বার্তা সংস্থা ইকনা: বিশ্ব জুড়ে অনেক মসজিদ রয়েছে। প্রতিটি মসজিদই নিজস্ব স্থাপত্য ও ডিজাইনের জন্য মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
প্রকৃত পক্ষে একটি মসজিদের থেকে অপর একটি মসজিদের নির্মাণের বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের কারণে, সুন্দের দিক একটি মসজিদ থেকে অপরটি থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে। আর এভাবেই সৌন্দর্যের দিক থেকে শ্রেষ্ঠ হয়ে থাকে কিছু মসজিদ।
রাশিয়ার "স্পুটনিক" নিউজ এজেন্সি ১৩টি মসজিদকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এসকল মসজিদের বিবরণ ও ছবি নীচে তুলে ধরা হল:
শিরাজের "নাসির আল-মালিক" মসজিদ
শিরাজের "নাসির আল-মালিক" মসজিদ
ইরানে যেসকল শহরে প্রাচীনতম মসজিদ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে শিরাজ অন্যতম। এই শহরের নাসির আল-মালিক মসজিদটি বিশ্বের দর্শনার্থীদের মন জয় করেছে। দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও মসজিদের এখনও অক্ষত রয়েছে। এই মসজিদের সুন্দর কারুকাজের জন্য মসজিদটি পরিদর্শন করার জন্য পর্যটকগণ শিরাজে ভ্রমণ করেন। মসজিদটি ইরানের কাজার রাজবংশের রাজা নাসির আল-মালিক নামে পরিচিত মির্জা হাসান আলী খানের নির্দেশে নির্মিত হয়েছে। মসজিদটির নির্মাণ কার ১২৬৭ সালে শুরু করা হয় এবং ১২৫৫ এটির নির্মাণ করা শেষ হয়। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে ১২ বছর।
ইস্তাম্বুলের "সুলতান আহমেদ" মসজিদ
ইস্তাম্বুলের "সুলতান আহমেদ" মসজিদ
এই মসজিদটি অটোমানের যুগের একটি অনন্য নির্মাণ। তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের মসজিদটির অবস্থান। এটি নির্মাণ কাজ ১৬০৯ সালে শুরু করা হয় এবং ১৬১৬ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। সুলতান আহমাদ আওয়ালের নির্দেশে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি ভিতরে নীল টাইলসের ডিজাইন থাকার কারণে ইউরোপিয়ানদের কাছে এটি "নীল মসজিদ" হিসেবে প্রসিদ্ধ। ১৯৩৪ সালে তুরস্কের ঐতিহাসিক "আইয়াসফিয়া" মসজিদ যাদুঘরে রূপান্তরিত হওয়ার পর মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগী ও আমালের জন্য সুলতান আহমেদ মসজিদের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়।
সাইপ্রাসের "লালেহ মোস্তফা পাশা" মসজিদ
ইস্তাম্বুলের "সুলতান আহমেদ" মসজিদ
সাইপ্রাসের "ফামাগুস্তা" শহরে অবস্থিত "লালেহ মোস্তফা পাশা" মসজিদটি ১২৯৮ থেকে ১৪০০ সালে মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের মূল ভবন নির্মাণের প্রথম দিকে অর্থাৎ ১৩২৭ সালে সেন্ট নিকোলাস ক্যাথলিক গির্জা হিসেবে দান করা হয়েছিল এবং তখন গির্জা হিসেবেই প্রসিদ্ধ ছিল। তবে ১৫৭১ সালে ফামাগুস্তা শহর অটোমান সাম্রাজ্যের আধিপত্যের অধীনে আসার পর মসজিদে রূপান্তরিত হয়।
মালয়েশিয়ার প্রেসকোটান ভিলা মসজিদ
মালয়েশিয়ার প্রেসকোটান ভিলা মসজিদ
মালয়েশিয়ার প্রেসকোটান ভিলা মসজিদটি রঙ্গের সমন্বয় ও স্থাপত্যের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদের মধ্যে একটি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে মসজিদটি অবস্থিত। উপর থেকে মসজিদের ছবি দেখলে যেকোনো দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে।
সেন্ট পিটার্সবার্গের জামে মসজিদ
সেন্ট পিটার্সবার্গের জামে মসজিদ
১৯০৬ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে দ্বিতীয় লিকোলাস থেকে রাজা আবদেল আহাদ খান বুখারা একটি জমি কেনেন। জমিটি কেনার পর ১৯১০ সালের ৩য় ফেব্রুয়ারি তিনি সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এই মসজিদে মুসল্লিগণ ১৯১৩ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি প্রথম নামাজ পড়েন। তবে মসজিদটির নির্মাণ কার ১৯২০ সালের ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
তাতারস্তানের "কুল শরীফ" মসজিদ
তাতারস্তানের "কুল শরীফ" মসজিদ
