ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৌলিক অধিকার সংস্থা (FRA)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইইউ-র ১৩টি দেশের মুসলমানদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ ব্যক্তি দৈনন্দিন জীবনে বৈষম্যের অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। তুলনায়, ২০১৬ সালে এই হার ছিল ৩৯ শতাংশ। এই বৈষম্য বিশেষ করে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, আবাসন ও জনপরিসরে বেশি দেখা গেছে। এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক নীতিমালার বিরুদ্ধাচরণ করে, যার মধ্যে জাতিসংঘের "নারী নির্যাতন ও বৈষম্য বিলোপ" কনভেনশনও রয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি আরব লীগের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উত্থাপন করা হয়। সেখানে বলা হয়, এই পরিসংখ্যানগুলো দেখায় যে ইউরোপে মুসলমানদের অন্তর্ভুক্তির (integration) প্রচলিত নীতিগুলো কার্যকরতা হারাচ্ছে এবং এখন সময় এসেছে নতুন, আরও বিস্তৃত ও কার্যকর কৌশল অনুসন্ধানের।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আমাদের অঞ্চল, যা ঐতিহাসিকভাবে সহাবস্থান, চিন্তাগত বৈচিত্র্য এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার এক অনন্য পরিসর তৈরি করেছে, সেই ঐতিহ্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি আধুনিক মডেল তৈরি করতে পারে। এই মডেল হবে সময়োপযোগী, যেখানে মুসলিম প্রবাসীদের প্রতিভা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, কনটেন্ট নির্মাতা ও প্রভাবশালীদের সম্পৃক্ত করা হবে এবং তা পশ্চিমা জনমত ও চিন্তাশীল সংসদ সদস্য, নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে খোলামেলা সংলাপে ভিত্তি করে নির্মিত হবে।
ড. আমিরাহ আল-ফাদিল-এর মন্তব্য: আইসেস্কো-র উপ-মহাপরিচালক ড. আমিরাহ আল-ফাদিল এই সম্মেলনে বলেন:
“ইসলামভীতি (Islamophobia) আর শুধুমাত্র মুসলমানদের উদ্বেগ নয়; এটি এখন একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, যা সমাজগুলোর স্থিতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে দুর্বল করে।”
তিনি বলেন, এটি কেবল একটি একাডেমিক শব্দ নয়; বরং বাস্তব ও ভয়াবহ প্রভাবসহ এক সামাজিক বাস্তবতা। ইসলামভীতির মূল কারণ হলো এমন এক প্রভাবশালী বক্তব্য ও প্রচার, যা ইসলামকে সহিংস ধর্ম হিসেবে উপস্থাপন করে এবং গণমাধ্যমে ভুলভাবে চিত্রিত করে। এর ফলে সমাজে চরমপন্থা ও সহিংসতার পরিবেশ তৈরি হয় এবং সাংস্কৃতিক সংলাপ বাধাগ্রস্ত হয়।
প্রস্তাবিত করণীয়:
সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও বিশ্লেষকরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান যেন তারা ইসলামভীতির বিরুদ্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নেয় এবং বৈষম্যহীন, সহনশীল সমাজ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। 4295169