IQNA

ফ্রান্সে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ও শিকড়-গেড়া ঘৃণার বিস্তার

11:12 - September 17, 2025
সংবাদ: 3478078
ইকনা- এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ফ্রান্সে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ব্যাপক, বহু-মাত্রিক এবং গভীরভাবে শিকড়-গেড়ে বসেছে।
ইকনা'র প্রতিবেদনে, আলজাজিরার বরাতে বলা হয়েছে—ফ্রান্সের গ্র্যান্ড মসজিদ অব প্যারিস–এর অনুরোধে Ifop গবেষণা সংস্থা এই সমীক্ষাটি পরিচালনা করে এবং সেটি একচেটিয়াভাবে লিবারাসিয়ঁ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে উঠে এসেছে যে ফ্রান্সে মুসলমানবিরোধী ঘৃণা এক উদ্বেগজনক স্তরে পৌঁছেছে।
সমীক্ষায় ফ্রান্সের বড় শহরগুলোতে বসবাসরত ১০০৫ জন মুসলমানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং এতে পদ্ধতিগত, বহুমাত্রিক ও গভীর বৈষম্য স্পষ্ট হয়েছে।
ফলাফল অনুযায়ী, ফ্রান্সের ৮২ শতাংশ মুসলমান মনে করেন যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণাচর্চা আজকের ফ্রান্সে একটি ব্যাপক ঘটনা।
অধিকাংশ উত্তরদাতা (৬৬ শতাংশ) জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে তারা বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন—যা সাধারণ জনগণের তুলনায় তিনগুণ বেশি।
জরিপে দেখা গেছে, তরুণ মুসলমানরা বিশেষভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ২৫ বছরের কম বয়সী ৭৬ শতাংশ মুসলমান বলেছেন, তারা সরাসরি বর্ণবাদী অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন।
গবেষণাটি ধর্মীয় কারণকেই প্রধান বৈষম্যের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ শতাংশ মনে করেন, তাদের ধর্মই বৈষম্যের মূল কারণ। এমনকি অ-ধর্মীয় মুসলমানরাও বাদ যাচ্ছেন না—৪১ শতাংশ জানিয়েছেন, কেবল মুসলমান পরিচয়ের কারণেই তারা বৈষম্যের শিকার হন।
এই ধরনের বর্ণবাদ ফ্রান্সের সব সামাজিক স্তরে বিরাজমান, এমনকি মধ্যবিত্ত ও সমাজে একীভূত নাগরিকদের মধ্যেও। যে জায়গাগুলোতে মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার কথা—যেমন সরকারি সেবা কেন্দ্র, বিদ্যালয় ও পুলিশ—সেখানেও বৈষম্য দেখা গেছে।
এ বৈষম্য কর্মসংস্থান ও বাসস্থানের ক্ষেত্রেও প্রকট। জরিপে অংশ নেওয়া ৫১ শতাংশ জানিয়েছেন চাকরির জন্য আবেদন করার সময় এবং ৪৬ শতাংশ জানিয়েছেন বাড়ি ভাড়ার আবেদনকালে তারা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। অথচ অন্যান্য ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রে এ হার যথাক্রমে মাত্র ৭ ও ৬ শতাংশ।
এই পরিস্থিতি মুসলমানদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জরিপ অনুযায়ী, ৬৪ শতাংশ মুসলমান ধর্মীয় স্বাধীনতা সীমিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবং ৫১ শতাংশ শারীরিক হামলার ভয় পাচ্ছেন। হিজাবধারী নারীদের ক্ষেত্রে এ ভয়ের হার ৬৬ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
এই অনিরাপত্তার মুখে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৬ শতাংশ বলেছেন, তারা অভিযোগ করার কথাও ভাবেন না। আরও কমসংখ্যক মানুষ কোনো সংগঠন কিংবা এমনকি মসজিদের সাথেও যোগাযোগ করতে ইচ্ছুক নন। 4305404#
 
captcha