IQNA

হাদিসে কিসা আয়াতে তাতহীর ও আয়াতে মোবাহেলার তাফসীর

22:41 - August 28, 2017
1
সংবাদ: 2603703
হাদিসে কিসার মাধ্যমে আমরা আহলে বাইত ও ইমামতের পরিচয় জানতে পারি। আর হাদিসে কিসার উপর আমল করে অনেক বিভ্রান্ত ফেরকার মানুষ সঠিক পথে হেদায়াত হতে পারেন।


শাবিস্তানের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: হাদিসে কিসা হচ্ছে হাদিসে কুদসি আর এই হাদিসে মহানবী(সা.), ইমাম আলী(আ.) মা ফাতিমা(সা.) ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন(আ.)-এর বিশেষ ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে।

আয়াতে তাতহীরে (أَهْلَ البَيْت) দ্বারা উদ্দেশ্য "আহলে বায়েত” তথা মহানবী হযরত মুহাম্মাদ(সা.) ইমাম আলী (আ.), ইমাম হাসান(আ.), ইমাম হুসাইন (আ.)ও হযরত ফাতেমা(আ.), নবীর স্ত্রীগণ তার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা আয়াতে পুংলিঙ্গের "মীম” দ্বারা সম্বোধন ব্যবহার করা হয়েছে, যদি নবীর স্ত্রীগণ উদ্দেশ্য হত তাহলে স্ত্রী লিঙ্গের "নূন” ব্যবহার করা হত। এ সম্পর্কে সে "হাদিসুল কিসা” নামে একটি হাদিস রয়েছে। উক্ত আয়াত ও হাদিস আমাদের বারো ইমামকে মাসুম ও নিষ্পাপ প্রমাণ করে।

অতঃপর তোমার নিকট যখন জ্ঞান (কুরআন) এসে গেছে, এরপরও যদি কেউ (খ্রিস্টান) তোমার সাথে তার (ঈসার) সম্বন্ধে তর্ক-বিতর্ক করে, তবে বল, ‘(আচ্ছা, ময়দানে) এস, আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের, আমাদের নারীদের এবং তোমাদের নারীদের, এবং আমাদের সত্তাদের এবং তোমাদের সত্তাদের।’

রাসূল (সা.) হযরত ঈসা (আ.) সম্বন্ধে নাজরানের খ্রিস্টানদের অনেক বুঝালেন যে, তাঁকে যেন আল্লাহর পুত্র না বলে, তিনি হযরত আদম (আ.)-এর উদাহরণও দিলেন। কিন্তু তারা কোন কথাই শুনল না। অবশেষে তিনি আল্লাহর আদেশে পরস্পরের বিরুদ্ধে দোয়া ও মিথ্যাবাদীদের ওপর অভিশাপ বর্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন, যাকে ‘মুবাহিলা’ বলে। স্থির করা হল যে, নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে উভয়ে নিজ নিজ পুত্রদের, নারীদের (কন্যা সন্তানদের) এবং তাদের নিজেদের ‘সত্তা’ বলে গণ্য হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একত্র হবে এবং প্রত্যেকে অপরের প্রতি অভিসম্পাত ও আল্লাহর শাস্তি কামনা করবে।  মুবাহিলার দিন সাহাবীরা সুসজ্জিত হয়ে রাসূলের গৃহে এ আশায় জমা হলেন যে, হয়ত রাসূল তাঁদেরকে সাথে নেবেন। কিন্তু তিনি প্রত্যুষে হযরত সালমানকে একটি লাল কম্বল ও চারটি কাঠের খুঁটি দিয়ে সেই ময়দানে একটি ছোট সামিয়ানা টাঙাতে পাঠিয়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইমাম হুসাইনকে কোলে নিয়ে ইমাম হাসানের হাত ধরলেন এবং হযরত ফাতিমাকে নিজের পেছনে, আর হযরত আলীকে তাঁর পেছনে রাখলেন। অর্থাৎ ছেলেদের স্থানে তিনি নাতিদের, নারীদের স্থানে নিজ কন্যাকে এবং ‘সত্তা’ বলে গণ্যদের স্থানে আলীকে নিলেন এবং দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! প্রত্যেক নবীর আহলে বাইত থাকে, এরা আমার আহলে বাইত। এদের সকল দোষ-ত্রুটি হতে মুক্ত ও পাক-পবিত্র রেখ।’ বস্তুত তিনি এরূপ ভঙ্গীতে ময়দানে পৌঁছলে খ্রিস্টানদের নেতা আকব তা দেখে বলল, ‘আল্লাহর কসম, আমি এমন নূরানী চেহারা দেখছি যে, যদি এ পাহাড়কে নিজ স্থান হতে সরে যেতে বলেন, তবে অবশ্যই সরে যাবে। সুতরাং মুবাহিলা হতে হাত গুটিয়ে নেওয়াই কল্যাণকর, অন্যথায় কিয়ামত অবধি খ্রিস্টানদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।’ পরিশেষে তারা জিযিরা কর দিতে সম্মত হল। তখন মহানবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কসম! এরা যদি মুবাহিলা করত তবে আল্লাহ তাদের বানর ও শুকরে রূপান্তরিত করে দিতেন এবং ময়দান আগুনে পরিণত হয়ে যেত আর নাজরানের একটি প্রাণীও, এমনকি পাখি পর্যন্ত রক্ষা পেত না।’ এটা হযরত আলী (আ.)-এর একটি অতি উঁচু স্তরের ফযিলত যে, তিনি আল্লাহর আদেশে রাসূলের ‘নাফস’ (অনুরূপ সত্তা) সাব্যস্ত হলেন এবং সমুদয় নবীর থেকে শ্রেষ্ঠ হলেন। (তাফসীরে জালালাইন, বায়দ্বাভী, ১ম খণ্ড, পৃ. ১১৮, মিশর মুদ্রণ)
প্রকাশিত: 1
পর্যালোচনা করা হচ্ছে: 0
প্রকাশযোগ্য নয়: 0
Azebbar Rahaman
0
0
Subhan allah
captcha