আন্তর্জাতিক কিছু সংবাদমাধ্যমে গত সপ্তাহে একটি ওয়াইন ব্লগে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দাবি করা হয়েছিল, ২০৩৪ সালে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে কেন্দ্র করে সৌদি আরব পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মদ বিক্রির অনুমতি দিতে পারে।
তবে ওই প্রতিবেদনে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ করা হয়নি।
সৌদি আরব, যা একসময় অত্যন্ত রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্যটন ও আন্তর্জাতিক ব্যবসা আকৃষ্ট করতে কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। দেশটি বর্তমানে একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তেল-নির্ভরতা কমিয়ে বহুমুখী অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে এগোচ্ছে। যদিও মদ এখনও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, সৌদি নাগরিক এবং বিদেশিরা এখন অনেক কার্যকলাপে অংশ নিতে পারছেন, যা একসময় দেশটিতে অকল্পনীয় ছিল।
এর মধ্যে রয়েছে মরুভূমিতে রেভ পার্টি, ফ্যাশন শোতে অংশগ্রহণ বা সিনেমা হলে চলচ্চিত্র দেখা— যা আগে সম্ভব ছিল না।
এই প্রতিবেদন সামনে আসার পর, সামাজিক মাধ্যমে তা ঘিরে প্রবল আলোচনা শুরু হয়। উল্লেখ্য, সৌদি আরবের রাজা ইসলাম ধর্মের দুটি পবিত্রতম স্থান— মক্কা ও মদিনার। স্বভাবতই এ ধরনের বিষয় নিয়ে জনমত অত্যন্ত সংবেদনশীল।
সৌদি আরবের প্রকৃত নেতৃত্বে থাকা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস নামে পরিচিত) সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৭ সালে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া, জনস্থানে লিঙ্গভেদে বিচ্ছিন্নতার নিয়ম শিথিল করা এবং ধর্মীয় পুলিশের ক্ষমতা কমিয়ে আনা। উল্লেখযোগ্যভাবে, সৌদি আরব এবং কুয়েত উপসাগরীয় অঞ্চলের একমাত্র দুইটি দেশ যেখানে এখনও পর্যন্ত মদ বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
তবে কিছুটা ব্যতিক্রম হিসেবে, গত বছর রিয়াদে সৌদি আরবের প্রথম মদের দোকানটি খোলা হয়, যেখানে শুধুমাত্র অমুসলিম কূটনীতিকদের মদ কেনার অনুমতি দেওয়া হয়। এর আগে, কেবল কূটনৈতিক পত্রব্যবস্থার মাধ্যমে অথবা কালোবাজারের ওপর নির্ভর করেই মদ সংগ্রহ করা যেত।