ইকনা সূত্রে ফ্রান্স ২৪-এর বরাত দিয়ে জানানো হয়, অভিযুক্তরা প্যারিসের মসজিদের সামনে শুকরের মাথা রেখে উত্তেজনা ছড়ানোর মতো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল।
সার্বিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঘৃণাপ্রচার চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে এবং এ ঘটনায় একটি "বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার" সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সার্বীয় নাগরিকদের একটি দলকে আরেকজন অভিযুক্তের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, যিনি ওই বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার নির্দেশে কাজ করছিলেন এবং বর্তমানে পলাতক আছেন।
এতে বলা হয়, তাদের উদ্দেশ্য ছিল এমন চিন্তাভাবনা ছড়ানো, যা বিদ্বেষ, বৈষম্য এবং ভিন্নতার ভিত্তিতে সহিংসতাকে উৎসাহিত করে।
গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্যারিসের বিভিন্ন মসজিদ ও আশপাশের এলাকায় নয়টি শুকরের মাথা ফেলে রাখা হয়, যা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ঘৃণার কারণে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। এর আগে গত এপ্রিল মাসে, প্যারিসে অবস্থিত হলোকাস্ট স্মৃতিস্তম্ভ, তিনটি সিনাগগ এবং একটি রেস্টুরেন্ট সবুজ রঙে বিকৃত করা হয়েছিল।
এরপর থেকে ফ্রান্সে তিনজন সার্বকে আটক করে তদন্তের অংশ হিসেবে অভিযুক্ত ও কারারুদ্ধ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ১১ জনকে জাতিগত বৈষম্য ও গুপ্তচরবৃত্তিসহ নানা অভিযোগে আদালতে হাজির করা হবে।
এই গ্রেপ্তার অভিযান সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড ও রাজধানী থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ভেলিকা প্লানায় দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে চালানো হয়।
ফ্রান্সে সাম্প্রতিক ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিক নিন্দা ও তদন্ত শুরুর আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ। এগুলো খুবই সীমিত পর্যায়ে রয়ে গেছে এবং ফরাসি সমাজে ক্রমবর্ধমান সেই প্রবণতার বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে টার্গেট করা হচ্ছে।
এ ঘটনাগুলো এমন এক সময়ে ঘটছে যখন ফ্রান্সে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণাজনিত অপরাধ বাড়ছে। ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ফ্রান্সে মোট ১৪৫টি ইসলামবিদ্বেষী হামলার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা, হুমকি, এমনকি হত্যাও রয়েছে। এর মধ্যে গত মে মাসে মালির নাগরিক আবুবকর সিসে হত্যাকাণ্ডও উল্লেখযোগ্য।
এদিকে, জনমত জরিপ সংস্থা IFOP-এর করা এবং দৈনিক লিবেরাসিওঁ প্রকাশিত একটি জরিপে দেখা গেছে, প্রতি তিনজন ফরাসি মুসলমানের মধ্যে দুইজন বলেছেন, তারা গত পাঁচ বছরে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন। 4308037#