বার্তা সংস্থা ইকনা: কাতারের নির্মাণ খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদার পাশাপাশি বাংলাদেশি ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খতিবের রয়েছে বিপুল চাহিদা। প্রায় দুই দশক ধরে রাজধানী দোহাসহ কাতারের বিভিন্ন শহরের মসজিদে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশিরা। বলা চলে, কাতারের মুয়াজ্জিন ও ইমামদের অধিকাংশই বাংলাদেশি।
১৯৯০ সালে সর্বপ্রথম সরকারিভাবে ইমাম-মুয়াজ্জিন নেওয়া শুরু করে কাতার। মাঝে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার কাতারে বাংলাদেশি ইমাম-মুয়াজ্জিন নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এবার শতাধিক ইমাম-মুয়াজ্জিন নেবে কাতার। কাতারের ওয়াকফ ও ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে।
আগ্রহী প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিতে চলতি সপ্তাহে ঢাকায় আসবেন দুই সদস্যের একটি টিম। তারা প্রাথমিকভাবে প্রার্থীদের বাছাই করবেন। ওই টিমে রয়েছেন, হাফেজ মাওলানা ফখরুল হুদা ও আহমেদ সুদানি।
কাতার ওয়াকফ ও ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি
১৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সকাল সাতটা থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান মসজিদে প্রাথমিক ইন্টারভিউ শুরু হবে। প্রাথমিক বাছাই চলবে ১০ দিন। দুই সদস্যের এই টিম প্রাথমিক বাছাই সম্পন্ন করবেন। এরপর কাতারের ওয়াকফ ও ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টিম ঢাকায় এসে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
কাতার ওয়াকফ ও ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে ইমাম-মুয়াজ্জিন নিয়োগ ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ওই সব শর্তের মাঝে রয়েছে- আগ্রহী প্রার্থীকে অবশ্যই স্বীকৃত আলেম হতে হবে এবং এ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানিক সনদপত্র জমা দিতে হবে। সর্বনিম্ন ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর বয়সী হতে হবে। অবশ্যই কোরআনের হাফেজ হতে হবে এবং তাজবিদসহ সুন্দর কন্ঠে কোরআন তেলাওয়াতে সক্ষম হতে হবে।
আবেদনকারীকে অবশ্যই পাসপোর্ট অথবা জন্মসনদের সঙ্গে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি জমা দিতে হবে। পাশাপাশি উত্তীর্ণ প্রার্থীকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদ যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে সত্যায়ন করে জমা দিতে হবে। প্রথমে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের স্বাস্থ্যসনদ জমা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে কাতারে কয়েক শ’ মসজিদে বাংলাদেশি ইমাম-মুয়াজ্জিনরা বেশ সুনাম ও সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে কাতারে ১ হাজার ৮০০টি মসজিদ রয়েছে। প্রতিটি মসজিদে একজন ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন এবং একজন খতিব রয়েছেন।
কাতারে কর্মরত ইমামরা ৪ হাজার ৮শ’ রিয়াল, মুয়াজ্জিনরা ৩ হাজার ৮শ’ রিয়াল বেতনের সরকারিভাবে ফ্রি বাসা, বিনামূল্যে পানি ও বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া সন্তানদের ফ্রি পড়ালেখার পাশাপাশি আরও অন্যান্য সুযোগ ভোগ করেন তারা। এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা অন্য কোনো দেশে বিরল। banglanews24