শাহ মাহমুদ কোরেশি গতকাল তেহরানে এসে ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রায়িসি এবং নয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে কথা বলেন। আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতার ব্যাপারে এবং সেদেশে সকল গোত্র ও দলের সমন্বয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন বিষয়ে পাকিস্তান ও ইরানের অবস্থান অভিন্ন।
এই কাঠামোর ভিত্তিতে ইব্রাহিম রায়িসি শাহ মাহমুদ কোরেশির সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন: আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সেদেশের সকল সকল দল ও গোত্রের মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য আমেরিকার চলে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনে প্রতিবেশি দেশগুলোর সহায়তার ওপরও গুরুত্ব দেন প্রেসিডেন্ট রায়িসি। আফগান সমস্যা সমাধানে দুই প্রতিবেশি দেশ ইরান ও পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আফগানিস্তানের বিভিন্ন দল, গোত্র ও গোষ্ঠির মধ্যে আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং তাদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তেহরান-ইসলামাবাদের ভূমিকার বিষয়টি অনস্বীকার্য। অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এই ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কোরেশি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। জনাব কোরেশি ওই সাক্ষাতে আব্দুল্লাহিয়ানকে ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন আহ্বানের প্রস্তাব দিয়েছেন। ইরান ওই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে।
আফগানিস্তানে আমেরিকার সেনাদের বিশ বছরের উপস্থিতির অভিজ্ঞতা থেকে প্রমাণ হয়েছে কোনো দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিদেশি সেনারা নিশ্চিত করতে পারে না। বরং আঞ্চলিকভাবেই শান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়টি সম্ভব হতে পারে। ইরানের সঙ্গে আফগানিস্তানের ভাষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার দিক থেকে মোটামুটি মিল রয়েছে। এ কারণেই কাবুল পরিস্থিতির ওপর ইরানের দৃষ্টি সবসময়ই ছিল এবং আছে। ইরান তাই মনে করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের মধ্যেই আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ রয়েছে।
শাহ মাহমুদ কোরেশিও প্রেসিডেন্ট রায়িসির সঙ্গে আলাপকালে এই দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থনে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন: আঞ্চলিক পরিস্থিতির ওপর ইরানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সুতরাং পাকিস্তান ও ইরান যৌথভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। আর সেটা সম্ভব হলে আফগানিস্তানে একটি নয়া রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হবে এবং সেদেশের জনগণ শান্তি ও নিরাপত্তার ছায়ায় আশ্রয় নিতে পারবে। iqna