এই ভাইরাস সংক্রমণে জেরবার চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও ইরানের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড ফেরতদের ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দুই ইতালিফেরতসহ দুজনের নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার পর এই সিদ্ধান্ত এসেছে।
বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর দিয়ে রোববার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ, একজন নারী; তিনজনই বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে দুজন ইতালির দুটি শহর থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে একজনের সংস্পর্শে আসায় পরিবারের আরেক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
“তাদের সবার অবস্থাই স্থিতিশীল। তিনজনকেই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
বিকালে তিনি এই তথ্য জানানোর কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা বলেছি চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইরান, থাইল্যান্ড এই ছয়টি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা সন্দেহজনক বা বেশি মনে হলে আমরা তাদের আইসোলেশনে নেব।”
তাদের কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “যাদের তাপমাত্রা আপাতত স্বাভাবিক থাকবে তাদের অনুরোধ করব, তারা যেন ১৪ দিন যেখানে থাকেন সেখানে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন।”
হেলথ কার্ডে থাকা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত কোনো লক্ষণ দেখা দিলে হটলাইন নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
নভেল করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত।
করোনাভাইরাস রোধে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। সব যাত্রীদের করা হচ্ছে পরীক্ষা।
করোনাভাইরাস রোধে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। সব যাত্রীদের করা হচ্ছে পরীক্ষা।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছু দিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
নভেল করোনাভাইরাস এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হল, যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
চিকিৎসকরা বলছেন, সংক্রমণ এড়াতে চাইলে ঘন ঘন হাত ধোয়া ভালো। সেই সঙ্গে নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীও নিরাপদ রাখতে হবে।
গত ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, যা ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ১০০ দেশ ও অঞ্চলে।
বিশ্বজুড়ে ১ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ এ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন; মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৫ জনের।
সূত্র: bdnews24