সূরা হাক্কাহ; কিয়ামত সুনিশ্চিত, নির্ধারিত ও বাস্তব।

তেহরান (ইকনা): “হাক্কাহ” হল কিয়ামতের অপর একটি নাম এবং এর অর্থ এমন কিছু যা সুনিশ্চিত, নির্ধারিত এবং বাস্তব; এই সূরাটি মূলত তাদের উদ্দেশ্যে যারা বিচার দিবসকে অস্বীকার করে। আর তাই সূরাটিতে বিচার দিবসকে অস্বীকারকারীদের সতর্ক করতে কিয়ামতের অবস্থার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

পবিত্র কুরআনের ৬৯তম সূরা’র নাম "হাক্কাহ"। ৫২টি আয়াত বিশিষ্ট এই সূরাটি পবিত্র কুরআনের ২৯তম পারায় অবস্থিত। এই সূরাটি মক্কী সূরা এবং নাযিলের ক্রমানুসারে এই সূরাটি ৭৮তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
সূরাটির তিনটি আয়াতে হাক্কাহ শব্দটি পুনরাবৃত্তি হয়েছে এবং সে সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে। একারণেই এই নামে সূরার নামকরণ করা হয়েছে। হাক্কাহ শব্দের অর্থ ঐ বিষয় যা সুনিশ্চিত, নির্ধারিত এবং বাস্তব। শব্দটির পুনরাবৃত্তির কারণ হল কিয়ামতকে স্মরণ করিয়ে দেয়া এবং সেদিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করা।
এই সূরাটির মুল বিষয়বস্তু হল বিচার দিবসের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা এবং যারা একে অস্বীকার করে তাদের পরিণতি বর্ণনা করা।
সূরাটি তিনটি অংশে বিভক্ত হয়েছে। প্রথম অংশে পূর্ববর্তী জাতিদের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, আদ, সমুদ, লুত ও ফেরাউনের জাতি যারা তাদের নবীদেরকে অস্বীকার করার ফলে ঐশী আযাবে পতিত হয় এবং বিপরীতে এমন মানুষের কথাও বলা হয় যারা নূহের প্রতি ঈমান এনে নৌকায় আরোহণ করে এবং পরিত্রাণ পায়।
দ্বিতীয় অংশে বিচার দিবসের অবস্থা এবং সেদিন মানুষের বিভাজন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেদিন, মানুষ দুই দলে বিভক্ত হবে, ডান এবং বাম। ডান দল সেদিন আনন্দিত হবে অপর পক্ষে বাম দল হবে হতাশাগ্রস্ত এবং পৃথিবীতে তাদের আচরণের কারণে তারা বেদনাদায়ক শাস্তির জন্য অপেক্ষা করবে।
সূরার তৃতীয় ও শেষ অংশে কুরআনের বাস্তবতা এবং নবীর নবুয়তের সত্যায়ন করার জন্য একাধিক শপথ গ্রহণ করা হয়েছে। আয়াতগুলোতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, নবী (সা.) মিথ্যা ভাবে কোন কিছুকে আল্লাহর প্রতি আরোপ করেন না; কারণ তিনি যদি এমনটা করেন তাহলে আল্লাহ তাকে অপমানিত ও অপদস্থ করবেন।
এছাড়াও, এই আয়াতগুলি থেকে বুঝা যায়, কেউ যদি মিথ্যা ভাবে নিজেকে নবী বলে দাবি করে, এমনকি লোকেরা যদি বুঝতে নাও পারে সে মিথ্যুক, অবশ্যই আল্লাহ এই ব্যক্তিকে শাস্তি দিবেন ও ধ্বংস করবেন।