।
এদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ, দু’জন তরুণ ও একজন নারী। তাদের দেহাবশেষ সেব্রেনিৎসা এলাকার গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয় এবং সম্প্রতি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। নতুন করে খুঁজে পাওয়া দেহাবশেষগুলো সেব্রেনিৎসা গণহত্যার বার্ষিকীতে প্রতি বছর ১১ জুলাই পুনরায় দাফন করা হয়।iqna