IQNA

নারীদের সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

0:03 - July 26, 2022
সংবাদ: 3472184
তেহরান (ইকনা): ইসলাম সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচারের মাধ্যমে নারীদের দুর্বল ও অক্ষম চরিত্রের ইমেজ প্রবর্তন করেছে, অথচ ইসলাম ধর্মে নারীদের উচ্চ চরিত্র ও অবস্থান এবং সম্মান করা হয়।  ইসলাম ধর্মে মোটেও নারীদের দুর্বল চরিত্র হিসেবেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি বরং কখনও কখনও পুরুষদের তুলনায় তাদের উচ্চ পদও দেওয়া হয়েছে।

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে নারী ও পুরুষ উভয়েই মানুষ এবং তাকওয়া ব্যতীত আল্লাহর দৃষ্টিতে তাদের কারোরই অন্যের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব নেই। কারণ পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন:
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত, যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন।
সূরা হুজরাত, আয়াত: ১৩। 
নৈতিক মূল্যবোধ, বিশ্বাস, উপযোগী জ্ঞান, প্রজ্ঞা, উত্তম চরিত্র, ধৈর্য ও সহনশীলতা এবং এর মতো বিষয়গুলো তাকওয়ার উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে যেগুলো প্রত্যেক নারীর নিজেকে এই গুণগুলোর মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। মহান আল্লাহর নিকট যেসকল নারী ও পুরুষের এই গুণাবলী রয়েছে, তারাই শ্রেষ্ঠ ও অধিক সম্মানিত এবং দুনিয়া ও আখেরাতের পুরস্কার তার জন্য রয়েছে।
এ ব্যাপারে সূরা নাহালে বলা হয়েছে: 
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
নর হোক অথবা নারী যে কেউ সৎকর্ম করে এবং সে বিশ্বাসী হয়, আমরা তাকে পবিত্র (অনাবিল) জীবন দান করব এবং অবশ্যই আমরা তাদেরকে তারা যে উত্তম কর্ম সম্পাদন করত তদনুযায়ী প্রতিদান দেব।
সূরা নাহল, আয়াত: ৯৭। 
জীবন ব্যবস্থাপনায় ইসলাম নারী-পুরুষের পার্থক্য করে না। ইসলাম নারীদেরকে তাদের কাজ এবং জীবন পদ্ধতি পছন্দের ক্ষেত্রে স্বাধীন বলে মনে করে এবং তারা তাদের নিজেদের কাজ ও প্রচেষ্টার ফলাফলের মালিক; ইসলাম ধর্মে ঠিক যেভাবে পুরুষদেরকে স্বাধীন ও তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার মালিক হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে, ঠিক তেমন ভাবে নারীদেরকেও স্বাধীন ও তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার মালিক হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে: 
وَلَا تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللَّهُ بِهِ بَعْضَكُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ لِلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِمَّا اكْتَسَبُوا ۖ وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِمَّا اكْتَسَبْنَ ۚ وَاسْأَلُوا اللَّهَ مِنْ فَضْلِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
 
এবং আল্লাহ যে কারণে তোমাদের একজনকে অপরের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন, তার আকাঙ্ক্ষা কর না; পুরুষদের জন্য সেই অংশ যা তারা অর্জন করেছে এবং নারীদের জন্য সেই অংশ যা তারা লাভ করেছে; এবং তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে কামনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।
 
সূরা নিসা, আয়াত: ৩২।
 
অতএব, নারী ও পুরুষের সৃষ্টি ও প্রকৃতি ব্যতীত একে অপরের সাথে কোন পার্থক্য নেই। এই পার্থক্যের ভিত্তিও পুরুষ ও নারীর সৃষ্টি ও প্রকৃতিতে নিহিত এবং এটা স্পষ্ট যে মানুষের সুখ তার সৃষ্টি ও প্রকৃতির সাথে তার কর্ম ও আচরণের উপর নির্ভর করে, কারণ মহান আল্লাহ বলেছেন: 
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا فِطْرَتَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
সুতরাং তুমি সত্যের প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে তোমার মুখ (সমগ্র অস্তিত্ব) ধর্মের প্রতি নিবদ্ধ কর; আল্লাহর সেই প্রকৃতি যার ওপর তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহর সৃষ্টিতে কোন পরিবর্তন নেই; এটাই সরল ও প্রতিষ্ঠিত ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ অবগত নয়।
সূরা রূম, আয়াত: ৩০।

4069930

 

captcha