বার্তা সংস্থা ইকনা: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া অনুবিভাগ
সূত্র জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৫ জানুয়ারি চারদিনের সফরে সৌদি আরব যাচ্ছেন।
সফরকালে সদ্য ঘোষিত সৌদি নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটের
রূপরেখা, কার্যপরিধি এবং বাংলাদেশের এতে অংশ নেওয়ার সীমারেখা নিয়ে আলোচনা
হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সৌদি আরবের সঙ্গে জনশক্তি রপ্তানিসহ
সার্বিক দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে আলোচনা হবে।
মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে নতুন সন্ত্রাসবিরোধী
জোটের আওতায় বাংলাদেশ সন্ত্রাসকবলিত কোনো দেশ বা অঞ্চলে সৈন্য না পাঠালেও
বেসামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা দেবে। বাংলাদেশ সাধারণত জাতিসংঘের আওতায়
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সৈন্য পাঠিয়ে থাকে। একক কোনো দেশের নেতৃত্বে সৈন্য
পাঠায় না। এর আগে নব্বইয়ের দশকে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় জাতিসংঘের
ম্যান্ডেট থাকায় কুয়েতে মাইন অপসারণে বাংলাদেশ সহযোগিতা করেছিল। তবে তখনও
বাংলাদেশ কোনো কমব্যাট ফোর্স পাঠায়নি। ফলে সৌদি জোটের আওতায় বাংলাদেশ কী
ধরনের সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী আসন্ন সফরে
বোঝার চেষ্টা করবেন বলে মনে হচ্ছে।
সৌদি উপ-যুবরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মেদ বিন সালমান গত ১৪ ডিসেম্বর
৩৪ মুসলিম দেশ নিয়ে সামরিক জোট গঠনের ঘোষণা দেন। এই জোটের আওতায় সৌদি আরবের
রাজধানী রিয়াদে সন্ত্রাসবিরোধী একটি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হবে। সন্ত্রাসবাদ ও
জঙ্গিবাদ দমনে তথ্য এবং অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের কাজ সমন্বয় করবে এই
কেন্দ্র। সন্ত্রাস দমনের প্রয়োজনে কেন্দ্রটি থেকে অন্য কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ
করা হবে। জোটে মূলত সুন্নি প্রধান দেশগুলোই যোগ দিয়েছে। এতে তুরস্ক, মিসর,
পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত যোগ দিলেও ইরান, ইরাক, সিরিয়া যোগ দেয়নি।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল ইবনে জারিফ টেলিফোনে বাংলাদেশের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে জোটের বিষয়ে জানান। সৌদি মন্ত্রী
রিয়াদভিত্তিক সন্ত্রাসবিরোধী এই কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার জন্য
বাংলাদেশকে অনুরোধ জানান। সৌদি আরবে জোট ঘোষণার পরপরই অসম্ভব দ্রুতগতিতে এই
কেন্দ্রে যোগদানের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
এদিকে সফরকালে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল ইবনে জারিফের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন। এছাড়াও মাহমুদ আলী রিয়াদের গভর্নর যুবরাজ ফয়সল বিন
বন্দর আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। বাংলাদেশের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেদ্দায় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) মহাসচিব আয়াত
মাদানির সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা
করবেন। তিনি সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
সফরকালের বৈঠকে সৌদি জোট নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দেশটিতে বাংলাদেশি জনশক্তি
রপ্তানির বিষয় এই সফরকালে প্রাধান্য পাবে। এছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও
বিনিয়োগ এবং ওআইসি ও জাতিসংঘে দুই দেশের সহযোগিতার ইস্যুও আলোচিত হবে।
সূত্র: amadershomoys