IQNA

প্রথমবারের মতো;

ইসরাইলি দুই সেনা বন্দির ভিডিও প্রকাশ করল হিজবুল্লাহ

15:20 - July 14, 2021
সংবাদ: 3470319
তেহরান (ইকনা): লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ প্রথমবারের মতো ২০০৬ সালের জুলাই মাসে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই দখলদার বাহিনীর দুই জন সেনাকে কীভাবে বন্দি করেছিল, তার ভিডিও প্রকাশ করেছে।

হিজবুল্লাহর মূলধারার গণমাধ্যম প্রথমবারের মতো ২০০৬ সালে সংগঠিত হওয়া ৩৩ দিনের যুদ্ধের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।

মিডিয়াটি তার টুইটার পেজে “আল-ইয়লামুল হারবিল মারকাযী” নামে একটি শিরোনামে লিখেছে: “২০০৬ সালের ১২ই জুলাই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় খাল্লাহ ওয়ারদা এলাকা থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের দুই জন সেনাকে বন্দি করা হয়েছিল। “অপারেশন ট্রু প্রতিশ্রুতি” যা আপনাদেরকে অবাক করেছে।

এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।

২০০৬ সালের জুলাই মাসের যুদ্ধ যা দখলকৃত অঞ্চলসমূহের উত্তরাঞ্চল এবং লেবানন জুড়ে সংঘটিত হয়েছে। ৩৩ দিনের এই যুদ্ধ ১৪ই আগস্ট সুরক্ষা কাউন্সিলের রেজোলিউশন 1701-এর মাধ্যমে শেষ হয়েছিল।

২০০৬ সালের জুন মাসে ইহুদিবাদী ইসরাইল লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহকে ‘ধ্বংস করা’র ঘোষণা দিয়ে দক্ষিণ লেবাননে আগ্রাসন চালায়। কিন্তু যে ইসরাইল ১৯৬৭ সালে মাত্র এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে সম্মিলিত আরব বাহিনীকে পরাভূত করেছিল সেই ইসরাইল টানা ৩৩ দিন যুদ্ধ করেও হিজবুল্লাহকে কাবু করতে পারেনি বরং শেষদিকে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে প্রচণ্ড মার খেয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়।

অবশ্য শুরুর দিকে জাতিসংঘ চোখ বন্ধ করে রাখলেও শেষদিকে মধ্যস্থতার মাধ্যমে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়।

লেবানিজ বন্দীদের মুক্তির জন্য হিজবুল্লাহ তেল আবিবকে একাধিকবার আহ্বান জানায়। কিন্তু তেল আবিব তাদের আহ্বানে কোন সাড়া দেয়নি। এর প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহর সৈন্যরা ২০০৬ সালের ১২ই জুলাই লেবাননের সীমান্তবর্তী দখলকৃত অঞ্চলগুলোয় হামলা চালায় এবং এই হামলায় জায়নবাদীর ৩ সেনা নিহত হয় এবং এসময় তারা অপর দুই সেনাকে গ্রেপ্তার করে লেবাননে ফিরে আসে।

হিজবুল্লাহ এই অভিযানকে “সত্য প্রতিশ্রুতি” হিসাবে অভিহিত করেছে। ইহুদিবাদী সরকার তৎক্ষণাৎ দুই জায়নিবাদী সৈন্যের জীবন বাঁচাতে পদক্ষেপ নেয়। অবশেষে এই যুদ্ধে আরও পাঁচজন জায়নিস্ট সৈন্য নিহত এবং অপর দশ হন আহত হয়। এরমধ্যে পাঁচ জন বেসামরিক ব্যক্তি ছিল।

লেবাননের হিজবুল্লাহ এই আক্রমণকে একটি "ন্যায্য প্রতিক্রিয়া" বলে অভিহিত করেছেন এবং হিজবুল্লাহর মহাসচিব ইসরাইলের বন্দী দুই সেনাকে ফিরিয়ে দেওয়ার শর্ত হিসেবে নিজেদের অপর ৪ সেনার মুক্তির দাবী জানান।

ইসরাইলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট ২০০৯ সালের ২৯শে জুন মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে লেবাননের সীমান্তে অপহৃত দুই ইসরাইলি সেনা এলদাড রগাব এবং এহুদ গোল্ডওয়াসার বেঁচে নেই। এ সত্ত্বেও তারা তাদের সেনাদের মৃতদেহ ফিরিয়ে নিতে উচ্চ মূল্য দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

অবশেষে, ২০০৮ সালের ১৬ই জুলাই বন্দী হওয়া দুই জায়নিবাদী সৈন্যের মৃতদেহের বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে প্রবীণতম লেবাননের বন্দী সামির কন্তার, অপর পাঁচ লেবানিজ বন্দী এবং ফিলিস্তিনি ও লেবানিজ ১৯৯ জন যোদ্ধাদের মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। iqna

captcha