তাতারস্তানের কাজান শহরে কুল শরীফ মসজিদটি অবস্থিত। এটি ইউরোপ বৃহত্তম মসজিদের মধ্যে একটি। কুল শরীফ মসজিদটি মধ্যযুগের বৃহত্তম মসজিদ হিসেবে পরিগণিত। এটি ১৬ শতাব্দীতে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের সাথে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী রয়েছে। লাইব্রেরীতে অনেক প্রাচীন গ্রন্থসমূহ সুরক্ষিত রয়েছে। মসজিদটির সৌন্দর্যের জন্য ১৬ শতাব্দীতে এটিকে খানদের রাজধানী বলা হত।
দুই তালা বিশিষ্ট এই মসজিদের প্রথম তালায় নামাজের স্থান এবং দ্বিতীয় তালায় যাদুঘর রয়েছে। এই মসজিদটির প্রধান গম্বুজটির উচ্চতা ৩৯ মিটার এবং প্রধান ৪টি মিনারের উচ্চতা ৫৭ মিটার। শহরে কুল শরীফ মসজিদটি নির্মাণের অধিকাংশ খরচই তাতারের মুসলমানেরা বহন করেছেন।
ইরানের "শাহ চেরাগ" মসজিদ
ইরানের "শাহ চেরাগ" মসজিদ
ইরানের শিরাজ শহরে ঐতিহাসিক ও সৌন্দর্যময় শাহ চেরাগ মসজিদটি ইংরেজদের নিকটে "আলোর রাজা" হিসেবে প্রসিদ্ধ। অনেক পর্যটকগণ মসজিদের বাইরের অংশ দেখে ধারণা করেন এটি একটি পুরাতন মসজিদ। কিন্তু তারা যখন ভিতরে প্রবেশ করেন এবং মসজিদের নির্দেশিকা নোট দেখে বুঝতে পারেন যে, এটি একটি জিয়ারতের স্থান ছাড়াও ঐতিহাসিক স্থান।
মসজিদের ভিতরের পরিবেশ অসাধারণ। ভিতরে বিভিন্ন রঙ্গের কাচ দিয়ে সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে। মসজিদটি ৯০০ শতাব্দীতে নির্মাণ করা হয়েছে।
মস্কোর জামে মসজিদ
মস্কোর জামে মসজিদ
মস্কোর জামে মসজিদটি ১৯০৪ সালে বিখ্যাত আর্কিটেক্ট "নিকোলাই জুকভ"-এর ডিজাইনে নির্মাণ করা হয়েছে। তারপর থেকে মসজিদটি বেশ কয়েক বার সংস্কার করা হয়েছে। অনেক এই মসজিদটিকে তাতারদের মসজিদ হিসেবে চেনেন। কারণ তাতার গোত্র এটি বেশী ব্যবহার করেন।
প্রাচীন এই মসজিদটি ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পুনর্নির্মাণ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। কারণ ২০০৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে মসজিদটির স্বীকৃত ছিল। কিন্তু ২০০৮ সালের শেষের দিকে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকা থেকে মসজিদটির নাম সরিয়ে নেওয়া হয়। অর্থাৎ মসজিদটি যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন সরকারের তত্ত্বাবধায়নে ছিল না।
পরবর্তীতে মসজিদটি পুনর্নির্মাণের জন্য মুসলমানদের অনবরত আহ্বানের জন্য মসজিদটি পুনরায় নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুর্কির প্রেসিডেন্ট রেসপ তায়িপ এর্দোগান এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের উপস্থিতিতে মস্কোর জামে মসজিদটির উদ্বোধন হয়। বর্তমানে এই মসজিদে একসাথে ১০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন।
মসজিদুল হারাম
মসজিদুল হারাম
মসজিদুল হারাম বা মসজিদুল আ'জাম বিশ্বের সর্ববৃহৎ মসজিদ। সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কায় মসজিদুল হারামের অবস্থান। ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, যারা এই মসজিদের প্রবেশ করবে তারা সুরক্ষিত থাকবে এবং তাদের কোন প্রকার ক্ষতি করা যাবে না।
এই মসজিদটি মুসলমানদের কিবলা হিসেবে সুপরিচিত। মসজিদুল হারামকে আল্লাহর ঘর, বাইতুল হারাম, বাইতুল আতিক এবং বাইতুল্লাহিল হারমা বলা হয়। এই মসজিদটিকে মসজিদুল হারাম নামকরণের কারণ হচ্ছে মহান আল্লাহ মুশরিকদের এই পবিত্র স্থানে প্রবেশ হারাম করেছেন। পৃথিবীর সকল মানুষ মসজিদুল হারামের প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করেন।
ওমানের "সুলতান কাবউস" মসজিদ
ওমানের "সুলতান কাবউস" মসজিদ
ওমানের মাসকাট শহরের একটি আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে সুলতান কাবউস মসজিদ। আধুনিক যুগের সুন্দর ও আকর্ষণীয় একটি মসজিদ। মসজিদটিতে ওমান ও মধ্যপ্রাচ্যের সমন্বিত স্থাপত্য দেখা যায়।
সুলতান কাবউস মসজিদটি ২০০১ সালে উদ্বোধন করা হয়। মসজিদটি নির্মাণ করতে ৬ বছর সময় লেগেছে। এখানে একসাথে ২০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। ওমানের সর্ববৃহৎ মসজিদ হিসেবে এই প্রসিদ্ধ।
মসজিদটি প্রায় ৪,১৬,০০০ বর্গমিটার জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটি আয়তক্ষেত্রাকারে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদরে প্রত্যেক কোনায় ৪৫ মিটার উচ্চতার ৪টি মিনার রয়েছে এবং মসজিদটি নির্মাণের জন্য ৩,০০,০০০ টন ব্যালিস্টন ব্যবহার করা হয়েছে। সুলতান কাবউস মসজিদে পুরুষ ও নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য পৃথক কক্ষ, লাইব্রেরী এবং সেমিনার কক্ষ রয়েছে।
