IQNA

ইতিবাচক দৃষ্টিতে মুসলিম নারীদের সম্পর্কে যা বলতে চেয়েছি: দিনা টার্কিয়া

23:17 - January 28, 2018
সংবাদ: 2604911
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফ্যাশন শিল্প যখন কোনো বৈচিত্র্য উদযাপন করে, তখন তা সমগ্র পৃথিবীকেই আলোড়িত করে।

ইতিবাচক দৃষ্টিতে মুসলিম নারীদের সম্পর্কে যা বলতে চেয়েছি: দিনা টার্কিয়া

বার্তা সংস্থা ইকনা: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হালিমা অ্যাডেনের মতো মুসলিম ধর্মের মডেলরা হিজাব পরিধানের মাধ্যমে গৎবাঁধা ধ্যান-ধারণাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে হিজাবও একটি মার্জিত এবং ফ্যাশনেবল পোশাক হতে পারে।

২০ বছর বয়সী মার্কিন মুসলিম মডেল হালিমা গত বছরের শুরুতে নিউইয়র্ক ফ্যাশন সপ্তাহ উপলক্ষে রানওয়েতে হাঁটার পর আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের পোশাকের প্রতিটির সঙ্গে হিজাব পরে তিনি সবার নজরে আসেন।

গত আট বছরে মিশরীয় মুসলিম নারী ব্লগার দিনা টার্কিয়া তার সৃজনশীলতার জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে একটি আউটলেট হিসেবে ব্যবহার করছেন এবং ‘বিনয়ী ফ্যাশন’ সম্পর্কে বিশ্ববাসীর কাছে সচেতনতা ছড়িয়ে দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ইন্টাগ্রামে’ তার কয়েক লাখ অনুসারী রয়েছে এবং ইউটিউবে সাত লাখেরও বেশি গ্রাহক রয়েছে।

এটি বলে রাখা ভাল যে ফেসবুক পেজ চালু হওয়ার পর থেকেই টার্কিয়া এই মাধ্যমটিতে বেশ প্রভাব ফেলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি নিজের তৈরি পোশাক পরে কয়েকটি মডেলিং ছবি শেয়ার করার পর থেকেই তিনি সবার নজরে পড়েন।

মুসলিম নারীদের আধুনিক ফ্যাশনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সচেতন করে তোলার আবেগ থেকেই তিনি মার্জিত স্ট্যাইলিশ পোশাকের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

‘দ্য ইন্ডিপেন্ডন্ট’কে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই হতাশ ছিলাম যে মুসলিম নারীদের স্ট্যাইলিশ পোশাকের কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না। তারা সবসময় একঘেঁয়েমি পোশাক পরিধান করত; যা নেতিবাচক দ্যোতনার সৃষ্টি করত।’

‘মার্জিত ফ্যাশন’ সম্পর্কে টার্কিয়া ব্যাখ্যা করেন যে, যারা নিজেদের শরীরের ত্বক অন্যদের কাছে প্রদর্শন করতে চান না, তাদের জন্যই এটি ডিজাইন করা হয়েছে।

‘মার্জিত ফ্যাশন’ নিয়ে টার্কিয়া ব্লগিং শুরু করার পর থেকেই এটি জনপ্রিয়তা পায় বলে তিনি জানান। ফলশ্রুতিতে এটি পোশাকের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে এবং হাই স্ট্রিটের দোকানগুলোতেও এখন এটি বেশ সহজলভ্য।

দিনা টার্কিয়া বলেন, ‘সাত বছর আগে আমি যখন হাই স্ট্রিটের দোকানগুলোতে কেনাকাটা করতাম, তখন এটি ছিল একটি মিশনের মতোই। আমার জন্য উপযুক্ত পোশাকের দোকান খুঁজে পাওয়া সহজ ছিল না। এর জন্য আমাকে ঘন্টার পর ঘণ্টা সময় নিতে হতো।’

সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে যেসব নারী মার্জিত পোশাক পরতে পছন্দ করেন, ‘হাই স্ট্রিট ব্র্যান্ড’ নিঃসন্দেহে তাদের জন্য অধিক প্রত্যাশিত। বিষয়টি খেয়াল করেন টর্কিয়া।

যাইহোক, যদিও কিছু ব্র্যান্ড তাদের প্রচারাভিযানের মধ্যে মুসলিম পুরুষ ও নারীদের সমন্বিত করে ‘বিনয়ী পোশাকের’ ব্যাপারে সচেতনভাবে চিন্তা করছে। তিনি বিশ্বাস করেন, একটি বিপণন কৌশল হিসাবে অন্যরাও এভাবে কাজ করতে পারেন।

গত বছর টার্কিয়া ‘ইউর অ্যাভারেজ মুসলিম’ নামে একটি ইউটিউব সিরিজ চালু করেছেন। সেখানে তিনি মুসলিম নারীদের সম্পর্কে চ্যালেঞ্জ জানাতে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন।

টার্কিয়া বলেন, ‘আমি যে বিষয়টি সম্পর্কে সবচেয়ে ভাল জানি মূলত সেটি করার জন্যই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর তা হচ্ছে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে মুসলিম নারীদের নিয়ে কথা বলা।’

‘পরিবর্তনের প্রচারাভিযানে’ ইউটিউবের স্রষ্টারা সারা বিশ্বের প্রভাবশালী নির্মাতাদের নিয়ে সম্প্রতি লন্ডনে তাদের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে। মূলত যারা সহনশীলতা এবং গ্রহণযোগ্য বার্তার মাধ্যমে তাদের শ্রোতাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন, তাদেরকে একত্রিত করতেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই সম্মেলনে টার্কিয়াও আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। আরটিএনএন

captcha