IQNA

গুনাহ পরিচিতি / ৩

কোরআনে গুনাহের কিছু অর্থ

15:26 - October 31, 2023
সংবাদ: 3474587
তেহরান (ইকনা):  পবিত্র কুরআন ও নবী (সা.) এবং আমাদের ইমামগণ (আ.) ভাষায়, গুনাহের কথা বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, যার প্রত্যেকটি গুনাহের কুফলের একটি অংশ প্রকাশ করে এবং গুনাহের বৈচিত্র্য প্রকাশ করে।

পবিত্র কুরআন ও নবী (সা.) এবং আমাদের ইমামগণ (আ.) ভাষয়, গুনাহের কথা বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, যার প্রত্যেকটি গুনাহের কুফলের একটি অংশ প্রকাশ করে এবং গুনাহের বৈচিত্র্য প্রকাশ করে।
কুরআনে গুনাহ সম্পর্কে যে শব্দগুলো বলা হয়েছে তা হলো:


1-ذنب ۲- معصیت ۳- اثم ۴- سیئه ۵- جرم ۶- حرام ۷- خطیئه‌ ۸- فسق ۹- فساد ۱۰- فجور ۱۱- منكر ۱۲- فاحشه ۱۳- خبث ۱۴- شر ۱۵- لمم ۱۶- وزر و ثقل ۱۷- حنث

এই শব্দগুলির মধ্যে ১০টি আগে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং এখন বাকী ৭টির অর্থ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো:
১১. মুনকার (منكر) মূলত এনকার থেকে এসেছে যার অর্থ অস্বীকার বা অপরিচিত। কারণ গুনাহ ফেতরাত ও বিবেকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সুপরিচিত নয় এবং ফেতরাত ও বিবেক একে কুৎসিত ও বিজাতীয় মনে করে ; এই শব্দটি পবিত্র কুরআনে 16 বার এসেছে এবং বেশিরভাগই মন্দের নিষেধাজ্ঞার শিরোনামে উল্লেখ করা হয়েছে।
১২. ফাহেশা (فاحشه) যে সকল কথা ও কাজ নিঃসন্দেহে কুৎসিত সেসকল কথা ও কর্মকে ফাহেশা তথা অশ্লীল বলা হয়। কিছু ক্ষেত্রে, এটি অত্যন্ত কুৎসিত, লজ্জাজনক এবং ঘৃণ্য কাজ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়; এই শব্দটি কুরআনে ২৪ বার উল্লেখ করা হয়েছে।
১৩. খাবাস (خبث) প্রত্যেক কুৎসিত ও অপ্রীতিকর জিনিসকে খাবাস বলে। এর বিপরীতে "তাইয়্যেব" যার অর্থ পাক তথা নির্মল ও আনন্দদায়ক। এই শব্দটি কুরআনের ১৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে।
১৪. শার্র (شرّ) মানে যে কোনো কুশ্রীতা যা মানুষ ঘৃণা করে এমন জিনিশ এবং এই শব্দের বিপরীতে "খাইর", যার অর্থ এমন কিছু যা মানুষের পছন্দ করে। এই শব্দটি প্রায়ই ঝামেলা এবং সমস্যার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে কখনও কখনও এটি গুনাহের জন্যও ব্যবহৃত হয়, যেমন সূরা জিলজালের ৮ নম্বর আয়াতে এটি গুনাহ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
১৫.  লামাম (لمم) এর অর্থ পাপের কাছাকাছি যাওয়া। ছোট গুনাহের কাজে ব্যবহৃত হয়। পবিত্র কুরআনে একবারই এর উল্লেখ আছে।
১৬. ওয়াজর  (وزر) অর্থ ভারী এবং এটি বেশিরভাগই অন্যের গুনাহ বহন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। ওয়াজির «وزیر»  শব্দটি মূলত ওয়াজর থেকে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ওয়াজির তথা"মন্ত্রী" এমন একজন যিনি সরকারের ভারী কাজ বহন করবেন। এই শব্দটি কুরআনের ২৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে।
কখনও কখনও কুরআনে, ছাকল " ثقل " শব্দটি যার অর্থ ভারী, গুনাহের জন্য ব্যবহৃত হয়। সূরা আনকাবুতের ১৩ নম্বর আয়াতে এই বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
১৭. হিনছ (حنث)  মূলত, এর অর্থ অবৈধ এবং প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা। অঙ্গীকারের পর  চুক্তি ভঙ্গ এবং লঙ্ঘনের গুনাহ হিসেবে এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এই শব্দটি কুরআনে দুবার উল্লেখ করা হয়েছে। 
এই সতেরোটি শব্দের প্রতিটি গুনাহের মন্দ প্রভাবের একটি অংশ প্রকাশ করে এবং গুনাহের বিভিন্নতা নির্দেশ করে এবং প্রতিটি একটি বিশেষ বার্তা এবং একটি বিশেষ সতর্কবাণী দিয়ে মানুষকে গুনাহ করার ব্যাপারে সতর্ক করে।

ট্যাগ্সসমূহ: কোরআন ، ইমাম ، গুনাহ ، মুনকার
captcha