IQNA

ট্যাক্স কেলেঙ্কারির যে ৫ জায়গায় ধরা ট্রাম্প

0:02 - September 30, 2020
সংবাদ: 2611560
তেহরান (ইকনা): মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র পাঁচ সপ্তাহের মতো। এর মধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যাক্সফাঁকির প্রতিবেদন প্রকাশ করে আলোচনার ঝড় তুলেছে প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ধনকুবের হয়েও গত ১৮ বছরের মধ্যে ১১ বছরই এক ডলারও ট্যাক্স দেননি এ রিপাবলিকান নেতা।

২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিল তার সফল ব্যবসায়ী ইমেজ। তবে পুনর্নির্বাচনের আগে সেই পরিচয়টাই এবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে ট্যাক্সফাঁকির অভিযোগ ওঠায়।

যদিও নিউইয়র্ক টাইমসের এসব তথ্য ‘ভুয়া’ দাবি করে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে তাদের প্রতিবেদনে এমন কিছু তথ্য উঠে এসেছে, যেগুলোকে উড়িয়ে দেয়া এতটা সহজ হবে না তার জন্যে।

একনজরে দেখে নেয়া যাক ট্রাম্পের ট্যাক্স কেলেঙ্কারির মূল পাঁচটি পয়েন্ট-

২০১৬ ও ১৭ সালের ট্যাক্স মাত্র ৭৫০ ডলার
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যমতে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বছর ২০১৬ সাল এবং হোয়াইট হাউসে প্রবেশের পর ২০১৭ সালে মাত্র ৭৫০ ডলার করে ট্যাক্স পরিশোধ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

পত্রিকাটি জানিয়েছে, গত ১৮ বছরে মোট ৯৫ মিলিয়ন ডলার ট্যাক্স পরিশোধ করেছেন এ রিপাবলিকান নেতা। তবে আশ্চর্যজনকভাবে ফেডারেল ট্যাক্স রিফান্ড সুবিধায় ৭২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারই ফেরত নিয়েছেন তিনি। এছাড়া, স্টেট ও লোকাল রিফান্ডের আরও ২১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার পকেটে পুরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনকুবেররা ট্যাক্স দিয়েছেন গড়ে ২৫ মিলিয়ন ডলার। সেখানে একই সময়ে ট্রাম্প দিয়েছেন মাত্র ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার করে।

ব্যবসায়িক ব্যয়ের খাতায় বিলাসী জীবনযাত্রার হিসাব
বিলাসবহুল বাড়ি, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্য চুলের স্টাইলের পেছনে ৭০ হাজার ডলার ব্যয়- এসব কিছুই ব্যবসায়িক খরচের হিসাবে দেখিয়ে ট্যাক্সছাড় নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ব্যবসায় অর্থনৈতিক ক্ষতি
জমকালো হোটেল, গলফ কোর্স ও রিসোর্টগুলোকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই তার ব্যবসায়িক সাফল্যের মুকুট হিসেবে দেখেন। তবে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এসব সম্পত্তির পেছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢালতে হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।

পত্রিকাটির দাবি, ২০০০ সাল থেকে এপর্যন্ত গলফ কোর্সগুলোর কারণে ৩১৫ মিলিয়ন ডলার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ট্রাম্পের। এছাড়া, ওয়াশিংটন ডিসির ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের পেছনেও ৫৫ মিলিয়ন ডলার হারিয়েছেন তিনি।

বিদেশি অর্থ
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করতেই বিদেশি সরকার, মধ্যস্থতাকারী, রাজনীতিবিদরা তার সম্পত্তিগুলোতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে শুরু করেন। হুট করে এত বেশি বিদেশি অর্থ আসায় স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টির বৈধতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন এ রিপাবলিকান নেতা।

নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যমতে, আগের তুলনায় ২০১৫ সাল থেকে ট্রাম্পের মার-এ-ল্যাগো রিসোর্টের শুধু সদস্যপদ থেকেই প্রতিবছর অন্তত পাঁচ মিলিয়ন ডলার বেশি আয় হচ্ছে। তার ওয়াশিংটনের হোটেলে ২০১৭ সালে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ডলারের বেশি ব্যয় করেছে বিলি গ্রাহাম এভানজেলিস্টিক অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি খ্রিষ্টান সংস্থা।

বিপুল অর্থ এসেছে ট্রাম্পের বিদেশি প্রকল্পগুলো থেকেও। এর মধ্যে ফিলিপাইন থেকে তিন মিলিয়ন, ভারত থেকে ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন এবং তুরস্ক থেকে গিয়েছে অন্তত এক মিলিয়ন ডলার।

শিগগিরই ঋণখেলাপিতে পরিণত হবেন ট্রাম্প
বিপুল পরিমাণ দেনায় ডুবে থাকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প শিগগিরই বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপে পড়তে যাচ্ছেন।

নিউইয়র্ক টাইমস জনিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ৪২১ মিলিয়ন ডলার ঋণ রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের, যার বেশিরভাগই আগামী চার বছরের মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হবে। এর মধ্যে নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ার বন্ধক রেখে নেয়া ১০০ মিলিয়ন ডলার খেলাপি হচ্ছে ২০২২ সালেই।
সূত্র: আল জাজিরা

captcha