IQNA

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার তোয়াক্কা না করে

জায়নবাদী বাহিনী ‘নওগান আস-সামুদ’-এর শেষ জাহাজ আটক করল

19:57 - October 03, 2025
সংবাদ: 3478181
ইকনা- ইসরায়েলি নৌবাহিনী মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজা উপত্যকার দিকে যাত্রা করা ‘নওগান আস-সামুদ’-এর শেষ জাহাজটিকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় থামিয়ে আটক করেছে।
ইকনা সূত্রে আল-জাজিরা জানিয়েছে, এ ঘটনার পর পুরো ৪২টি নৌকা ও জাহাজ এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আজ ভোরে ইসরায়েলি নৌবাহিনী ‘মারিনেত’ নামের জাহাজটিকে আটক করে, যা ছিল গাজার অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্যে নওগানের শেষ সক্রিয় জাহাজ।
এর আগে ৪২টি নৌকা ও জাহাজ নিয়ে গঠিত এই নওগান, যাতে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক কর্মী ও মানবিক সহায়তা ছিল, গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল।
নওগান আস-সামুদ-এর কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলের এ পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও প্রকাশ্য “সমুদ্র দস্যুতা” হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে গাজার অবরোধ পুরোপুরি প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
 
নওগান ‘আস-সামুদ’-এ ইসরায়েলি হামলায় আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজা অভিমুখী এই নওগানে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর হামলার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আখ্যা দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান জাতিগত নির্মূল ও গণহত্যার কারণে ইসরায়েলকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের যোগাযোগ দপ্তরের প্রধান বলেছেন, ইসরায়েলের এ হামলা গ্রহণযোগ্য নয়। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে “সন্ত্রাসী কার্যকলাপ” বলে অভিহিত করেছে, যা নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করেছে। আঙ্কারা জানিয়েছে, আটক হওয়া তাদের নাগরিক ও অন্যান্যদের মুক্তির জন্য সবধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ফিলিস্তিনে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রানচেসকা আলবানিজ পশ্চিমা দেশগুলোর নীরবতা ও ইসরায়েলের সঙ্গে যোগসাজশকে “লজ্জাজনক” বলে মন্তব্য করেছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ হামলাকে “ক cowardly বা কাপুরুষোচিত” আখ্যা দিয়ে আটক সব কর্মীর অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছেন।
কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নওগানে থাকা তাদের দুই নাগরিকসহ সকলে আটক হওয়ায় ইসরায়েলকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি করেছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইসরায়েলের এ হামলা ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ও বৈশ্বিক বিবেকের প্রতি সম্পূর্ণ অবজ্ঞা প্রদর্শন করে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, মালয়েশিয়া ইসরায়েলের বিচারের জন্য সব ধরনের আইনগত পথ ব্যবহার করবে।
 ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনাটিকে “কাপুরুষোচিত সমুদ্র দস্যুতা” বলে উল্লেখ করেছে এবং বলেছে, মানবিক সহায়তা বন্ধ করা হলো গাজার জনগণকে অনাহারে রাখার মাধ্যমে গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার এক যুদ্ধাস্ত্র। ভেনেজুয়েলা ফিলিস্তিনি জনগণ ও মানবতার পক্ষে জীবন ঝুঁকিতে ফেলা কর্মীদের প্রতি পূর্ণ সংহতি ঘোষণা করেছে।
 
বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ
একইসাথে ইউরোপ ও আরব বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বার্সেলোনা, রোম, মিলান, এথেন্স, ব্রাসেলস, প্যারিস, বার্লিন, ইস্তাম্বুল ও তিউনিসে মানুষ ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদে ও নওগান ‘আস-সামুদ’-এর প্রতি সমর্থনে রাস্তায় নেমেছে। 4308483#
 
captcha