ইকনা ও আনফাস প্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইস পিপলস পার্টি (SVP) শিক্ষিকাদের জন্য হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যা বর্তমানে বামপন্থিদের কঠোর সমালোচনা ও মুসলিম নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের আশঙ্কা নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
প্রস্তাবিত এই আইন অনুযায়ী, স্কুলে পোশাক বা ব্যক্তিগত সামগ্রীর ওপর কোনো ধর্মীয় প্রতীক প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হবে। এই বিষয়টি প্রস্তাবদাতাদের নিরপেক্ষতা এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীকের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে কি না—তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
আন্দ্রেয়া শিক, সুইস সমাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পার্টির এক সদস্য, বলেছেন—এই প্রস্তাব “মুসলিম নারীদের বিরুদ্ধে একতরফা নীতি।” তিনি আরও বলেন, “যদি হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়, তবে সমতার স্বার্থে খ্রিস্টীয় প্রতীক যেমন ক্রসও নিষিদ্ধ করতে হবে।”
এই বিতর্ক শুরু হয় এমন কয়েকটি ঘটনার পর, যেখানে সুইজারল্যান্ডের অন্য ক্যান্টনগুলোতে হিজাব পরার কারণে কয়েকজন শিক্ষিকা তাদের চাকরি হারিয়েছেন। যদিও কিছু ক্যান্টন শিক্ষার্থীদের হিজাব পরার অনুমতি দেয়, অন্যগুলো শিক্ষকদের জন্য ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
১৯৯৭ সালের ফেডারেল আদালতের এক রায়, যা হিজাব পরার কারণে শিক্ষিকাদের চাকরিচ্যুত করা বৈধ বলে ঘোষণা করেছিল, এখনও কার্যকর রয়েছে।
এই বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে এই কারণে যে, আইনটি অন্য ধর্মীয় প্রতীক—যেমন ক্রস বা ধর্মীয় পোশাক—এর ওপরও প্রয়োগ হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। সমাজতান্ত্রিকরা দাবি করছেন, সব ধর্মের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে এবং কেবল মুসলিম নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা কেন্দ্রীভূত করা উচিত নয়।
বার্ন সরকার নিশ্চিত করেছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা “সব ধরনের ধর্মীয় বিশ্বাসভিত্তিক প্রতীক বা পোশাক”-এর ওপর প্রযোজ্য হবে। তবে, অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীকের ক্ষেত্রে এই আইন কীভাবে প্রয়োগ করা হবে—সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
এখন প্রশ্ন রয়ে গেছে—সুইজারল্যান্ড কি এই নিষেধাজ্ঞা কেবল শিক্ষিকাদের হিজাবের ওপরই প্রয়োগ করবে, নাকি অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীক যেমন খ্রিস্টীয় ক্রস ও ইহুদি প্রতীকগুলোর ক্ষেত্রেও একই আইন কার্যকর হবে, যাতে সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ধর্মীয় সমতা নিশ্চিত হয়? 4309774#