ইকনা- অনুরাধা রায় ‘বদনখানি মলিন হলে’ (২১-২) প্রবন্ধে ঠিকই বলেছেন, আজ বাংলা ভাষার দুর্দিন। মাতৃভাষা বাংলা এখন অযত্নে, অনাদরে মলিন, বিবর্ণ। কাজের ভাষা (প্রাবন্ধিকের মতে ক্ষমতার ভাষা, আমি সহমত নই) ইংরেজি ও হিন্দির পাশে সে ব্রাত্য। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে, মায়ের বদন মলিন দেখেও নয়নজলে আজ আমাদের বুক ভাসে না।
মন্তব্য:
বেনিয়া সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের দিকনির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় কোলকাতার হিন্দুত্ববাদী গোঁড়া হিন্দু দাদাবাবু ও সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতরা ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে ১৮০০ সালে সর্বসাধারণের কাছে বোধ্য তদ্ভব- আরবী -ফারসী-দেশী শব্দ বহুল চলিত বাংলার স্থলে তদ্ভব-সংস্কৃত শব্দ বহুল কৃত্রিম পণ্ডিতী বাংলার প্রবর্তন করে এবং রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য ও পৃষ্ঠপোষকতায় এই ভাষা প্রচলিত ও চলিত সবার বোধগম্য বাংলাকে দোভাষা, পুঁথির বাংলা,ছোটলোক, অশিক্ষিত,অভদ্র,চাষা-ভূষাদের বাংলা বা মুসলমানী বাংলা ও ন্যাড়াদের ভাষা আখ্যা দিয়ে দূরে হটিয়ে দিয়ে শিক্ষা,শিল্প-সাহিত্য ও সরকারি কাজকর্মের মাধ্যম এবং আনুষ্ঠানিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। আজ পশ্চিম বঙ্গ বা পশ্চিম বাংলায় ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ শাসকদের আনুকূল্য ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত কলিকাতার হিন্দুত্ববাদী , ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী দাদাবাবু ও গোড়া হিন্দু সংস্কৃত পণ্ডিতদের সৃষ্ট কৃত্রিম পণ্ডিতী বাংলার অবস্থা ভালো নেই এবং বর্তমান কালে তা দুর্দশা গ্রস্ত। আর হিন্দী ইংরেজির আধিপত্যে আজ এ ভাষার প্রচণ্ড দুর্দিন !!!
মনে হয় দাদাবাবুরা পুঁথির বাংলাকে হটিয়ে ও বিতাড়িত করে যে মস্ত বড় ঐতিহাসিক ভুল করেছিল সেটার আজ তারা মাশুল ( মাশূল মহাশূল)দিচ্ছে কড়ায় গণ্ডায় ও হাঁড়ে হাঁড়ে।
ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান