আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার খান ইউনুসে ব্যাপক বোমাবর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও ফিলিস্তিনি কন্যা রিম আবু উদ্দাহ হাসপাতালে শয্যাশায়ী অবস্থায়, তীব্র শারীরিক যন্ত্রণার মাঝেই পুরো কুরআন হেফজ সম্পন্ন করেছে।
রিম আলজাজিরাকে জানায়, পবিত্র কুরআন মুখস্থ করার পথটি যেমন সুন্দর, তেমনি কঠিনও ছিল। তিনি বলেন, “আমি আমার শহিদ মায়ের আত্মার উদ্দেশ্যে কুরআন হেফজ সম্পন্ন করেছি, যদিও গুরুতর আঘাতের কারণে আমি খুব ক্লান্ত ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আমি চেয়েছিলাম মায়ের মৃত্যুদিন, অর্থাৎ গত বছরের ২৪ আগস্টে কুরআন হেফজ সম্পন্ন করতে, কিন্তু তার দুই দিন আগে ২২ আগস্টে আমি আহত হই। পরে আল্লাহর অনুগ্রহে হাসপাতালে থেকেই হেফজ সম্পূর্ণ করি। আলহামদুলিল্লাহ, আমি কুরআন মুখস্থ করেছি।”
রিম জানান, “আমি সেই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলাম, যেটি দখলদাররা নিরাপদ বলে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু আমাদের পাশের তাঁবুতে বিমান হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণে আমি গুরুতর আহত হই এবং শরীরে শেলবিদ্ধ হয়ে পেট জখম হয়। চিকিৎসা নিতে প্রায় এক মাস লেগেছে।”
তার বোন সাফা আবু উদ্দাহ বলেন, “রিম হাসপাতালে শয্যায় শুয়ে থেকেই কুরআন হেফজ শেষ করেছে। সে কুরআন তেলাওয়াত করত, আর চিকিৎসকেরা তার ধৈর্য ও শক্তি দেখে বিস্মিত হতেন।”
রিম তার বোন সাফাকে নিজের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ও জীবনের অবলম্বন বলে উল্লেখ করেছে। বর্তমানে সে এই মাসে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রিমের ভাষায়, “এই ভয়াবহ যুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে কুরআনই ছিল আমার ধৈর্য ও স্থিতিশীলতার প্রধান উৎস।”
গাজা শহরের হাবিব মুহাম্মদ সেন্টার-এর পক্ষ থেকে কুরআন হেফজে অসাধারণ ধৈর্য ও অধ্যবসায়ের জন্য রিম আবু উদ্দাহকে বিশেষভাবে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। 4308427#