IQNA

সিরিয়ার পরিস্থিতি:

জোলানির পলায়নের সম্ভাবনা থেকে শুরু করে ইসরায়েলের হামলার নিন্দায় ১১ দেশের বিবৃতি পর্যন্ত

19:47 - July 18, 2025
সংবাদ: 3477724
ইকনা- আল-মায়াদিন টেলিভিশন জানিয়েছে, ইসরায়েলের সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে সাম্প্রতিক হামলা বেড়ে যাওয়ার পর সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান আহমদ আল-শারাআ (জোলানি) পরিবারসহ দেশ ত্যাগ করেছে, ।

এ বিষয়ে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় কোনো উৎস এখনো কিছু বলেনি। তবে আলজাজিরা (যা জোলানির সরকারপন্থী এবং কাতারের সমর্থনে কাজ করে) জোলানির পক্ষ থেকে আমির কাতারকে ধন্যবাদ জানানোর সংবাদ প্রচার করেছে।

 

আল-মায়াদিন আরও জানিয়েছে যে, একটি সামরিক দল সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় রেডিও ও টেলিভিশন ভবনে প্রবেশ করে সেখানকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

 

এছাড়া তারা জানিয়েছে, একটি সন্ত্রাসী হামলায় জোলানির সরকারের তিনজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা টার্গেট হন, যাদের মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারহাফ আবু কাসারা রয়েছেন।

ইসরায়েলি হামলা এবং বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলের একটি বিমান হামলায়, তাদমুর থেকে হোমস যাওয়ার পথে একটি উপজাতি সশস্ত্র বাহিনীর গাড়িবহর ধ্বংস হয়েছে।

 

একই সময়ে সুইদা প্রদেশে পুরোপুরি বিদ্যুৎ, ফোন এবং ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, যা গভীর নিরাপত্তা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

 

এই বিচ্ছিন্নতার পেছনে ধারণা করা হচ্ছে, সুইদা সীমান্তে সেনাবাহিনীর একটি বড় আকারের অভিযানের প্রস্তুতি চলছে।

 

যুক্তরাষ্ট্র: ‘সুইদায় সহিংসতা নিন্দনীয়, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন’

 

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ডরোথি শেই বলেছেন: “আমরা সুইদায় সহিংসতা জোরালোভাবে নিন্দা করি। সব পক্ষকে পিছু হটে অর্থবহ সংলাপে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাই যাতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হয়।”

 

তিনি বলেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে সিরিয়ায় উত্তেজনা কমাতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। আমরা সকল গোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করছি যাতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের হামলাকে সমর্থন করে না এবং সিরিয়া-ইসরায়েলের উচ্চপর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করছে।

 

এরদোয়ান: ইসরায়েল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র

 

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন: “ইসরায়েল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র, যেটি কোনো আইন মানে না, কোনো নীতি নেই এবং বর্বর।”

তিনি বলেন, তুরস্ক কখনোই সিরিয়ার বিভাজন মেনে নেয়নি এবং ভবিষ্যতেও নেবে না। যারা ইসরায়েলের উপর নির্ভর করছে তারা বড় ভুল করছে।

 

তিনি আরও বলেন, সিরিয়ার স্থিতিশীলতা গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে, আর তা না হলে প্রতিটি দেশের ওপর এর বোঝা পড়বে।

১১ দেশের যৌথ বিবৃতি: ইসরায়েলের হামলার নিন্দা

 

জর্ডান, আমিরাত, বাহরাইন, তুরস্ক, সৌদি আরব, ইরাক, ওমান, কাতার, কুয়েত, লেবানন এবং মিশর সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক আলোচনার পর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়: “আমরা সিরিয়ার নিরাপত্তা ও একতা সমর্থন করি এবং যেকোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ (বিশেষত ইসরায়েলের) নিন্দা জানাই।”

তারা আরও বলেন, সুইদা সংকট সমাধানে এবং আহমদ আল-শারাআর (জোলানি) মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।

 

সিরিয়ার আরব গোত্রগুলোর পাল্টা জবাব

 

সিরিয়ার আরব উপজাতিদের উচ্চ পরিষদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে:

 

> “সুইদায় আমাদের গোত্রের মানুষদের ওপর গণহত্যা ও নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।”

তারা জানায়, সিরিয়ার ৪১টির বেশি উপজাতি এবং বাইরের গোত্র (ইরাক, জর্ডান, লেবানন) থেকে ৫০ হাজারের বেশি যোদ্ধা সুইদার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে, আরও হাজার হাজার আসার পথে।

 

গতকাল ‘হিকমাত আল-হাজরি’ নামে এক দ্রুজ নেতা কর্তৃক পরিচালিত হামলায়, ১০০ জন নিহত ও হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ইসরায়েলি স্থলবাহিনীর অগ্রগতি ও সিরিয়ার সামরিক লক্ষ্যবস্তু

সিরীয় সূত্র বলছে, ইসরায়েলের স্থলবাহিনী এখন দামেস্কের মাত্র ১০ কিমি দূরে পৌঁছে গেছে।

 

বুধবার (২৫ তির) ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান সিরিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস ‘কাসর আল-শাআব’ ও সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে হামলা চালায়। একই দিন সকালে ২টি ড্রোনেও সদরদপ্তরে হামলা হয়।

বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর থেকে সিরিয়ায় দ্রুজ ও জোলানি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ প্রায়শই হয়ে আসছে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের আশঙ্কা, জোলানির নেতৃত্বাধীন তাহরির আল-শামের চরমপন্থী দখলদার সরকার একটি স্বৈরশাসনে পরিণত হতে যাচ্ছে।

 

অন্যদিকে, ইসরায়েল বিভিন্ন হামলার মাধ্যমে ও সংখ্যালঘুদের সমর্থনে সিরিয়াকে দুর্বল ও বিভক্ত করে তুলতে চাচ্ছে। 4294920#

 

captcha