ফিলিপাইনের পিঙ্ক (গোলাপি) মসজিদ
ফিলিপাইনের পিঙ্ক (গোলাপি) মসজিদ
ফিলিপাইনের মাগুইন্ডানাও প্রদেশের গোলাপি রঙ্গের একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এই মসজিদের দেয়াল ও মেঝেও গোলাপি রং করা হয়েছে। তবে এর পিছনে নিশ্চয় কোন কারণ রয়েছে, যার কারণে এই মসজিদটি গোলাপি রং দিয়ে সাজানো হয়েছে।
এই মসজিদটি গোলাপি রং করার মূল কারণ হচ্ছে, মাগুইন্ডানাও প্রদেশের ডাটু শহরের মেয়র তার পারিবারিক সম্পত্তিতে ইবাদতের জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাতে করে সেখানে সকলে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত-বন্দেগী করতে পারেন। কিন্তু মূল কথা হচ্ছে, ডাটু শহরে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা বিশেষ করে খ্রিস্টান ও মুসলমানেরা একসাথে বসবাস করে। মেয়র নিজেও চেয়েছেন তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব এবং শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ থাকুক। আর এই কারণেই গোলাপি রঙ্গের এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। কারণ সেদেশে গোলাপি রংটি ভালোবাসা, বন্ধুত্ব এবং শান্তির প্রতীক। এই মসজিদটি নির্মাণের জন্য খ্রিস্টানদেরও ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে করে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে সর্বদা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকুক।
২০১৪ সালে পবিত্র রমজান মাসে শান্তির এই কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় এবং এটির নাম "The Masjid Dimaukom" নামকরণ করা হয়। বর্তমানে এটি পিঙ্ক মসজিদ হিসেবে প্রসিদ্ধ। এই মসজিদটি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এই মসজিদের সাথে অধিক পরিচিতি হওয়ার জন্য মসজিদের ভিতরে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
মালয়েশিয়ার পুত্রা মসজিদ
মালয়েশিয়ার পুত্রা মসজিদ
মালয়েশিয়ার পুত্রা জয়া মসজিদের নির্মাণ কাজ ১৯৯৭ সালে শুরু করা হয়। মসজিদটি নির্মাণ করতে দুই বছর সময় লেগেছে। মসজিদের গোলাপি রঙ্গের গম্বুজটি লাল রঙ্গের গ্রানাইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদে এক সাথে ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। মসজিদটির বেসমেন্ট প্রাচীরটি মস্কোর কাসাব্লাঙ্কার হাসান শাহ মসজিদের প্রাচীরের মতো।
মসজিদে নামাজের জন্য মনোরম কক্ষ, প্রাঙ্গণ এবং প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ সেন্টার রয়েছে। মসজিদের নামাজের কক্ষ সাধারণ এবং মনোরম। এটি ১২টি কলামে দাড়িয়ে রয়েছে। গম্বুজের নীচ থেকে উপরের উচ্চতা ২৫০ মিটার। মসজিদটির আঙ্গিনায় বেশ কয়েকটি জলপ্রপাত দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে।
আমিরাতের "শেখ যায়েদ" মসজিদ
আমিরাতের "শেখ যায়েদ" মসজিদ
মসজিদের নামেই স্পষ্ট যে, এই মসজিদটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠাতা এবং আবু ধাবির শাসকের নির্দেশে নির্মাণ করা হয়েছে। শেখ যায়েদ মসজিদটি নতুন ইসলামী স্থাপত্যের একটি উদাহরণ। ২০০৪ সালে শেখ যায়েদ ইন্তেকাল করেন। মসজিদের উত্তর দিকে তাকে দাফন করা হয়েছে। প্রাচীন ও আধুনিক ডিজাইনে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
এই মসজিদটি নির্মাণের জন্য মূল উপকরণগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে অইসলামিক দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। শেখ যায়েদ মসজিদটি নির্মাণের জন্য দুই বিলিয়ন এবং ১৬৭ মিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম ব্যয় হয়েছে। এই মসজিদটি ৯ মিটার উঁচু একটি পাহাড়ে নির্মাণ করা হয়েছে। ইসলামী সম্মেলন সংস্থা জরিপ অনুযায়ী, মসজিদটির গম্বুজটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ গম্বুজ। শেখ যায়েদ মসজিদের গম্বুজের উচ্চতা ৮৩ মিটার এবং এর ভিতরের ব্যাস ৩২.৮ মিটার।
iqna