পার্সটুডের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা: এ সময় উমাইর বলে ওঠে: ঠিক বলেছ। খোদার কসম! যদি আমার ঋণের অর্থ পরিশোধ করার সামর্থ্য থাকত এবং আমি চলে গেলে আমার সন্তানদের ভরণ-পোষণের চিন্তা করতে না হতো তাহলে আমি মদীনায় গিয়ে মুহাম্মাদকে হত্যা করতাম। সুযোগ বুঝে সাফওয়ান আসল কথায় আসল। বলল: তোমার ঋণ আমি পরিশোধ করে দেব। আর আমার সন্তানদের মতোই আমি তোমার সন্তানদের লালন পালন করব। উমাইর একথা শুনে নিশ্চিন্ত হয়ে সাফওয়ানকে বলল: তাহলে আমি মদীনায় যাই। আর তুমি এই গোপন পরিকল্পনার কথা কাউকে বলে দিও না যেন।
এরপর উমাইর নিজের ধারালো তরবারীতে বিষ মাখিয়ে মদীনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মদীনায় পৌঁছে সে সোজা মসজিদে নববীতে চলে যায়। আগে থেকে সাহাবীরা তাকে চিনত বলে তারা তাকে মসজিদে ঢুকতে বাধা দিতে যান। কিন্তু রাসূলে খোদা (সা.) তাদেরকে নিষেধ করেন।
তিনি বলেন, ওকে ছেড়ে দাও। এরপর উমাইর আল্লাহর রাসূলের সামনে গিয়ে বলে: সুপ্রভাত। এই সম্ভাষণটি ছিল আইয়ামে জাহেলিয়াতের সংস্কৃতি। এর উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: মহান আল্লাহ এর চেয়ে সুন্দর সম্ভাষণ আমাদের শিখিয়েছেন এবং সেটি হচ্ছে সালাম। এরপর তিনি উমাইরের কাছে জিজ্ঞাসা করেন সে কি উদ্দেশ্যে তাঁর কাছে এসেছে? উমাইর উত্তর দেয়, আপনাদের হাতে আটক আমার ছেলেকে মুক্ত করার সুপারিশ নিয়ে এসেছি।
এ সময় মহানবী (সা.) বলেন, না, তুমি এ কারণে আসোনি। তুমি এবং সাফওয়ান কাবাঘরের পাশে বসে বদর যুদ্ধে নিহতদের বিষয়ে কথা বলেছ। এরপর তিনি সাফওয়ান ও উমাইরের মধ্যে যেসব কথা হয়েছে তার সব বলে দেন। তারপর বলেন, তুমি কি কারণে আমার কাছে এসেছ তাও আল্লাহ তায়ালা আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। একথা শুনে উমাইর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। সে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি আল্লাহর প্রেরিত রাসূল। নিঃসন্দেহে আপনি আসমানের খবর পান। সাফওয়ানের সঙ্গে আমার কি কথা হয়েছে তা আমরা দু’জন ছাড়া আর কেউ জানে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনাকে তা জানিয়ে দিয়েছেন। আমি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি যে, তিনি আমাকে ইসলামের দিকে হেদায়েত করেছেন। এরপর উমাইর কলেমায়ে শাহাদাৎ পড়ে মুসলমান হয়ে যায়। মহানবী (সা.) সাহাবীদের উদ্দেশ করে বলেন, উমাইরকে কুরআন ও ধর্মীয় বিধিবিধান শিক্ষা দাও এবং তার ছেলেকে মুক্ত করে দাও।