IQNA

ইব্রাহিমী মসজিদে মুসল্লিদের ওপর দখলদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার

3:03 - August 15, 2021
সংবাদ: 3470508
তেহরান (ইকনা): দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরতা থামছেই না। ফিলিস্তিনি মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েই যাচ্ছে তারা। সর্বশেষ ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবস্থিত হযরত ইব্রাহিমের (আ.) স্মৃতি বিজড়িত মসজিদে মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।

শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিদের ওপর এ হামলা চালায় ইহুদিবাদী দেশটির সেনারা। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, এক মুসল্লিকে তো নির্দয়ভাবে মাটিতে ফেলে ইসরায়েলি সেনাদের ক্রমাগত লাথি মারতে দেখা গেছে।


তবে হঠাৎ এমন আক্রমণ কেন, তা জানা যায়নি। গত সোমবার ইসরাইলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা মসজিদটির আঙ্গিনায় একটি রুট নির্মাণ প্রকল্প শুরু করেছে, যা পার্কিং এলাকাটিকে মসজিদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে এবং একটি বৈদ্যুতিক লিফট স্থাপন করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয় ইসরাইলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদে হেব্রনের অন্য মসজিদগুলো বন্ধ রেখে সবাইকে ইব্রাহিমী মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের আহ্বান জানায়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে শুক্রবার অসংখ্য ফিলিস্তিনি মসজিদটিতে জুমার নামাজ পড়তে জড়ো হয়েছিলেন।

জানা গেছে, সেখানে নামাজ পড়তে গিয়ে কয়েক দফায় ইসরাইলি বাধার মুখোমুখি হতে হয় মুসল্লিদের। মসজিদের প্রবেশপথেই লোহার বেড়া বসিয়ে ও মুসল্লিদের লাইনে দাঁড় করিয়ে একজন একজন করে সবার পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে হানাদার বাহিনী। তার মধ্যেই হঠাৎ মুসল্লিদের ওপর আক্রমণ শুরু করে দখলদাররা।

ইহুদি এবং মুসলিমরা ইব্রাহিমী মসজিদকে সম্মান জানায়। বিশ্বাস করা হয় এখানে নবী ইব্রাহীম (আ.)ও ইয়াকুব (আ.)-কে দাফন করা হয়েছে। মাঝে মধ্যেই ইহুদিদের উৎসব পালন করার জন্য ইব্রাহিমী (স.) মসজিদটি বন্ধ দেয় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

ইব্রাহিমী মসজিদে ১৯৯৪ সালে প্রথম হামলা চালিয়েছিল ইসরাইল। ১৯৯৪ সালে চরমপন্থী বাসিন্দা বারুচ গোল্ডেন স্টেইচ ২৯ জন ফিলিস্তিনিকে মসজিদের মধ্যে ইবাদতরত অবস্থায় হত্যা করে। পরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মুসলিম ও ইহুদিদের প্রার্থনার জায়গা আলাদা করে দেয়।

তাছাড়া ইব্রাহিমী মসজিদে কয়েকটি আজানের ক্ষেত্রে বিধি আরোপ করা হয়। তখন থেকে মাগরিবের আজান উচ্চস্বরে দেয়া যায় না। তাছাড়া শুক্রবারে মাগরিব ও এশার আজান এবং রোববারে ইহুদিদের সাপ্তাহিক প্রার্থনার দিনে ফজর, জোহর, আসর ও মাগরিবের আজান দেয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

হেব্রনে বসবাস করেন কমপক্ষে দুই লাখ ফিলিস্তিনি। পাশাপাশি বসবাস করেন কয়েকশ’ অতি উগ্র জাতীয়তাবাদী ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী। তাদের এই এলাকা সেনাবাহিনী দিয়ে প্রচণ্ড রকমভাবে সুরক্ষিত। ১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে পশ্চিম তীর দখল করে নেয় ইসরাইল। তারপর থেকে সেখানে ডজন ডজন অবৈধ বসতি স্থাপন করেছে তারা। তাতে বসবাস করেন প্রায় ৫ লাখ মানুষ। সূত্র : আলজাজিরা ও ডেইলি সাবাহ

captcha