IQNA

ফিলিস্তিনি মসজিদে মাইকে আযান বন্ধের পদক্ষেপ, আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন

0:48 - November 15, 2016
সংবাদ: 2601952
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলি মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনি মসজিদগুলোর মাইকে আজান দেয়া বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে একটি খসড়া বিল প্রস্তুত করেছে। সংসদে উগ্র প্রতিনিধিদের উদ্যোগে এ বিল প্রস্তুত করা হয়েছে। ইসরাইলি মন্ত্রিসভা বিলটি অনুমোদন করার পর এটিকে চূড়ান্ত ভোটাভুটির জন্য পার্লামেন্টে পাঠানো হবে।
ফিলিস্তিনি মসজিদে মাইকে আযান বন্ধের পদক্ষেপ, আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন
পার্সটুডের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: বিলটি আইনে পরিণত হলে আল আকসাসহ ফিলিস্তিনিদের কোনো মসজিদে মাইকে আযান দেয়া সম্ভব হবে না এবং মাইকে আজান দেয়ার অপরাধেইসরাইলের পুলিশ মসজিদের মুয়াজ্জিনকে জেরা করতে পারবে এবং শাস্তি হিসাবে তার জন্য জেল-জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। উচ্চস্বরে আজান প্রচারের ফলে সাধারণ মানুষ 'বিরক্ত' হচ্ছে-এমন অজুহাতে ইসরাইলের মন্ত্রিসভা মাইকে আযান বন্ধের এ পদক্ষেপ নিল। এদিকে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি মসজিদগুলোর মাইকে আজান দেয়া বন্ধ করে ইসলাম বিরোধী ওই খসড়া বিলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের একই সঙ্গে ইসরাইলি মন্ত্রিসভার উগ্র প্রতিনিধিরা মসজিদে মাইকে আযান বন্ধের এ পদক্ষেপ নিল। ইসরাইলের উগ্রপন্থীরা ট্রাম্পের বিজয়কে স্বাগত জানিয়েছেন। ট্রাম্পও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিব থেকে সরিয়ে ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসে স্থানান্তর করা হবে। অর্থাৎ বায়তুল মোকাদ্দাসই হবে ইসরাইলের রাজধানী।

এ অবস্থায় ইসরাইলি মন্ত্রিসভার বৈষম্যমূলক আচরণ এবং ওই অঞ্চলে ইসলামী মূল্যবোধ ও ঐতিহ্য ধ্বংস করার যে নীতি গ্রহণ করেছে তা ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিগুলো আগাম বাস্তবায়নের পদক্ষেপ মাত্র যা কিনা ফিলিস্তিনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়েছে। ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস জানিয়েছে, ইসরাইলের উগ্র মন্ত্রিসভা আল আকসা মসজিদসহ ফিলিস্তিনের মসজিদগুলোতে মাইকে আযান দেয়া নিষিদ্ধ করে যে খসড়া বিল প্রস্তুত করেছে তা অত্যন্ত বিপদজনক এবং এটা ওই অঞ্চলে ইসলামী ঐতিহ্য ধ্বংসের ইসরাইলি পদক্ষেপেরই অংশ।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো এর আগে ঘোষণা করেছিল আল আকসা মসজিদের সঙ্গে ইসরাইল বা ইহুদিদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এর মালিক কেবল মুসলমানরা। ঠিক এর পরই ইসরাইলের মন্ত্রিসভা মসজিদ থেকে মাইকে আযান বন্ধ করে দেয়ার এ পদক্ষেপ নিল। ইউনেস্কোর ওই বক্তব্যের পর আল আকসা মসজিদে আযান বন্ধে ইসরাইলের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দখলদার ইসরাইল এ ন্যক্কারজনক পদক্ষেপ নিয়ে তারা মূলত সমগ্র মুসলিম উম্মার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সমাজের দ্বিমুখী নীতির কারণে দখলদার ইসরাইল আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আল আকসা মসজিদে আযান দেয়া বন্ধের অর্থ হচ্ছে সারা বিশ্বের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধ শুরু করেছে ইসরাইল। এ অবস্থায় আল আকসা মসজিদ রক্ষায় এগিয়ে আসা সব মুসলমানের দায়িত্ব। 

captcha