IQNA

কুরআনের সূরাসমূহ/৭৯

সূরা নাযিয়াতে আল্লাহর অবাধ্যতার মূল উৎসের সন্ধান

0:02 - May 27, 2023
সংবাদ: 3473804
তেহরান (ইকনা): আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতা বা আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাসের বিভিন্ন কারণ মানুষকে তাদের জীবনের উচ্চ লক্ষ্য থেকে দূরে নিয়ে যায়। এই বিমুখতা মানুষের জীবনকে অতিশয় নগণ্য ও অসার করে তোলে।

পবিত্র কুরআনের ৭৯তম সূরার নাম “নাযিয়াত”। ৪৬টি আয়াত বিশিষ্ট এই সূরাটি পবিত্র কুরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত। এই সূরাটি মক্কী সূরা এবং নাযিলের ক্রমানুসারে এই সূরাটি ৮১তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
“নাযিয়াত” নামকরণের পিছনে কারণ হল সূরাটি নাযিয়াত নামক প্রাণ হনন কারী ফেরেশতাদের কসমের মাধ্যমে সূচনা হওয়া।
সূরাটির শুরুতেই আল্লাহ পাঁচটি শপথ করেছেন; কষ্ট দিয়ে প্রাণ হনন কারী ফেরেশতার, আরামের সাথে প্রাণ হনন কারী ফেরেশতার, সাঁতারু ফেরেশতার, অগ্রগামীগণের এবং পরিকল্পনাকারীদের।
তফসীরে নমুনার আলোকে, সূরাটির বিষয়বস্তু ছয়টি অংশে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে:
কিয়ামত সংঘটিত হবার জোর দেওয়া, অসংখ্য শপথের উল্লেখ, বিচার দিবসের ভীতিকর ও ভয়ঙ্কর চিত্র উল্লেখ, হজরত মুসা (আ.) এর ঘটনা এবং ফেরাউনের শাস্তির প্রতি সংক্ষিপ্ত ইশারার মাধ্যমে নবী ও মুমিনদের মনে প্রশান্তি দান করা এবং মুশরিকদেরকে সতর্ক করা এবং এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বলা যে, কেয়ামত অস্বীকার করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি কি কি গুনাহে পতিত হতে পারে?
এই সূরায় যা বলা হয়েছে, সে অনুযায়ী পরকালের চেয়ে দুনিয়াকে প্রাধান্য দেওয়া এবং আত্মার ইচ্ছার অনুসরণ করা আল্লাহর অবাধ্যতার অন্যতম লক্ষণ এবং নিজের আত্মার ইচ্ছা সাথে মোকাবেলা করা হল আল্লাহ ভীতির লক্ষণ। আল্লাহর মারেফাত অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহ ভীতি সৃষ্টি হয় এবং এটিই আত্মাকে তার ইচ্ছার উপরে কর্তৃত্ব অর্জনে সাহায্য করে।
এই সূরার ধারাবাহিকতায় আসমান ও জমিনে আল্লাহ্‌র ক্ষমতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে; যা মৃত্যুর পরে পুনরুত্থান এবং নতুন জীবনের সম্ভাবনার একটি প্রমাণ। এছাড়াও, এই সূরার একটি অংশ বিচার দিবসের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত; যেখানে গুনাহগারদের পরিণতি ও নেককারদের পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে। সূরাটির শেষাংশে জোর দিয়ে বলা হয়েছে কেয়ামত কখন ঘটবে তা কেউ জানে না, তবে এটা নিশ্চিত যে এটি নিকটবর্তী।
এই সূরার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে একটি হল এর ৩০নং আয়াতে বর্ণিত হওয়া পৃথিবীর প্রসারণ। পৃথিবীর প্রসারণ অর্থ হল পানির নিচে থেকে শুকনো জমির উদ্ভব। কিছু প্রাচীন ইসলামি সূত্র অনুসারে, পৃথিবীর স্থলভাগ শুরুতে পানির নিচে ছিল; তারপর তা পানির নিচ থেকে বেরিয়ে আসে। কিছু হাদিস ও ঐতিহাসিক গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, পানির নিচ থেকে সর্বপ্রথম যে স্থানটি বের হয়েছিল তা হল মক্কা বা কাবার স্থান।
 
captcha