ইকনার প্রতিবেদন অনুযায়ী, যা কায়রো ২৪ থেকে উদ্ধৃত, আজহার মনিটরিং সেল বিবিসির প্রকাশিত এক তদন্তমূলক প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
তদন্তে বলা হয়, একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা গাজায় সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। অথচ এই সংস্থার কয়েকজন সদস্য মোটরসাইকেল চালকদের একটি গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত, যারা নিজেদেরকে “Infidels” (কাফার) বলে পরিচয় দেয় এবং যাদেরকে ইসরায়েল নিয়োগ করেছে। এই গ্রুপ একটি আমেরিকান চরমপন্থী সংগঠন, যা মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ অবস্থানের জন্য পরিচিত।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, অন্তত ১০ জন এই গ্রুপের সদস্য গাজার নিরাপত্তা টিমে কাজ করছে, যার মধ্যে ৭ জন নেতৃত্বস্থানীয় পদে রয়েছে।
আজহার মনিটরিং সেল জানায়, “কাফার” গ্রুপটি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা এমন এক আদর্শবাদকে সমর্থন করে যা নিজেদেরকে আধুনিক যুগের “ক্রুসেডারদের” ধারাবাহিকতা মনে করে। তারা ক্রুসেড যুদ্ধ থেকে অনুপ্রাণিত প্রতীক ব্যবহার করে এবং নিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে মুসলমানবিরোধী ঘৃণাত্মক বক্তব্য ছড়ায়।
প্রাপ্ত নথিপত্রে দেখা গেছে, সংস্থার প্রায় ৩২০ জন ঠিকাদারের মধ্যে ৪০ জনেরও বেশি এই গ্রুপের সদস্য। তাদের কয়েকজনের ছবি গাজা থেকে প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তারা “Make Gaza Great Again” (গাজাকে আবার মহান করো)–এর মতো উসকানিমূলক স্লোগান দিচ্ছে। আবার অনেকে এমন সব পণ্যের প্রচার করছে, যাতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংস বা শত্রুতাপূর্ণ ঐতিহাসিক বার্তা লেখা রয়েছে।
আজহার সেল আরও জানায়, নিরাপত্তা সংস্থাটি নিজেদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছে—সব কর্মীরই অতীত রেকর্ড পরীক্ষা করা হয় এবং ব্যক্তিগত শখ বা গ্রুপভুক্তির কারণে কাউকে বাদ দেওয়া হয় না, যতক্ষণ না তা তাদের পেশাগত কাজে প্রভাব ফেলে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, মানবিক কার্যক্রমে চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর ব্যবহার “অত্যন্ত বিপজ্জনক, যা উত্তেজনা বাড়ায় এবং বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে।”
আজহার মনিটরিং সেল আরও জানায়, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় এর আগে কথিত “গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন” নামে একটি বিকল্প ব্যবস্থা চালু করেছিল। কিন্তু জাতিসংঘ ও ফিলিস্তিনিরা এটিকে প্রত্যাখ্যান করে এবং একে “মৃত্যুর ফাঁদ” বলে আখ্যা দেয়।
২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব প্রবেশপথ বন্ধ রেখেছে এবং খাদ্য, ওষুধ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। এর ফলে সীমান্তে শত শত সহায়তাবাহী ট্রাক আটকে আছে এবং গাজা কার্যত দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
আজহার সেল আরও জানায়, মে মাস থেকে এ পর্যন্ত শত শত বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে, সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে নিহত হয়েছে। 4305429#