
পাকিস্তানে ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে এটাই সর্বশেষ হত্যাকাণ্ড বলেও জানিয়েছে পুলিশ। নিহত ওই স্কুলশিক্ষিকার নাম সফুরা বিবি। তিনি খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের জামিয়া ইসলামিয়া ফালাহুল বিনাত মাদরাসার শিক্ষিকা ছিলেন।
এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সগির আহমেদ বলেন, দুই ছাত্রী ও এক শিক্ষিকা মিলে মাদরাসার প্রধান ফটকে সফুরা বিবির ওপর ছুরি ও লাঠি দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তারা ছুরি দিয়ে গলাকেটে সফুরা বিবির মৃত্যু নিশ্চিত করে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন আসামি ওমরা আমান একই মাদরাসার শিক্ষিক। তিনি ওই মাদরাসায় অধ্যয়নরত তার দুই ভাগ্নিকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।
আরেক পুলিশ কর্মকর্তা আজিম খান জানান, হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া দুই শিক্ষার্থী জানিয়েছে, তাদের এক আত্মীয় স্বপ্নে দেখেছেন নিহত সফুরা বিবি নবী মোহাম্মদকে (স.) নিয়ে কটুক্তি করেছেন। তাই তারা তাকে হত্যা করেছেন।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মহিলার সঙ্গে ওমরা আমানের কোনো ব্যক্তিগত ক্ষোভ ছিল কিনা সেটি তারা খতিয়ে দেখছেন।
সমালোচকরা বলছেন, পাকিস্তানের মাদরাসাগুলোতে কট্টরপন্থী ধর্মীয় শিক্ষকরা লাখ লাখ অসচ্ছল শিশুর মগজ ধোলাই করে থাকতে পারেন। এতে করে সেখানকার শিক্ষার্থীরা গণিত ও বিজ্ঞানের মতো মূল বিষয়গুলোকে সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
পাকিস্তানের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, দেশটিতে ধর্ম অবমাননা বিষয়ক আইনগুলো প্রায়ই ব্যক্তি প্রতিহিংসার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
গত বছর, পাকিস্তানের একটি কারখানায় ম্যানেজার পদে কর্মরত এক শ্রীলঙ্কানকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা পিটিয়ে হত্যা করে এবং তার মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে সেন্টার ফর সোশ্যাল জাস্টিস। সংস্থাটির মতে, গত বছর পাকিস্তানে কমপক্ষে ৮৪ জনের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয় এবং একই অভিযোগে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
পাকিস্তানে ধর্মীয় যেকোনো বিষয়কে অত্যন্ত সংবেদনশীল হিসেবে দেখা হয়। দেশটিতে ইসলাম ধর্ম নিয়ে সামান্যতম অবমাননার ঘটনা ঘটলেও এর বিরুদ্ধে তুমুল প্রতিবাদ হয়। সেখানে ধর্মনিন্দাকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে দেখা হয় এবং এর জন্য দায়ীদের পিটিয়ে মেরে ফেলার জন্য উসকানিও দেওয়া হয়।